দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃএকদিনে তিনজন। হ্যাঁ, দলের তিন নামকরা নেতা বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করলেন। সেই তিনজনের প্রথম ও প্রভাবশালী নাম অবশ্যই শুভেন্দু অধিকারী। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রীর পরপরই এদিন বিকেলে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন আসানসোলের পুর প্রশাসক তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আর সেই ‘আঘাতের’ পরপরই এবার তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ।

উল্লেখ্য, বুধবার বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৃহস্পতিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে দলীয় সমস্ত পদ, এমনকী প্রাথমিক সদস্যপদও ছেড়ে দেন শুভেন্দু। তৃণমূলনেত্রীর কাছে সেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি। যদিও পদত্যাগপত্রে দল ছাড়ার কোনও কারণ দেখাননি। মমতাকে শুভেন্দু চিঠির দেওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গতকালই রাজ্যপালের কাছে রাজনৈতিক যড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে রাজ্য পুলিশ মিথ্যা মামলার ফাঁসাতে পারে বলে আশঙ্কা করে চিঠি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর চিঠির পরই তৎপরতা বেড়ে যায় রাজ্যপালের তরফে। এবার চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলেন রাজ্যপাল।

অপরদিকে, বিদ্রোহ থামাতে বুধবারই উত্তরবঙ্গ থেকে আসানসোলের পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে সরাসরি ফোনে ধরেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘মাথা ঠাণ্ডা রাখ। আমি ১৮ তারিখ বসব। সব ঠিক হয়ে যাবে।’ কিন্তু সেই সময় টুকুও মমতাকে আর দিলেন না জিতেন্দ্র। সমস্ত পদ-সহ তৃণমূল ছেড়ে দিলেন তিনি। এদিন তৃণমূল ত্যাগ করে জিতেন্দ্র বলেন, ‘আমি তৃণমূল করি। এটা অনেকে চান না। তাই ছেড়ে দিলাম। আমি বিজেপিকে পছন্দ করি না। বিজেপিতে যাচ্ছি না। তবে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরের বড় নেতা। ফিরহাদ হাকিম তাঁকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যাত রাখেন না। তৃণমূলের উচিৎ, শুভেন্দুকে দলে ধরে রাখা।’ দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরই জিতেন্দ্র তিওয়ারির পাণ্ডবেশ্বরের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। সেক্ষেত্রেও জিতেন্দ্র ‘কলকাতার হাত’ দেখছেন৷

জিতেন্দ্রর থেকে আঘাত আসার পরপরই এদিন সন্ধ্যাতেই তৃণমূল ত্যাগ করেন শ্যামাপ্রসাদও। তিনি বলেন, ‘দলে কাজ করেও দীর্ঘদিন অবহেলিত হয়েছি। কোনও সম্মান দেওয়া হয়নি। তাই তৃণমূল ছাড়লাম।’ এরপরেই নিজেকে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘বিগত দেড়বছর দল আমাকে কোনও কাজ করতে দেয়নি। এই পরিস্থিতি থেকে আমি বের হতে চাইছি। শুভেন্দুবাবুই আমার নেতা, ওঁর বক্তব্যই আমার বক্তব্য।’’ জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে আগামীতে তিনি যে বিজেপিতে যাচ্ছেন তাও স্পষ্ট করে দেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।.

একের পর এক নাম বাদ যাচ্ছে তৃণমূল থেকে। এখনও শীলভদ্র দত্ত, সাংসদ সুনীল মণ্ডলের মতো একাধিক নাম উঠে আসছে। ফলে তৃণমূলের অন্দরে এখন শুধুই আশঙ্কার পরিবেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here