দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোভিড মোকাবিলা পর্বের শুরুতেই রেশন তথা গণবন্টন ব্যবস্থার অনিয়ম ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য খাদ্য সচিব পদ থেকে মনোজ আগরওয়ালকে সরিয়ে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

এ বার বিবেক কুমারকে স্বাস্থ্য সচিব পদ থেকে সরানো হল। তাঁকে পাঠানো হয়েছে পরিবেশ দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সচিবের দায়িত্বে। তাঁর পরিবর্তে নতুন স্বাস্থ্য সচিব করা হচ্ছে নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে। তিনি ছিলেন পরিবহণ দফতরের সচিব।

আমলা মহলের অনেকের মতে, বিবেক কুমারকে যে স্বাস্থ্য সচিবের পদ থেকে সরানো অনিবার্য হয়ে উঠছে তার দেওয়াল লিখন আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কারণ, গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সচিবকে যে চিঠি বিবেক কুমার পাঠিয়েছিলেন, তাতে বিস্তর গরমিলের একটা ছবি অতিশয় স্বচ্ছ হয়ে ধরা পড়ে। তাতে দেখা যায়, সে দিন পর্যন্ত বাংলায় যতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের বুলেটিনে বলা হয়েছে, তার তুলনায় আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
বিবেক কুমারের সেই চিঠিতে বেমক্কা সত্যি ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে হই হই করে নেমে পড়েন বিরোধীরা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সেই চিঠির প্রতিলিপি। তার পর থেকে দু’দিন কোনও বুলেটিনই আর প্রকাশ করেনি নবান্ন। তা দেখে আবার বিরোধীরা বলেন, অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করছে সরকার। সব দিক থেকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা হয় সরকারকে। এমনকি খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলতে শুরু করেন, এই সংকটের মধ্যে তথ্য গোপন করা ঠিক নয়। স্বচ্ছতা দরকার স্বচ্ছতা। নইলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তাঁরা প্রকৃত পরিস্থিতির কথা জানতে না পেরে আরও বিপন্ন বোধ করতে পারেন।

সূত্রের মতে, শুধু এ ঘটনা নয় সদ্য প্রাক্তন স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে আরও অনেক বিষয়ে শাসকদের মতান্তর হচ্ছিল বলে খবর। কোভিড আক্রান্তের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য অডিট কমিটি গঠন, বারবার বুলেটিনের ছক ও নকশা বদল করা ইত্যাদি বিষয়ে মনান্তর ও মতান্তর হচ্ছিল বলেই জানা গিয়েছে।

এমনিতে বিবেক কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমলা হিসাবে পছন্দ করতেন বলেই অনেকে বলেন। বিবেক কুমার ভাল গান করেন। আগে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিব ছিলেন। তখন বহু সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে এই প্রবীণ আইএএস অফিসার মঞ্চে দাঁড়িয়ে গানও গেয়েছেন। কিন্তু এ বার গান হয়তো ঠিক সুরে বসল না।

কোভিডের মতো সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে রাজ্যের অন্যতম দুটি দফতরের সচিবকে বদল করতে হল। একটি খাদ্য দফতর, অন্যটি স্বাস্থ্য। এই ঘটনা কিছুটা হলেও প্রশাসনিক ব্যর্থতার ইঙ্গিত বহন করছে বলে ধারনা পর্যবেক্ষকদের৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here