দেশের সময়,পেট্রাপোল: করোনার প্রভাবে গত ২৩মার্চ থেকে ভারত বাংলাদেশের পেট্রাপোল -বেনাপোল আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে যায় সরকারি নির্দেশে৷ পাশাপাশি ১৩ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহনেও বিভিন্ন বিধি নিষেধ জারিকরে ভারত সরকার এর ফলে এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায় এশিয়ার বৃহত্তম পেট্রাপোল স্থল বন্দর সহ যাত্রী পরিবহনও৷ জানিয়েছেন হরিদাসপুর অভিবাসন দফতর এর আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস৷

পণ্য আমদানি-রপ্তানির কাজ বন্ধ হওয়ার কয়েক দিন আগেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পণ্য বোঝাই ট্রাক সহ চালক ও খালাসীরা পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বেনাপোল সীমান্তের বন্দরে প্রবেশ করে এবং সেখানে পণ্য খালি করে ফের ট্রাক সহ ভারতে ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন৷এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ জাকিয়ে বসে দু’দেশেই ,তার জেরে দীর্ঘদিন ওপার বাংলায় আটকে থাকেন ট্রাক চালক সহ খালাসীরা।

পেট্রাপোল থানা সূত্রে জানাগিয়েছে,শুক্রবার রাতে মোট আটটি খালি ট্রাক সহ চালক এবং খালাসীরা সীমান্ত পেরিয়ে ফের এপার বাংলায় ঢুকেছে সরকারি নির্দেশ মতো৷তবে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে এই সমস্ত ট্রাক চালক এবং খালাসীদের প্রতি৷ প্রত্যেককে স্থানীয় পথের সাথীতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাবস্থায় থার্মাল স্ক্রিনিং করে কোয়ারেন্টাইন এর ব্যাবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে এরা ভারতের উওর প্রদেশ এবং বিহারের বাসিন্দা।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্ট্রাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন

দেশের ট্রাক চালক ও খালাসী সহ বিভিন্ন শ্রমিক মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৮০ জন রয়েছেন৷তাঁদের জন্য পেট্রাপোল থানার পুলিশ প্রশাসন,বিএসএফ এবং সীমান্ত বাণিজ্যের সাথে যুক্ত সমস্ত সংগঠনের তরফে প্রতিদিনের খাদ্য খাবারের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশ ও ভারতের শুল্ক বিভাগের আধিকারিক এবং ট্রাকওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সমস্ত সদস্যদেরকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণের চেষ্টা চলেছে, যাতে পণ্য বোঝাই যে সমস্ত ট্রাক দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন পার্কিং এ দাঁড়িয়ে আছে সেগুলিকে সঠিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে পণ্য রপ্তানি করে ব্যাবসায়ীদেরকে বিরল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যায়৷

এই সীমান্তের সাথে যুক্ত এক ব্যাবসায়ী প্রদীপ দে জানান, আগে মানুষের জীবন তারপর ব্যাবসা, গত ২৩ মার্চ থেকে আমাদের কয়েকটি পাট বীজ বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে পেট্রাপোল সীমান্তে ,যার ক্ষতির পরিমাণ বর্তমানে প্রায় সমমূল্যে গিয়ে ঠেকেছে,তবু আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকেই চুড়ান্ত হিসাবে গন্য করেছি। কারণ কোন ভাবেই কোন দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হোক আমরা কেউ চাইনা৷ বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ জানান আগে দেখতে হবে করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে কিভাবে রক্ষা করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এই পথ দিয়ে রপ্তানির কাজ শুরু করা যায়৷এ বিষয়ে বেশ কয়েক বার লিখিত ভাবে ডি এম কে জানানো হয়েছে, পণ্য পরিবহণ কিভাবে চালু করা সম্ভব তাএখনও পর্যন্ত পরিষ্কার ভাবে জানা যায়নি।

যদিও পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে এখনই তেমন কোনো বিধিনিষেধ নেই বলে তিনি জানান৷ এর ফলে

পেট্রাপোল সীমান্তের যাত্রী পরিবহন এবং মুদ্রা বিনিময় কারীদের ব্যবসার যথেষ্ট ক্ষতি মুখে পড়েছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।তাঁদের কথায় এভাবে চলতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই চড়ম অর্থনৈতিক সংঙ্কটে পড়ে সীমান্ত এলাকার শ্রমজীবি মানুষ বিকল্প সঠিক পথ না পেয়ে বিপথে পা বাড়াবেন বলেই ধারণা অনেকের, আর তাতেই ভয়ঙ্কর সমস্যার সম্মুখীন হবে গোটা দেশ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here