দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাড়ির নাম ‘অপা’!অনেকেরই দাবি, অর্পিতা এবং পার্থের নামের আদ্যক্ষর জুড়ে নামকরণ এই বাড়ির।

অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে, বেনামি নানা জমির সন্ধান মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধারের পর এবার বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের জমি ও বাড়ি নিয়ে শোরগোল পড়েছে।

জমি রয়েছে বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায়, বোলপুরে ‘অপা’ নামের বাড়িটি অর্পিতার নামেই। সেই জমির বিশদ তথ্য এবার সামনে এসেছে ৷ শ্যামবাটি মৌজায় থাকা এই জমির প্লট নম্বর ৩৫৪। খতিয়ান নম্বর ১৯২৯। মোট জায়গার পরিমাণ ০.১৭ একর (প্রায় ১০ কাঠা)।

বোলপুরের ভূমি ও রাজস্ব দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রান্তিকের ফুলডাঙায় ০.১৭ একর (১০ কাঠার বেশি) জমির উপর রয়েছে ‘অপা’ নামের সেই বাড়ি। ২০১২ সালে কলকাতার বাসিন্দা সুষেণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে জায়গাটি কেনা হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর খতিয়ান রেকর্ড হয়।

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে প্রায়ই ওই বাড়িতে যাতায়াত করতে দেখা যেত। তবে পার্থকে কেউ কখনও দেখেননি। শনিবার বোলপুরের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সঞ্জয় রায় বাড়ির দলিলের খতিয়ান দেখে বলেন, ‘‘শ্যামবাটি মৌজায় ১৯২৯ খতিয়ানটি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, মাতা মিনতি মুখোপাধ্যায়ের নামে রেকর্ড রয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ওই বাড়ির জমির খতিয়ান তৈরি হয়েছিল।’’ সঞ্জয়ের কথা থেকে স্পষ্ট, ওই নথিতে পার্থের নাম নেই।

এই জমিটি রয়েছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে। তাঁর মায়ের নাম লেখা রয়েছে মিনতি মুখোপাধ্যায়। জমির দলিলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্বাক্ষর করা রয়েছে, রয়েছে তাঁর ছবিও। ২০১২ সালে এই জমিটি হস্তান্তর হয়েছিল। যদিও বাড়ির কেয়ারটেকার পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অর্পিতাকে কোনওদিনই এখানে দেখেননি বলেই জানিয়েছেন।

বোলপুরের শান্তিনিকেতনেই আরেকটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে পার্থ-অর্পিতার। নাম ‘তিতলি’। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, দু’টি বাড়িই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বলেই জানতেন তাঁরা। অনেক গাড়ির আসা যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা।

গত ২২ জুলাই পার্থের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁকে জেরা করে ওই দিন সন্ধ্যায় অর্পিতার টালিগঞ্জের আবাসনে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা, ৭৯ লক্ষ টাকার গয়না এবং মোবাইল ফোন। বেশ কিছু নথিও উদ্ধার হয়। ইডি দাবি করে, অর্পিতা ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’।

অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার ওই সব নথির ভিত্তিতেই কলকাতা, শান্তিনিকেতন-সহ রাজ্যে একাধিক জায়গায় বেশ কিছু জমি ও বাড়ির খোঁজ মিলেছে। সেগুলির প্রায় সব ক’টিরই মালিকানা অর্পিতার নামে। সেগুলিতে পার্থের নাম ছিল না। এ বার শান্তিনিকেতনের বাড়ির মালিকানাও দেখা গেল অর্পিতারই নামে। আপাতত অর্পিতা-পার্থ ইডির হেফাজতে রয়েছেন। আদালতের নির্দেশে ৩ অগস্ট পর্যন্ত তাঁরা ইডি হেফাজতেই থাকবেন।

একটি বাড়ির পরিচারিকা ঝর্ণা দাস জানিয়েছেন, মাস কয়েক আগেই তিনি এখানে কাজে ঢুকেছেন। তবে এই বাড়ির মালিক কে তা তিনি জানেন না। বেতন নগদে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিক কলকাতার কেউ একজন এবং তাঁর নাম তিতলি বলেই জানেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here