দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতকাল, বুধবারই উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল কথার খেলাপ করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে চিনের ভূখণ্ড তাঁবু তৈরি করে ফেলেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। বৃহস্পতিবার সরকারের শীর্ষ সূত্রে খাবর, সমস্ত রকম ভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডকে সুরক্ষিত রাখতে লাদাখে বিরাট পরিমাণ সেনা মোতায়েন করতে চলেছে নয়াদিল্লি। তিনটি পেট্রলিং পয়েন্টে মূলত সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে বলে খবর।

মঙ্গল ও বুধবার দুদিনের লেহ সফরে গিয়েছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। বৃহস্পতিবার লেহ স্থিত ১৪ কোরের হেড কোয়ার্টারে বৈঠক করেন সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল (অপারেশন) পরমজিত সিং এবং ইন্দো-টিবেটান বর্ডার ফোর্সের প্রধান এসএস দেসওয়াল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে লাদাখে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে আইটিবিপি-র বাহিনীও মোতায়েন করা হবে। সরকারের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, কোনও ঘটনা ঘটার আগেই ওই এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।

পেট্রলিং পয়েন্টে একএকটি প্ল্যাটুনে আগে ৩০ জন করে সেনাকে রাখাটা হত। সূত্রের খবর এখন ঠিক হয়েছে সেটা বাড়িয়ে ১০০ করা হচ্ছে। অর্থাৎ সংঘাত হলে যাতে লোকসংখ্যা কমে না যায়। কারণ ১৫ জুনের সংঘাতের ঘটনার পর জানা গিয়েছিল, সংঘর্ষ শুরুর পর বেশ খানিকটা সময় ভারতীয় সেনাদের থেকে চিনা সেনাদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

সূত্রের খবর, ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট (গালওয়ান), ১৫ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট (কোংকা লা) এবং ১৭ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট (হট স্প্রিং)- এ বিপুল শক্তি বাড়ানো হচ্ছে। শুধু সেনাবাহিনী নয়, লড়াইয়ের উপকরণও রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত।

সম্প্রতি ভারতের তরফে যে নতুন উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে তা ২২ জুনের। গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এর আগে যে উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ হয়েছিল, তা ছিল ১৬ জুনের। সেখানে দেখা গিয়েছিল, পেট্রল পয়েন্ট ১৪-এর কাছে সামরিক কাঠামো গড়া শুরু করেছে চিন। ২২ জুনের ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেই একই জায়গায় নতুন তাঁবু ও ছাউনি তৈরি করছে তারা। এগুলি ১৬ জুনের ছবিতে ছিল না।

এই উপগ্রহ চিত্রে আরও দেখা গেছে, প্রথমবার এই এলাকায় গালওয়ান নদীর উপর কালভার্ট তৈরি করেছে চিন। এই কালভার্টের উপর দিয়েই চিনা ট্রাক নদী পার হচ্ছে। ১৬ জুনের ছবিতে যেখানে বুলডোজারের উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল, সেখানেই এই কালভার্টগুলি তৈরি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ওই বুলডোজার দিয়ে পাথর ফেলে নদীর প্রবাহ কমিয়ে কালভার্ট তৈরি করেছে চিন। চিনের দিকে ২০০-র বেশি সামরিক ট্রাকও রাখা রয়েছে বলে উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে।

গত পরশুদিন, বুধবার দুই সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ে বৈঠক হয়। ১১ ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। তাতে দু’পক্ষই একমত হয় যে আর সংঘর্ষ হবে না। কিন্তু তারপর উপগ্রহ চিত্র সামনে আসার পর থেকেই তৎপরতা বাড়ায় নয়াদিল্লি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here