দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বুধবার একবালপুরে দিদির সভা হল। আর সেই সভা থেকে ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, এই ভোটে আপনাদের একটা ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি না জিতলে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবে। তাহলে সিএএ-এর বিরুদ্ধে লড়বে কে? এনআরসি-র বিরুদ্ধে লড়বে কে?

এদিন তিনি আরও বলেন ,অনেকে ভাবছেন দিদি এমনিতেই জিতে যাবে, কিন্তু আমাকে ভোট না দিলে আমাকে পাবে না। আমার ১০০-‌এ ১০০ জনকেই চাই, আপনার একটা ভোট আমার খুব দরকার। নাহলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি না জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারব না। তাহলে মুখ্যমন্ত্রী অন্য কেউ হবে।’‌

এরই পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‌নন্দীগ্রামে লড়াই করতে গিয়েছিলাম। আদালতে মামলা চলছে। কীভাবে হারানো হয়েছে তা আপনারা জানেন। ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওরা কিনা করেছে। ভবানীপুরে আমি যে দাঁড়াব, তা ভাগ্যে লেখা ছিল।’‌ স্মৃতিচারণা করে মমতা বলেন, ‘‌সাত দফায় সাংসদ হয়েছি। প্রতিবারই খিদিরপুর আমার সঙ্গে ছিল। ২০১১-‌তেও  উপনির্বাচনে জিতেছি। আল্লাহ মেহেরবান, মা দুর্গা, কালী ঠাকুরের ইচ্ছা এটা। আপনাদের ছেড়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’‌

ভবানীপুরের নির্বাচন ঘোষণার পরে তৃণমূলের একাংশের নেতা বলতে শুরু করেছিলেন, এই ভোট নামকা ওয়াস্তে। ঘরের মাঠে খেলা হবে আর দিদি বলে বলে গোল দেবেন। কিন্তু চেতলায় প্রথম কর্মিসভা থেকেই মমতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এই লড়াইকে কোনও ভাবেই হালকা করে নেবেন না। ঘরে ঘরে যান। প্রচার করুন। আর শুনুন, একদম মাথা গরম করবেন না। ঠান্ডা মাথায় সবটা করুন।

বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রার্থী করে ভবানীপুরে সমস্ত শক্তি ঢেলে দিতে চেয়েছে। দু’দিন আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে বলেছিলেন, রাজ্যসভার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দেবে না। কারণ ফলাফল সবার জানা। পরাজিত মুখ্যমন্ত্রীকে ফের একবার ভবানীপুরে হারানোর জন্য মনোনিবেশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

বিজেপি যে নানান কৌশল নিচ্ছে তা দেখা যাচ্ছে। ভবানীপুরে যেহেতু বড় অংশের শিখ ভোটার রয়েছেন, এদিন সেখানে প্রচারে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বুধবার প্রচার করেন দিদির পাড়ায়। পুলিশের সঙ্গে বচসাও হয় তাঁর।
তবে এদিনের মমতার মুখে ‘আমি না জিতলে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবে’ শুনে বিজেপির এক মুখপাত্র বলেন, দিদি ভয় পেয়েছেন। এক সপ্তাহ আগেও ওঁর দলের নেতারা বলছিলেন, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের জামানত থাকবে না। আজ নিজেই বুঝিয়ে দিলেন, টেনশনে রয়েছেন।

এরই সঙ্গে সেই সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ শানান মমতা। বিজেপিকে দেশছাড়া করবেন বলে এদিন দাবি করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‌ভোটের ময়দানে দেখা হবে। বিজেপিকে দেশছাড়া করব।’‌ পাশাপাশি ত্রিপুরা-‌অসমেও ‘‌খেলা হবে’‌ বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেত্রী। 

মমতার এদিনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে কি পশ্চিম বাংলা ভেসে যাবে?‌ বাংলার যা খুশি হয়ে যাক, ওনার মুখ্যমন্ত্রী থাকতেই হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার খেলা চলছে।’‌

প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন। তার আগে আজ প্রথম পথসভা করলেন মমতা। সাধারণ মানুষকে ভোটদানে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ভবানীপুর থেকেই ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলেও আত্মবিশ্বাসী তিনি। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here