দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে ঝাড়খণ্ড ও সংলগ্ন অঞ্চলে দানা বাঁধতে চলেছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। সঙ্গে একটি নিম্নচাপের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বড়সড় হাওয়া বদল হবে বাংলায়। সপ্তাহ জুড়েই চলবে ঝড়বৃষ্টি । সঙ্গে বজ্রপাত এবং ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া। ফলে মার্চের শুরুতেই যে জ্বালাপোড়া গরম রয়েছে তার থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে রাজ্যবাসী।

ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে বুধবার থেকে আগামী রবি, সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও মাঝারি বৃষ্টিও হতে পারে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঝাড়খণ্ড ও সন্নিহিত এলাকায় শক্তিশালী নিম্নচাপ অক্ষরেখা অথবা ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে। এর জেরে রাজ্য জুড়ে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেখা দিয়েছে। ১৪ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে ঝড়বৃষ্টি চলবে রাজ্যে। বিশেষত বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে রাজ্যে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ারে মঙ্গলবার থেকে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। এই তিন জেলার কিছু অংশে বুধবার থেকে হাওয়া বদল হবে। বৃষ্টি বাড়বে ১৫ মার্চ থেকে। উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলাতেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, অন্যান্যবার শীত বিদায়ের পর পরই দখিনা বাতাস বইতে শুরু করলেও এবার কিছুটা দেরি হয়েছে। তার কারণে বসন্তের শুরুতে তাপমাত্রা ছিল সহনীয়। আর্দ্রতা কম থাকায় ঘামও হয়নি। কয়েকদিন আগে উত্তর ভারতে নতুন করে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা দানা বাঁধে। তারপরই ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি বদল হতে শুরু করে। বসন্তে বইতে শুরু করে উত্তুরে হাওয়া। সেই হাওয়া বাংলার পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে এসে পৌঁছতেই বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টেনে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ঘূর্ণাবর্তটি দানা বাঁধার আগেই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে।

উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা। বিশেষত পশ্চিমের জেলাগুলিতে আংশিক মেঘলা আকাশ দেখা যাচ্ছে গত দু’দিন ধরেই। বুধবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে জেলায় জেলায়। বুধবার থেকে ঝড়বৃষ্টি বাড়বে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলবে। পূর্বাভাস বলছে, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হবে।

হাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গল ও বুধবার আংশিক মেঘলাই থাকবে আকাশ। বৃহস্পতিবার থেকে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতা শহরেও। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস সঙ্গে রয়েছে। সেই সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এদিন কলকাতা শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে ৩৪ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে। অনুমান করা হচ্ছে, বাংলায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গেই কমবে তাপমাত্রার পারদ। খানিকটা হলেও রেহাই মিলবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থেকে ।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই ঝড়–বৃষ্টিতে শস্যের এবং নড়বড়ে কাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হলে গাছ, নড়বড়ে কাঠামো বা বাড়ির নীচে না দাঁড়ানোই ভাল। ‌‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here