রাজ্যজুড়ে এখন প্রতিদিন তৃণমূল থেকে একের পর এর কর্মী সমর্থক এমনকী নেতারা পর্যন্ত তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।দল বদলের এই হাওয়ায় একের পর এক পুরসভা ও পঞ্চায়েত হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দলের।বিজেপি নেতারা প্রতিদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঘোষণা করছেন ইয়ে তো স্রেফ ট্রেলার হ্যায়, পিকচার আভি বাকি হ্যায়।

আর কত শাসক দলের বিধায়ক ও পুর কাউস্নিলার বিজেপিতে যোগ দিতে পারে তা নিয়ে সংবাদমহল প্রতিদিন সরগরম হয়ে উঠছে।বঙ্গ রাজনীতির চানক্য বলে এদানিং যাকে অভিহিত করা হচ্ছে সেই মুকুল রায় আবার একধাপ এগিয়ে জানিয়ে রেখেছেন শুধু বিধায়করাই নয় এ রাজ্যের শাসক দলের সদ্য নির্বাচিত সাংসদদের মধ্যেও কেউ কেউ নাকি তাঁর ও তাঁদের দলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে।

এইসব কথা যে নিছক কথার কথা নয় এতদিনে বিজেপি তার প্রমাণও দিয়ে দিয়েছে।তাই শাসক দলের অন্দরে এখন ঘোর অনিশ্চয়তার ছায়া।তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সবাইকে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করিয়ে দল বদল করাতে বাধ্য করা হচ্ছে।তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রী ফিরাদ হাকিম বলেছেন এই দল বদল একেবারে আদর্শহীন,গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক এক প্রবনতা।

তাই নাকি,মাননীয় ফিরহাদ হাকিম?মনে করে দেখুন তো এইভাবে দল বদলের সংস্কৃতিটা কারা চালু করেছিল?মনে পড়ে রাজ্যে একটার পর একটা পুরসভা কোন ভোট না করিয়েই শুধু দলবদল করিয়ে আপনারা নিজেদের দখলে নিয়ে এসেছিলেন।মনে পড়ে নির্বাচিত বিধায়করা যারা বিরোধী দলের টিকিটে জেতার পর কী ভাবে শাসক তৃণমূলে ভিড়ে যেত।

২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ঘটা করে বিরোধী সব বিধায়কদের হাজির করিয়ে তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়ে তাঁদের দিয়েে বলানো হত,দিদির উন্নয়নের কাজে সামিল হতে তারা নাকি সব তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।কী ভেবেছিলেন ফিরহাদ হাকিমরা,এ রাজ্যে বিরোধীদের শূণ্য করে দিয়ে অনন্তকাল তাঁরা ক্ষমতা ভোগ করে যাবেন।

তখন মনে হয় নি এ ভাবে দল বদল করানো আদর্শহীনতার পরিচয়,এতে গণতন্ত্রের বিপদ তৈরি হবে!! নাকি ভেবেছিলেন এভাবেই তারা পারবেন গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে ক্ষমতা ভোগ করে যেতে অনন্তকাল।বাস্তব দেখিয়ে দিচ্ছে সে বড় কঠিন,একটা অন্যায় আর একটা অন্যায়ের যুক্তি তৈরি করে,তাই যেভাবে তৃণমূল অন্যের ঘর ভেঙেছে,আজ সেভাবেই বিজেপি তাদের ঘর ভাঙছে।

নিজেদের পাপেই নিজেরা ক্ষয়ে যেতে বসেছেন,এটা মেনে নিন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা।আমরা অন্যের ঘর ভাঙলে সেটা ন্যায় আর অন্যেরা আমাদের ঘর ভাঙলে সেটা অন্যায়,এই উদ্ভট যুক্তি ফিরহাদ হাকিমদের সান্ত্বনা দিতে পারে কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে তার কোন মুল্য নেই।এই সার সত্যটা তৃণমূল যত তাড়িতাড়ি মেনে নেয় ততই মঙ্গল।বিজেপিকেও মনে রাখতে হবে তারা যা করছে সেটাও গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়,অন্যায় করতে থাকলে তাদেরও একসময় ভুগতে হবে।

কর্মফল থেকে কেউ রেহাই পাবে না,বামেরা পায়নি,তৃণমূল পাচ্ছে না,বিজেপিও পাবে না।গণতন্ত্রে জনতাই সব শক্তির আধার,সেই সবাইকে সবার কর্মফল ভোগ করতে বাধ্য করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here