দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা নিয়ে গোটা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।হু বা বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির সামনে গোটা দুনিয়া।এমন এক বিপদ যেখানে বিশ্বের কোন একটি দেশ আক্রান্ত হলে অন্য কোন দেশ সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে পারবে না।

ইতিমধ্যেই এই করোনা ভাইরাসের প্রকোপ একটু একটু করে বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছে।এমন এক ভাইরাস যাকে মোকাবিলা করা মুশকিল কারণ তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সবার কাছেই অজানা।চিনে এই ভাইরাস প্রথম তার সংক্রমণ শুরু করলেও এখন গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে।হুয়ের গবেষকদের পরামর্শ একে প্রতিহত করতে প্রথম দরকার গোষ্ঠী বা কমিউনিটি সংক্রমণ রুখে দেওয়া।

তার জন্য দরকার যে এলাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে সেই এলাকা লকডাউন করে দেওয়া।চিন এই পদ্ধতিতেই কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করতে পেরেছে।কিল্তু এর জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো দরকার।ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত আইসোলেশন এর জন্য যে পরিকাঠামো দরকার ভারতের মত দেশে তা একেবারেই নেই।এখানেই ভয় পাচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যের পর চিভির পর্দায় তাঁর মুখ দেকে বোঝা যাচ্ছিল ভয় পেয়েছেন তিনি,খুব ভয় পেয়েছেন।বিকাশ নিয়ে অনেক লম্বা চওড়া কথা বলা প্রধানমন্ত্রী এই ভয়াবহ বিপদ নিয়ে যে সুনির্দিষ্ট কোন ভাবনা ভেবে উঠতে পারেন নি তা তাঁর কথায় পরিষ্কার।গোটা দেশে ২২ তারিখ ৭ টা থেকে রাত ৯ পর্যন্ত মানুষকে গৃহবন্দি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।মুখে বলছেন জনগণের কার্ফু আসলে সরকারি হুকুম নামা।

কিন্তু তার সঙ্গে মানুষের রুজি রোজগারের কোন সুরাহার কথা বলতে পারছেন না তিনি।মানুষকে ঘর বন্দি রাখতেই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত কিন্তু তাদের পরিষেবা দেবার বিষয়টা তো সরকার কে দেখতে হবে,যেভাবে দেখেছে চিন বা যেভাবে দেখছে কানাডা।

এই জায়গাতেই ত্রাসে ভুগছেন মোদী,তিনি বুঝতে পারছেন এখনই কমিউনিটি সংক্রমণ ছড়িয়ে পরা আটকাতে লকডাউন দরকার কিন্তু তা করতে গেলে সাধারণ মানুষের জন্য সরকারকে যে পরিষেবা দিতে হবে সেরকম কোন আর্থিক সঞ্চয় দেশের নেই।

একটা এলাকাকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিলে মানুষের খাওয়া-তাদের থাকা অসুখের চিকিত্সা করা সব দায় সরকারকে নিতে হবে।তা না করে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের নিত্য প্রয়োজনিয় সব কাজ বন্ধ করে দিলে তারা সরকারের উপর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে বাধ্য।এখানেই সমস্যায় পড়েছেন মোদী।

এবার লকডাউন বা কাজ কর্ম বন্ধ না করলে যে রিপোর্ট আসছে তাতে মনে করা হচ্ছে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হবার আশঙ্কা।মৃত্যুর মিছিল শুরু হলে ভারত তা সামাল দিতে পারবে না বলেই মনে করছে হু।তাই মোদী এখন কোনক্রমে একদিন একদিন করে মানুষকে ঘরে আটকে মহামারি আচকাতে ব্যস্ত।

একবার যদি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ গোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে যায় তবে ভারতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার হুশিয়ারি।তা হলে মোদী ও বিজেপির সরকারের যে মুখ পুড়বে ও তাদের ক্ষমতার রাশ যে আলগা হয়ে যাবে তা নিশ্চিত।এই মূহূর্তে তাই করোনা ত্রাসে কাঁপছেন প্রধানমন্ত্রী।

একই আশঙ্কা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।এ রাজ্যে মমতা স্বাস্থ্য পরিষেবার কিছুটা উন্নতি সাধন করলেও তা যে প্রয়োজনের তুলনায় কম তা তিনিও জানেন তাই করোনার মত ভয়াবহ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা তাঁর পক্ষেও সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।এই জন্য তিনিও কলেজ স্কুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি দিয়ে কমিউনিটি সংক্রমণ আটকাতে ব্যস্ত।বার বার সরকারি প্রচার ও সচেতনতার উপর জোর দিচ্ছেন তিনিও।এরই মধ্যে তাঁকে বিপদে ফেলেছে তাঁরই এক আমলা।

মমতাও কার্যত লকডাউন করে বিষয়টা রুখে দিতে চাইছেন।কিন্তু বাজার হাট বন্ধ থাকলে মানুষের যে সমস্যা তৈরি হবে তা মোকাবিলা করতে তার সরকারেরও যথেষ্ট আর্থিক সংগতি নেই।তাই ত্রাস গ্রাস করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।সব মিলিয়ে করোনা ত্রাস এখন কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসককেই যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্যে রেখেছে।

সামনের বছর বিধান সভার ভোট আর এ বছরই যদি রাজ্যে করোনা মহামারি হয়ে দেখা দেয় তা যে মমতার সরকারের ক্ষমতার রাশ আলগা করে দেবে তাতে কারোর কোন সন্দেহ নেই।বোঝা যাচ্ছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থের কারণেও প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাসে ভোগার যথেষ্ট কারণ আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here