দেশের সময় বনগাঁ: বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মতিগঞ্জ হাটখোলায় ইছামতীর ধারে এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। মৃতের মুখ একাধিক ক্ষত। শরীরের অন্যান্য অংশও একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বনগাঁ থানার পুলিশ মৃতের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।
এ দিন সকালে নদীর পাড়ে এক যুবকের মৃতদেহ দেখতে পেয়েই পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ এলে স্থানীয়রা ক্ষোভ উগরে দেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে এই চত্বরে নিয়মিত মদ, গাঁজার আসর বসে। অভিযোগ, অনেকে হেরোইনও খায়। রাত নামলেই নেশাড়ুদের মুক্তাঞ্চল পরিণত হয় নদীর পাড়ের এই এলাকা। আশপাশের এলাকা থেকেও ছেলেরা এখানে এসে ভিড় জমায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মদের আসরে কোনও বিষয় নিয়ে ঝামেলার জেরেই কেউ বা কারা এই খুন করেছে। সমাজবিরোধীদের কব্জায় আনার ব্যাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় এক ব্যাবসায়ীর কথায়
নেশাড়ুদের ভয়ে নৌকা পথে নদী পারাপার করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে, বনগাঁ পুরসভার উদ্যেগে নদী পাড়ে অতিরিক্ত আলোর ব্যাবস্থা থাকলেও সমাজবিরোধীরা এই এলাকা তাদের দখলে রেখেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই৷
পুলিশ জানিয়েছে, হেরোইন, গাঁজার খুচরো বিক্রিতাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।

কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরী জানান, যারা হেরোইন খুচরো বিক্রি করছে, তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

পুলিশের একটি সূত্রে জানাযায়, হেরোইনের খুচরো কারবারিরা ফোনেও বরাত নিচ্ছে। নেশায় আসক্তদের কাছে হেরোইনের পুরিয়া পৌঁছে দিয়ে আসছে। একটি দেশলাই কাঠির ওজনের হেরোইনের মূল্য ২৫০-৩০০ টাকা। একজন আসক্তের ২৪ ঘণ্টায় ৪-৫টি পুরিয়া লাগে।

এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়,বনগাঁ শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ফের বেড়েছে হেরোইনের আসক্তদের উপদ্রব। একই সঙ্গে রমরমিয়ে চলছে খুচরো কারবার। বাসিন্দারা এই ঘটনায় যথেষ্ঠ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

এক সময় হেরোইনের কারবারে বনগাঁর মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। ফের ফিরে আসছে সেই আতঙ্ক।

জয়পুর ,জামতলা, নরহরিপুর,খলিতপুর, সহ গোটা পেট্রাপোল এলাকায় হেরোইনের কারবারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরি-ছিনতাই বাড়ছিল। অনেকে নেশা করে মারাও যান। অনেক পরিবার আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ-প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপে ও সাধারণ মানুষের সচেতনতায় ক্রমে হেরোইনের খুচরো কারবার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু ফের সাধারণ মানুষের মাথা ব্যাথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে ছে নেশাড়ুদের বারবারন্ত সহ হেরোইনের কারবারিদের দাপটে।পুলিশ সূত্রের খবর বনগাঁ জয়পুর ফুলতলা কলোনী এলাকায় বেশ কিছু হেরোইনের কারবারিদের কে খুঁজছে,কয়েক দিন আগে কলকাতা পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই এলাকায় তল্লাসী চালিয়েছে,তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি এখনও পর্যন্ত। সূত্রের খবর পেট্রাপোল এবং জামতলা এলাকার কারবারিরাই মুলত এই এলাকায় কারবার চালাচ্ছে বলে ধারনা ৷
পুলিশ-প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপে ও সাধারণ মানুষের সচেতনতায় ক্রমে হেরোইনের খুচরো কারবার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইদানীং পুলিশের নজরদারির অভাবে ফের খুচরো বিক্রি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এখনই কড়া পদক্ষেপ করা না হলে ফের আগের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদেরর আশঙ্কা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here