দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:  দেশে ফের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। ক্রমশই বাড়ছে দৈনিক করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান ৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ফের অনেকটাই বৃদ্ধি পেল কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৯০৩ জন। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৮৬৪ জনই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বেরর পর এই প্রথম মহারাষ্ট্রে এত মানুষ ভাইরালের কবলে পড়লেন।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী দেশে এখনও পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্য়া পৌঁছেছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৪। সম্প্রতি সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে থাকায় বেড়েছে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও। এই মুহূর্তে দেশে করোনায় চিকিৎসাধীন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪০৬ জন। একদিনে ফের কোভিডের বলি ১৮৮ জন নাগরিক। যার মধ্যে ৮৭ জন মহারাষ্ট্র এবং ৩৮ জন পঞ্জাবের বাসিন্দা।

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রে। তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাতের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। এমতবস্থায় বুধবার ফের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।


যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ করা যায় সে ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। একদিকে কোভিডের নতুন স্ট্রেন অন্যদিকে কয়েকটি রাজ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রের।

দেশে গত ছ’দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের উপরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৪৯২ জন। তার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি মহারাষ্ট্রেই। কেন্দ্রের পাঠানো বিশেষ পর্যবেক্ষক দল স্বীকার করে নিয়েছে মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে।

ওই দল তাদের রিপোর্টে উদ্ধব ঠাকরে সরকারের গা ছাড়া ভাব নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, কোভিড রোগীদের চিহ্নিত করা, পরীক্ষা করানো এবং আক্রান্তদের পৃথক করে চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র সরকারের গাফিলতি ছিল।

ইতিমধ্যেই নাগপুর, পুণের মতো শহরে কড়া লকডাউন জারি করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। কিন্তু তাতেও সংক্রমণ রোখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক মহারাষ্ট্র সরকারকে বলেছে আরটিপিসিআর টেস্ট ব্যাপক ভাবে বাড়াতে। একজন সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা অন্তত ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে কেরল, তামিলনাড়ু নিয়েও কপালে ভাঁজ কেন্দ্রের। কারণ এই দুই রাজ্যেই সামনে ভোট রয়েছ। সব মিলিয়ে নিউ নর্মালে নতুন উদ্বেগ তৈরি করল কোভিড।

আহমদাবাদ, ভদোদরা, সুরাট এবং রাজকোটে নাইট কার্ফু জারি করেছে গুজরাট সরকার। ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে এই শহরগুলিতে। সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে থাকায় বিসিসিআই আহমদাবাদে ইন্ডিয়া-ইংল্যান্ডের বাকি তিনটি টি-২o ম্যাচ দর্শকশূণ্য মাঠে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতে উৎপন্ন টিকা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন যদিও আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন বরাদ্দ রেখেই তবে ৭২টি দেশে টিকা পাঠানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here