দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাওড়ার বাগনানে মেয়ের সম্মান বাঁচাতে মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পরিবারের দায়ের আঘাতে গুরুতর আহত হল প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। তাঁর নাম মৃন্ময় দত্ত। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মূল অভিযুক্ত পলাতক। এই ঘটনায় উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কুশ বেরার বাড়ি ভাঙচুর করে।

মঙ্গলবার রাতে মেয়ের সম্মান বাঁচাতে গিয়ে যাঁর মৃত্যু হয়েছিল এদিন তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর দেহ নিয়ে পরিবার ও প্রতিবেশীরা প্রথমে যান উলুবেড়িয়া আদালতে। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরাও। ১০ মিনিট মতো তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ দেখান। কোনও আইনজীবী যাতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা গোপালপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যের স্বামী কুশ বেরার পাশে না দাঁড়ান সেই দাবি করতে থাকেন। পরে তাঁরা দেহ নিয়ে যান অভিযুক্তের বাড়ির সামনে।

সেখানে বিক্ষোভ দেখানের সময় ওই তৃণমূল নেতার বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে এক জন বিক্ষোভরত মৃন্ময় দত্তের পায়ে দা চালিয়ে দেয়। তাঁর পা ঝুলে পড়ে। প্রথমে তাঁকে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যেতেই চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন সেখানে চিকিৎসা সম্ভব নয়। তখন সেখান থেকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এই ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করে। তখন উলুবেড়িয়া থানার আইসি, বাগনান থানার আইসি এবং এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) ঘটনাস্থলে হাজির হন বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে। নামানো হয় ব়্যাফ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে দা মারার ঘটনায় অভিযুক্ত পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পালিয়েছে।
এদিন বাগনানে এসেছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। তিনি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে এক জন মহিলা সেখানে এক জন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির মুখে পড়তে হল এবং তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর মায়ের মৃত্যু হল। আমি এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাই। এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।”

এখনও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হাওড়া গ্রাামীণ) আশিস মৌর্য এখনও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে গোপালপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকায় ছাদে শুয়েছিলেন এক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গাছ বেয়ে উঠে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ওই পঞ্চায়েতের সদস্যের স্বামী তথা তৃণমূল নেতা কুশ বেরা ও আরও এক জন। ছাত্রীর চিৎকার শুনে ছাদে আসেন তাঁর মা। তখন তাঁকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। ছাত্রীর মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here