দেশের সময়,ওয়েব ডেস্ক: এতদিন চলছিল কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ। চলছিল বাড়ি ঘেরাও, ভাঙচুর। এই প্রথম কাটমানি ফেরতের ঘটনা ঘটল বাংলায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাউন্সিলরদের মিটিং-এ কাটমানি ফেরতের কথা বলতেই প্রথম বিক্ষোভটা শুরু হয়েছিল বীরভূমের ইলামবাজারে। তারপর ছড়াতে থাকে জেলায় জেলায়। এ বার সেই বীরভূমেই গ্রামবাসীদের চাপে কাটমানি ফেরত দিতে বাধ্য হলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা।

মঙ্গলবার সকালে সিউড়ি ২নং ব্লকের কোমা গ্রামপঞ্চায়েতের চাতরা গ্রামে ১৪১ জনকে আট মাসের বকেয়া ১০০ দিনের কাজের মজুরি ফেরত দেন পঞ্চায়েত প্রধান। প্রত্যেকের হাতে ১৬০০ টাকা করে তুলে দেওয়া হয়। টাকা পেয়েই উচ্ছ্বাসে ভাসে গ্রাম।

খুশি মাল, আরতি মাল,যাদব মন্ডল, সুবোধ বাগদিরা জানান,”কবে কাজ করেছি তার ঠিক নেই। টাকা চাইলে তৃণমূলের বুথ সভাপতি ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায় হুমকি দিত। গত আট বছর ধরে একশোদিনের সামান্য যা কাজ হয়েছে, সব টাকা ওই নেতা ব্যাংক থেকে তুলে নিজের কব্জায় নিয়ে নিত। তারপর পিছন পিছন ঘুরে মিলত দুশো-পাঁচশো র মত ভিক্ষার দান।”

জানা গিয়েছে, শেষ নর্দমা সংস্কারের কাজের জন্য দু’মাস আগে এসেছিল প্রায় ২ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা। সবটা তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা। এরপর বিক্ষোভ শুরু হতেই, এ দিন হাতে হাতে টাকা ফেরত দেন শাসক নেতা।

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় কাটমানি ইস্যুতে ঘুম ছুটেছে নিচু তলার তৃণমূল নেতাদের। মঙ্গলকোটে তো বিজেপি-র ডাকা সালিশি সভায় হাজির হয়ে তৃণমূলের নেতা মুচলেখা দেন। চানক পঞ্চায়েতের ওই দুই নেতা কালীময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং অপূর্ব ঘোষ এ-ও বলেন, “এক সঙ্গে সব টাকা দিতে পারব না। তিন মাসে খেপে খেপে টাকা সব টাকা শোধ করে দেব।”

বাড়ির দাওয়ায় বসে, আরও দু’জন স্থানীয় নেতাকে পাশে নিয়ে খাতায় সই করিয়ে ১৪১ জন গ্রামবাসীর হাতে বকেয়া মজুরি তুলে দেন ত্রিলোচনবাবু। ভাবা যায়? যে জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, সেখানে কি না মানুষের বিক্ষোভে তৃণমূল নেতা টাকা ফেরত দিচ্ছেন! পর্যবেক্ষকদের মতে, কয়েক মাস আগেও এ কথা বীরভূমের মাটিতে কেউ কল্পনাই করতে পারত না। আর এখন সেটাই বাস্তব। বদলে গিয়েছে ছবিটা।সিউড়ির এই কাটমানি ফেরতের ঘটনায় স্থানীয় এক বিজেপি নেতার কথায়, এত দিন চাপ পড়েনি। এ বার যেই চাপ পড়েছে ওমনি বাপ ডাকতে শুরু করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here