রিয়া দাস, হাবড়া: লিভার সিরোসিসে হারিয়ে গিয়েছিল সংসারে ছাতা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা। কিন্তু, বাবাকে সামনে থেকে লড়াই করতে দেখেছিলেন মৌমিতা।

গোটা সংসার যখন টলমল, তখন হাল ধরলেন এই কন্যা। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হাবড়া স্টেশনে চালিয়ে যাচ্ছেন কচুরির দোকান।

হাবরড়া স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের ওভার ব্রিজের ওঠার মুখেই প্রায় ৪০ বছরের পারিবারিক দোকান ওঝা পরিবারের। এই দোকানের বিখ্যাত কচুরি খেতে সকাল বিকেল বহু মানুষের ভিড় জমতো একসময়। যদিও করোনা পরিস্থিতির পর চিত্রটা অনেকটাই বদলেছিল। বড় ধাক্কা খেয়েছিল ওঝা পরিবারে ব্যবসা।

অলিখিতভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে দোকানও। মৌমিতার বাবা বিষ্ণু ওঝা দোকানের একটি অংশ নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়ে ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ বিপত্তি। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন সেই সময় টুকটাক দোকানের কাজে হাত লাগাতেন মৌমিতা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স করছেন হিজলপুকুরের বাসিন্দা মৌমিতা ওঝা। বাবার মৃত্যুর পর দোকান এবং সংসারের হাল পুরোপুরি ধরেন মৌমিতা। তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান মা কল্পনা ওঝাও।

এদিকে ব্যবসায় টিকে থাকতে গেলে বিশেষ চমক প্রয়োজন, তা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি মৌমিতার। সুদক্ষ ব্যবসায়িক বুদ্ধি দিয়ে দোকানের জন্য এনেছেন বিশেষ অফার। হাবড়ায় ‘ওঝা কচুরি দোকান’ লাগোয়া অন্যান্যরা যেখানে দুইখান কচুরির দাম ধরেন ১৫ টাকা, সেই জায়গায় ক্রেতা টানতে এখনও সেই দাম ১০ টাকা রেখেছেন মৌমিতা।

তিনি জানান, প্রথম প্রথম ব্যবসা বুঝতে তাঁর অল্প বিস্তর সমস্যা হয়েছে। এদিকে দোকান যে ভাগ হয়ে গিয়েছে তাও গোপন রাখতে চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের থেকে। ব্যক্তিগত টানাপোড়েন এবং ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ হাসিমুখে সামলেছেন তিনি।

নিত্যযাত্রী থেকে আশপাশের ব্যবসায়ীরা সকলেই এখন মৌমিতার হাতের কচুরি খাওয়ার জন্য ভিড় জমান। ভিড় সামাল দিতে দুই জন কর্মীও নিয়োগ করেছেন মৌমিতা।

এই সাফল্য প্রসঙ্গে হাবড়ার ‘মৌমিতা’ জানালেন, “তাঁদের বহু পুরনো ব্যবসা। সকলে বলে এই দোকানের সবজি এবং পুরির স্বাদ একেবারে আলাদা । দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here