মোদী বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে একজন সাহসী নেতা, একজন দৃঢ়চেতা মানুষ। তার এই গুণাবলী সে সময় লাখ লাখ তরুণকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে নতুন শক্তি দিয়েছিল। আজ আমার খুব ভালো লাগে, যখন দেখি যে বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রিয় দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলায়’ রূপান্তরিত করার জন্য দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভিডিওবার্তায় আরও বলেন, আমি আনন্দিত যে, গত ৫-৬ বছরে ভারত এবং বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি সোনালি অধ্যায় রচনা করেছে এবং আমাদের অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রা এবং দিশা দিয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আস্থার কারণেই আমরা স্থল ও সমুদ্রসীমানার মতো জটিল সমস্যাগুলি সহজে সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। সারা বাংদেশ জুড়ে সাজানো হয় আলোকমালায় এদিনটিকে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের সাধারণ দেশের মানুষ।কলকাতায় মুজিব জন্মশতবর্ষ পালন:

কলকাতায় বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছে সোমবার রাত ১২টা বেজে এক মিনিটে। বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কর্মকর্তারা কেক কেটে ও আতশবাজি করে এ অনুষ্ঠানের সূচনা করে।

মঙ্গলবার সকালে উপহাইকমিশন ভবনে পতাকা উত্তোলনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।

এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় রাখা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান৷ এদিন উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিধায়কেরা। মমতা বলেন, এই অবিসংবাদিত নেতা মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমির জন্য লড়াই করে আজও জাতির অনু প্রেরণা হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এদিন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।এখানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন কলকাতার বিশিষ্টজনেরা। বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় এই বেকার হোস্টেলের আবাসিক ছিলেন ১৯৪২-১৯৪৬ সাল পর্যন্ত। ছিলেন ২৪ নম্বর কক্ষে। এই ইসলামিয়া কলেজের বর্তমান পরিবর্তিত নাম মৌলানা আজাদ কলেজ। ১৯৪৫-৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন বঙ্গবন্ধু।ছবি-কুন্তল চক্রবর্তীবঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতা উপহাইকমিশন তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও করোনার কারণে সেই অনুষ্ঠান একদিনে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। করোনার কারণে রবীন্দ্র সদনের পরিবর্তে মঙ্গলবার উপহাইকমিশন চত্বরে আয়োজন করা হয় এই জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানের।এত সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সভাপতিত্ব করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান।উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভার পর অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ব্যান্ড দল ‘জলের গান’ এর আসার কথা থাকলেও তারা করোনাভাইরাসের কারণে আসতে পারেনি। তবে উপস্থিত ছিল কলকাতার প্রখ্যাত শিল্পী অঞ্জন দত্তসহ আরও অনেকে।বঙ্গবন্ধুর এই জন্মশতবর্ষের সূচনা দিনে জন্মশতবর্ষকে ঘিরে তৈরি একটি থিম সংয়েরও উদ্বোধন হয়েছে। থিম সংয়ের গানের কলি,‘আলোর পথের দিশারি তুমি যে, তুমি গণজাগরণ, আজও বাঙালির চেতনায় মিশে অগ্নিঝরা ভাষণ’। এই থিম সংয়ে কণ্ঠ দিয়েছেন কলকাতার প্রখ্যাত শিল্পীরা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন অনুপম, রূপাঙ্কর, সৈকত মিত্র, আকাশ, ইমন, সোমলতা এবং জোজো। থিম সংটি লিখেছেন প্রিয় চট্টোপাধ্যায় আর সুর দিয়েছেন অশোক ভদ্র।এদিন কলকাতা দূতাবাসের দেওয়ালে তৈরি একটি টেরাকোটা ম্যুরালেরও উদ্বোধন করা হয়। এই ম্যুরালে বাংলাদেশের বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে ৬ দফা, স্বাধীনতা আন্দোলন, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবসকে তুলে ধরা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here