দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাঘের পর এবার কচ্ছপের শরীরে জিপিএস ট্রান্সমিটার ব্যবহার করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। বাটাগুড় বাসকা বা পোড়া কাঠা নামক এক বিশেষ ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপের শরীরে এই রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে বুধবার সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে ছাড়া হল। এই বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির কচ্ছপের গতিবিধি, বংশ বিস্তার এবং পরিবেশের সাথে কিভাবে এঁরা সামঞ্জস্য রক্ষা করছে সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেই এদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প।

সুন্দরবনের তথা উপকূলীয় অঞ্চলের একেবারেই বিরল প্রজাতির কচ্ছপ ‘বাটাগুড বাস্কা’। এই কচ্ছপ কীভাবে বেড়ে ওঠে আর কীভাবেই বা তারা প্রজনন করে, তা জানতে অভিনব উদ্যোগ নিল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা। প্রতিটি ‘বাটাগুড বাস্কা’-এর দেহে বসানো হলো আমেরিকা থেকে আনা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জিপিএস মেশিন। আর এই স্যাটেলাইট মেশিনের মাধ্যমে জলের লবণাক্ততা, উষ্ণতা এবং কোন পরিবেশে এই ‘বাটাগুড বাস্কা’ থাকতে ভালবাসে, তা জানা যাবে। মিলবে তাদের সম্পূর্ণ জীবনচক্রের হদিশ।

ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে খবর, বুধবার সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে বারোটি পূর্ণবয়স্ক কচ্ছপ এবং ৩৭০টি বাচ্চা কচ্ছপ ছাড়া হয়েছে। সজনেখালি ম্যানগ্রোভ ইন্টারপ্রেটর সেন্টারে রাখা এই পুকুর থেকে তাদেরকে নিয়ে গিয়ে ছাড়া হয় সুন্দরবনে। এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন টাইগার ফিল্ডের ডিরেক্টর তাপস দাস, ডেপুটি ডিরেক্টর জাস্টিন জোন্স এবং টার্টেল সারভাইভাল অ্যালিয়েন্স প্রোগ্রামের কর্মীবৃন্দরা।

এই প্রজাতির কচ্ছপ সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর এলাকা এবং উড়িষ্যা উপকূলে সবথেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। কখনও মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ে, আবার কখনও গুটিকয়েক মানুষের শিকারের ফলে এই কচ্ছপ আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় বন দফতর এই ‘বাটাগুড বাস্কা’ প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর প্রায় দু’বছর ধরে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষে তাদের শরীরে আমেরিকা থেকে আনা জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম মেশিন বসানো হলো।

জানা গেছে, এই মেশিনগুলো নোনা জলে নষ্ট হবে না। আধুনিক প্রযুক্তির এই মেশিন সেভাবেই বানানো হয়েছে। দেশে প্রথমবার এভাবে কচ্ছপের ওপর এই গবেষণা চালানো হল। এবার সেই গবেষণা সফল হয় কিনা, তা সময়ই বলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here