দেশের সময়, কলকাতা: বর্ষা এলেই তো গ্রাম বাংলায় শুরু হয় ব্যাঙের কনসার্ট! বৃষ্টিতে ভিজে, পায়ের ওপর পা তুলে সে কেমন মনের সুখে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর গান ধরে! এই জন্যই অনেকে বলেন,ব্যাঙেদের প্রিয় ঋতু বর্ষাকাল।

বঙ্গে বর্ষা এসে গেছে, আকাশে এখন শুধুই গুড়ু গুড়ু ডাক ৷ শুরু হয়েছে বৃষ্টিও ৷ ব্যাঙেদের এখন পায়কে ৷

লোকে বলে, ‘ব্যাঙের আবার সর্দিকাশি!’ এই যে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই ভিজছেন, আসলেই কি সর্দি-টর্দি হয় ব্যাঙেদের? এসব উদ্ভট প্রশ্ন কল্পনা শিশুকাল থেকেই আমাদের সকলের মনে বাসা বেঁধে আছে ৷

বৃষ্টির জলে ভিজে সর্দি লাগার ভয়ে আমরা প্রায় সকলেই মাথার ওপর ছাতা ধরি, কিংবা গায়ে বর্ষাতি জড়াই, সেই বৃষ্টির জল পেলেই ব্যাঙেরা কিন্তু আনন্দে মেতে ওঠে। ফুর্তিতে গলা ছেড়ে গান ধরে। ওসব বর্ষাতি-ছাতার দরকার পড়ে না ওদের ৷

এখন প্রশ্ন হলো, তবে যে লোকমুখে শুনতে পাওয়া যায় ব্যাঙের ছাতার কথা। ওসব কি তাহলে কি?

ঠিকই ধরেছেন ! দেখতে অনেকটা ছাতার মতো কাঠামো বলে অনেকে যাকে ব্যাঙের ছাতা হিসেবে জানে, ওটা আদতেই ছাতা নয়। ও তো এক প্রকার ছত্রাক-জাতীয় পরজীবী উদ্ভিদ। নাম তার মাশরুম। এটা একটা উচ্চ আমিষ ও আঁশযুক্ত সবজি।

যা প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই একে অনেকে ‘সবজি-মাংস’ও বলে। এটা দিয়ে উৎকৃষ্ট স্যুপ, চপ, শিঙাড়া সহ মুখরোচক বার্গারও তৈরি হয়। মাশরুমে চর্বির পরিমাণ খুব কম, তাই সহজে মুটিয়ে যাওয়ার ভয় নেই। আছে ভিটামিন-সি, বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও লৌহ উপাদান।

তাহলে বোঝাই যাচ্ছে লোকমুখে শোনা যায় ব্যাঙের ছাতা… !

এদিকে, হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। অন্যদিকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ একাধিক জেলায় বৃহস্পতির পর শুক্রবারেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। উত্তরের জেলাগুলিতে জারী হয়েছে কমলা সতর্কতা। রবিবার পর্যন্ত চলবে এই বৃষ্টিপাত। 

বুধবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে দিনভর বৃষ্টির পর বৃহস্পতি থেকেই বদল এসেছে আবহাওয়ার। কখনও আকাশ মেঘলা, কখনও অল্প বৃষ্টি নিয়ে বৃহস্পতিবার পেরনোর পর শুক্রবার সকাল থেকেই ঝকঝকে আকাশ কলকাতা সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের কারণে রয়েছে অস্বস্তি।তবে দক্ষিণবঙ্গের জেলা গুলিতে আজও দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আজ হলুদ সতর্কতা কেবল দক্ষিণের তিন জেলায়, উত্তর চব্বিশ পরগণা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদে।

বৃহস্পতির পর থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে এবং উত্তরে বাড়বে, একথা আগেই জানিয়েছিল হাওয়া অফিস।

দক্ষিণের মতো উত্তরের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উত্তরের সব জেলাই কম-বেশি ভিজবে। তবে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার আলিপুরদুয়ার— এই পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। প্রবল বৃষ্টির কারণে দার্জিলিং ও কালিম্পং-এর বেশ কিছু এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনা আছে। জলস্তর বাড়বে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকার মতো নদীগুলিতে।

শনিবার থেকে দক্ষিণের জেলাতে বৃষ্টির পরিমাণ কমলেও উত্তরে একই থাকবে। শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি হতে পারে। জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here