দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃশোধিত নাগরিকত্ব আইন বলবৎ হতে দেরি হওয়ায় আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এবার তার রেশ ধরেই শান্তনুকে তৃণমূলে আসার আবেদন জানালেন খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।


আইন পাশ হয়ে যাওয়ার পরেও এখনও কেন নাগরিকত্ব প্রদান করা গেল না তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ। সেই সঙ্গে বলেছেন, “আমি আমার কমিউনিটির পাশে থাকব। তাঁদের নিয়েই লড়ব।” যদিও, জ্যোতিপ্রিয়র প্রস্তাব নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি হরিচাঁদ ঠাকুরের নাতি।

এ ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “বিজেপি কথা দিয়েছিল নাগরিকত্ব আইন করবে। করেছে। কিন্তু করোনার জন্য কিছু প্রক্রিয়াগত কাজে বিলম্ব হচ্ছে। সরকারি অফিসে লোক কম আসছেন। সরকার পুরো বিষয়টাই দেখছে। ভোটের আগে না হয় ভোটের পরে হবে। তবে বিজেপিই এই কাজ করবে।”

রবিবার উত্তর ২৪ পরগণার পলতায় বিজেপি নেতা তথাগত রায় দাবি করেন, রাজ্য সরকার যতই আপত্তি করুক, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন রাজ্যে চালু করা হবে। তিনি আরও বলেন, “শান্তনুর সঙ্গে আমার নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রয়েছে। ওঁকে বুঝিয়েছি। এটা অনেক বড় কাজ। পোকা বাছার মতো করে বাছতে হবে। প্যানডেমিকের কারণে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। তা কী ভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে। শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)-এর ক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে তথাগত জানান “এতে শান্তনুর কোনও দোষ নেই। তাঁর সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের যাঁরা আছেন, সেই মানুষগুলো পূর্ব বাংলায় ধর্মীয় কারণে মুসলিমদের হাতে অত্যাচারিত হয়ে, সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে চলে এসেছেন। এখানেও অবহেলা পেয়েছেন। তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। তাঁদের জন্য সিএএ আনা হয়েছে কিন্তু তাঁরা যদি এর বাস্তবায়ন দেখতে না পান, তবে স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা অধৈর্য হতে পারেন। কিন্তু আমি বলব আপনারা ধৈর্য হারা হবেন না।”


জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, “আমি শান্তনু ঠাকুরকে তৃণমূলে এসে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিজেপিতে থেকে তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যাঁদের কাছে ভোটার কার্ড আছে, আধার কার্ড আছে, তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। আলাদা করে নাগরিকত্বের প্রয়োজন নেই।”

পর্যবেক্ষকদের অনেকে বলেন, নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি লোকসভায় বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ এবং রাণাঘাটে জয় পায় গেরুয়া শিবির। বাংলার ৭০টি-র বেশি বিধানসভায় মতুয়া ভোট গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে শান্তনুর অসন্তোষ বিজেপির পক্ষে খুব একটা সুখকর নয় বলেই মত অনেকের। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল হয়তো সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here