দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ দুর্ঘটনা রুখতে রাজ্য সরকারের অন্যতম জনসচেতনা কর্মসূচি সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ। আর এই জনসচেতনা প্রকল্পের নাম ভাঙিয়ে পুলিশ টাকা তুলছে! এ নিয়ে অসন্তোষ গোটা রাজ্যবাসীর। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক, গ্রামীণ সড়ক— প্রায় সর্বত্রই আইন ভাঙার ফাইন আদায়ের কারবার চালায় পুলিশ। সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়েই চলে এই টাকা তোলার কাজ।

পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ জেলায় জেলায়। দিঘা আসার পথেও পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে বিরক্ত পর্যটকরা। অভিযোগ কানে উঠেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন দিঘার সভায়। পুলিশের এমন আচরণে তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা তিনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি বৈঠকে উপস্থিত ডিজি শ্রী বীরেন্দ্রকে স্পষ্ট করে বলে দেন, ‘‌এসব বন্ধ করুন।’‌


এদিন দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ডিজি বীরেন্দ্রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‌আপনার এসপি–‌দের আপনি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি সরাসরি বলুন। সিভিকদের বলা হচ্ছে গাড়ি ধর, আর টাকা নাও। এটা কেন হবে?‌ সবাই বলছে কিন্তু!’‌ ডিজি–‌কে সতর্ক করে ফের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌কলকাতা পুলিশকে আগে বলেছি। এবার জেলাগুলোর ক্ষেত্রেও বলছি।

যে অন্যায় করবে, আপনি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ব্যবস্থা মানে তো টাকা নয়। একটা গরিব লোক যদি ৪০০ টাকা নিয়ে বেরোয়, তার কাছে টাকা নিয়ে নেবে!‌ আপনি তাঁকে কেস দেবেন। যথার্থ ব্যবস্থা নিন। কিন্তু এত কেস দেওয়া হচ্ছে যে, মানুষ পাগল হয়ে যাচ্ছে।’‌

এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে মানবিক হওয়ারও পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা ঠেকাতে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি প্রচারের নির্দেশ দেন পুলিশ কর্তাদের। বলেন, ‘‌আমরা চাই সমাধান। আমাদের মানবিক হতে হবে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে কীভাবে এটা করা যায় সেটা ভাবতে হবে।’‌ সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাল করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেন আইসি, ওসি–‌দের। বলেন, ‘‌যারা আইসি–ওসি আছেন মনে রাখবেন, সিভিকরা প্রশিক্ষিত নয়।

ভিলেজ পুলিশরা প্রশিক্ষিত। তারা যথেষ্ট ভাল মাইনে পায়। সিভিক ভলান্টিয়ার নেওয়া হয়েছিল পুলিশের সুবিধার্থে। সাড়ে ৩ হাজার থেকে বেড়ে ৮ হাজার বেতন পাচ্ছে ওরা। ভাল কাজ করছে। ভাল কাজ করলে স্বীকৃতি পাবে। ধীরে ধীরে প্রশিক্ষণ নিক। আস্তে আস্তে ওদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। আইসি আটটা সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে গাড়ি থেকে টাকা তোলালে, আপনার সম্মানটা কিন্তু পুরোপুরি থাকবে না। সবাই তো খারাপ না। অনেক ভালো ছেলেমেয়ে আছে। অনেকে এটাকে খারাপভাবে ব্যবহার করছে। ওসি–আইসি কীসের জন্য?‌ এইটুকু না করলে। এই ধরনের ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে।’‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here