দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো একটি চিঠি রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিল তৃণমূলে।

উপরি ,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাংশ অনুগামী যে ভাবে নতুন তৃণমূলের উন্মেষ নিয়ে প্রত্যয় দেখাচ্ছেন তাতে ইতিমধ্যেই আন্দোলিত জোড়াফুল।


নবান্ন সূত্রের খবর, দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি স্পষ্ট নির্দেশ গিয়েছে। তাতে যা বলা হয়েছে, তার মর্ম হল পঞ্চায়েতে চোর ধরো আর এফআইআর করো। শুধু তা নয়, যে টাকা চুরি হয়েছে তাও উদ্ধার করো।

রাজ্যে নব্বই শতাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূলেরই দখলে। ফলে এই নির্দেশে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের একাংশ নেতা-কর্মীর কপালে বিপদ ঘনাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, আরও একটি কথা এখানে প্রাসঙ্গিক। কদিন আগে একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ‘তৃণমূল করে খাওয়ার জায়গা নয়।

নেতা ধরে পঞ্চায়েতে টিকিট পাওয়া যাবে না’। অভিষেকের ওই হুঁশিয়ারি আর নবান্নের এই চিঠি পাশাপাশি রাখলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে এবার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের অনেকেই টিকিট পাবেন না। বিশেষ করে যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টাকা লুঠের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের নির্বিচারে বাদ দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসনকে নবান্ন যে চিঠি পাঠিয়েছে, তাতে মূলত দুটি প্রকল্পের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। তার অন্যতম হল, একশ দিনের কাজ প্রকল্প। নোটিসে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত যাদের জব কার্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম অবিলম্বে জেলা পোর্টালে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া, কোচবিহার, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমকে সতর্ক করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, একশ দিনের কাজ প্রকল্পে হিসাব দেখিয়েও যেখানে কাজ হয়নি, অর্থাৎ ভুয়ো খরচ দেখিয়ে টাকা তোলা হয়েছে, সেখানে অবিলম্বে সেই টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য এফআইআর করা, শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদি সবই করতে হবে।

নবান্ন স্পষ্ট জানিয়েছে, এই প্রকল্প নিয়ে সোশাল অডিট ইউনিট নীরিক্ষা করে যে ফাঁকফোকর পেয়েছে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ীই পদক্ষেপ করতে হবে।

ঠিক একইভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা খাতে ভুয়ো খরচের টাকা উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।

এই রিপোর্ট থেকে আরও একটা বিষয় পরিষ্কার। তা হল, একশ দিনের কাজ বা আবাস যোজনা খাতে হিসাব ঠিকমতো না পাওয়ার কারণে কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। সে ব্যাপারে তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রের যতই সমালোচনা করুক, প্রশাসনিক ভাবে নতুন করে সংঘাতে যেতে চাইছে না। বরং আর্থিক বরাদ্দ পেতে কেন্দ্রের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here