দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতীয় দলের টেস্ট ক্রিকেট থেকে নেতৃত্ব ছাড়লেন বিরাট কোহলি। তিনি শনিবার সন্ধ্যে ৬-৪৭ মিনিটে একটি বিবৃতি টুইট করে ঘোষণা করেছেন, টেস্টেও তিনি আর নেতা থাকবেন না।

একটিমাত্র বিবৃতি, আর তাতেই অধিনায়কের অধ্যায় শেষ করে দিলেন কোহলি। তিনি সাতবছর দলের নেতা ছিলেন, তার আগে তিনি ছেড়েছেন টি ২০ অধিনায়কত্ব। ওয়ান ডে থেকে তিনি সরেননি, তাঁকে বোর্ড সরিয়ে দিয়েছে।

যদিও তিনি যে অভিমান বুকে নিয়েই সরলেন, তা বিবৃতিতে বেশ পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে। বুকে ব্যথা নিয়েই সরলেন ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমান আইকন। সবেমাত্র ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজে হেরেছে ১-২ ব্যবধানে। তারপরের দিনই এভাবে কোহলির সরে যাওয়ার ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে বেনজির বলা যেতে পারে।

সব থেকে অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরেই আবার বোর্ডও টুইট করে মেনে নিয়েছে তাঁর অবসর। তার মানে চিত্রনাট্য একেবারে তৈরিই ছিল, সেটিও বোঝা গিয়েছে। বোর্ড লিখেছে, বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব ভারতকে টেস্টের আঙিনায় একটা আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। তিনি মোট ৬৮টি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ৪০টিতে জয় পেয়েছেন তিনি। সাফল্যের ভাগ হতশ্রী নয়। তাও তাঁকে সরতে হল চাপের মুখে। কোহলির অধিনে দল হেরেছে ১৭টি টেস্ট ম্যাচ ও ১১টি ড্র হয়েছে।

শনিবার ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে পোস্টে বিরাট বলেন, ‘‘দলকে সঠিক দিকে নিয়ে যেতে সাত বছরের প্রতিটা দিন পরিশ্রম করেছি। নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যবসায় বজায় রেখে চলেছি। চূড়ান্ত সততার সঙ্গে আমি সেই কাজটা করেছি। সেখানে কিছু ফাঁক রাখিনি। সবকিছুকেই কোনও না কোনও সময় থামতে হয়। আমার কাছে ভারতীয় দলের টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় এসে গিয়েছে।’’

বিরাট এও যোগ করেছেন, ‘‘দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রচুর সাফল্য এসেছে। ব্যর্থতারও সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু কখনও প্রয়াস বা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হয়নি। আমি যা কিছু করি, তাতে বরাবর ১২০ শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার তত্ত্বে বিশ্বাস করে এসেছি। আমি যদি সেটা করতে না পারি, তাহলে আমি ভালভাবে জানি যে সেটা করা আমার পক্ষে ঠিক নয়। আমার হৃদয়ে পুরোপুরি স্বচ্ছতা আছে। আমার দলের প্রতি আমি কখনই অসৎ হতে পারি না।’’


বিরাট টেস্ট নেতৃত্ব সরে যাওয়ার পরে প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী ও প্রাক্তন অধিনায়ক এম এস ধোনির নাম বললেও একবারও বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা বলেননি। তার মানে বোঝাই গিয়েছে, তিনি ভাল মনে এই অধ্যায় শেষ করলেন না। সৌরভের সঙ্গে তাঁর সংঘাত যে বড় আকার ধারণ করল, পরিষ্কার। অনেকেই মনে করছেন, সৌরভ ও কোহলির মধ্যে ইগো সমস্যার কারণেই সরে গেলেন বিরাট।

শুধু তাই নয়, কোচ দ্রাবিড়ের জন্মদিনে কোহলির না থাকাও শিবিরে অশান্তির একটা বাতাবরণ তৈরি করেছিল। দ্রাবিড় যতবারই ক্রিকেটারদের একত্রিকরণ করার চেষ্টা করেছে, সেইসময় কোহলি ছিলেন না। বর্তমান কোচের সঙ্গে তাঁর শীতল সম্পর্কও অধিনায়কত্ব ছাড়ার কারণ হতে পারে।

বোর্ড প্রেসিডেন্ট কোনও বিবৃতি না দিলেও বোর্ড সচিব জয় শাহ টুইট করে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মাঠে টেস্ট জয়, দলকে একসূত্রে বেঁধে কোহলি অধিনায়ক হিসেবে যা করেছেন, তার জন্য তাঁর প্রশংসা করতে চাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here