দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত কয়েকদিন বঙ্গে বৃষ্টির বিরাম নেই। বুধবারও বৃষ্টি হয়েই চলেছে কলকাতা সহ জেলা শহর গুলিতেও৷। তাতেই শহরের রাস্তায় জল জমেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা—বাদ নেই কোনও জায়গা। এদিন বিকেল চারটে পর্যন্ত উল্টোডাঙ্গায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে বেশি জল জমে দুর্ভোগ বেড়েছে মাহাত্মা গাঁধী রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায়।

আগামী দু-একদিনে শহরের জলচ্ছবিটা বিশেষ বদলাবে না, স্পষ্ট জানিয়ে দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর । একদিকে ঘূর্ণাবর্ত, অন্য দিকে রাজ্যের উপর দিয়ে বিস্তৃত মৌসুমী অক্ষরেখা, সাঁড়াশি আক্রমণেই রাজ্যের আকাশে সিঁদুরে মেঘ । আগামী দুদিন এর ফলেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে জায়গায় জায়গায়।

বুধবার মধ্য কলকাতার পামার ব্রিজ এলাকায় বিকেল পর্যন্ত ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বিকেল ৪টে পর্যন্ত ঠনঠনিয়া এবং বালিগঞ্জে ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বেশি বৃষ্টি হওয়ায় কলেজ স্টিট, ঠনঠনিয়া এলাকায় জল জমে আছে এদিন বিকেল পর্যন্ত। এ ছাড়াও তপসিয়া এবং ধাপায় ৮৩ মিলিমিটার, মানিকতালায় ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সব তথ্যই বুধবার বিকেল চারটে পর্যন্ত পুরসভা সূত্রে পাওয়া গিয়েছে৷

আবহাওয়া দফতর বলছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। মৌসুমী অক্ষরেখাটি শ্রীনিকেতন ও ডায়মন্ড হারবারের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে।

হাওয়া অফিস সূত্রে খবর,  আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে আট জেলায়। এর মধ্যে রয়েছে- উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলি জেলায়। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, বাঁকুড়া পুরুলিয়াতে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে।

হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, শুক্রবার ভারী বৃষ্টি হবে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতে।শুক্রবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই।বাড়বে নদীর জলস্তর। ফলে নীচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার উত্তর কলকাতায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে উত্তর ও মধ্য কলকাতার ছোট গলির সঙ্গে জল জমে যায় বড় রাস্তাতেও। বুধবার বিকেলে জলে জমে ছিল পাতিপুকুর এবং উল্টোডাঙ্গা আন্ডারপাশে। এছাড়াও হাওড়া ব্রিজের কাছে নর্থ পোর্ট থানা এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় জল জমে যায়। স্ট্র্যান্ড রোড, এম জি রোড এবং সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ক্রসিং, বালিগঞ্জের কিছু জায়গায়, কংগ্রেস এক্সজিবিশন রোড, লউডন স্ট্রিট, সায়েন্স সিটির কাছে চায়না টাউনের বেশ কিছু অংশ জলের তলায়।

বেহালায় ডায়মন্ড হারবার রোড, জেমস লং সরণির কোথাও কোথাও বিকেল গড়িয়ে সন্ধে পর্যন্ত জল জমে আছে বলে সূত্রের খবর। জল জমার জন্য এমজি রোড এবং সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ধীর গতিতে যান চলাচল করেছে। হাওয়া অফিস বলছে, বুধবার রাতেও কলকাতায় বৃষ্টি হবে।

উল্লেখ্য আজই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, ডিভিসি জল ছাড়ার কারণে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস যে জায়গাগুলিতে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে প্রশাসনিক প্রতিনিধিরা সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করছেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এদিন খানাকুলে যাওয়ার কথা থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবহাওয়ার কারণে সেখানে পৌছতে পারেননি। আমতাতেই থেমে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। সেখানে হাঁটুজলে নেমে মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর তিনি নবান্ন ফিরে যান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here