সুদীপ্ত দাস, বনগাঁ: বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে বনগাঁ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পাপাই রাহার সমর্থনে মঙ্গলবার সকালে প্রচার সারলেন তৃণমূলের বনগাঁ সংগঠনিক জেলার ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব। এদিন সকাল থেকেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারন মানুষের কাছে গিয়ে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী পাপাই রাহা।
তৃণমূল প্রার্থী পাপাই রাহার সমর্থনে এই প্রচার মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ও অন্যান্য কাউন্সিলররা। এদিনের মিছিলে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা ডঙ্কা কাশি নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রচার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি বিশ্বজিৎ দাস বলেন…
“১৪ নম্বর ওয়ার্ডে পাপাই রাহার সমর্থনে প্রচার করতে গিয়ে দেখলাম সাধারণ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে, সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সারা বলে দিচ্ছে। বিশ্বজিৎ বাবুর কথায় , পাপাই রাহার জয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। প্রয়াত কাউন্সিলর দিলীপ দাস যে মার্জিন এ জয়যুক্ত হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি মার্জিনে পাপাই রাহা জয় লাভ করবে।
তৃণমূল প্রার্থী পাপাই রাহা দেশের সময় ‘কে জানান ” ভোট বলে কথা, প্রচারে তাই জমি ছাড়া নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই,তাই আজও দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছি৷”
“অন্যদিকে তৃণমূল এর এই শোভাযাত্রা কে কটাক্ষ করে বনগাঁর এক সময়ে- র দাপুটে কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণপদ চন্দ (কেষ্ট চন্দ)বলেন, মানুষ এঁদের প্রতি অতিষ্ট হয়ে গেছে, ডঙ্কা বাজিয়ে প্রচার করে কোনো লাভ হবে না, মানুষ সঠিক সময়ে জবাব দেবে!তিনি আরও বলেন আমাদের উপনির্বাচন এ প্রার্থী এলাকার স্থানীয় ছেলে প্রভাস পাল, তিনি সকাল সন্ধ্যায় প্রত্যেক টি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করে মানুষ এর অভাব অভিযোগ শুনছেন, এবং যদি সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে নির্বাচন হয় তাহলে বনগাঁ উপনির্বাচন এ কংগ্রেস প্রাথী বিপুল ভোটে জিতবে বলে আশাবাদী একশ শতাংশ বলে তিনি দাবি করেন!
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মুখে এবার বনগাঁ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড।মূলত গত পুরসভা নিরর্বাচনের ফল ঘোষনার পরেই শারিরীক অসুস্থ্যতায় মৃত্যু হয়েছিল ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের বিজয়ী কাউন্সিলার দিলিপ দাসের।আর তার মৃত্যুর কারনেই এই ওয়ার্ডে এবার ২১শে আগস্ট উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়।
জানা যায় এবছর এই এলাকায় মোট ভোটার ৪৭৭৬ জন।যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী পাপাই রাহা। বিজেপির প্রার্থী অরূপ পাল , সিপিআইএমের প্রার্থী ধৃতিমান পাল ৷ এবং কংগ্রেস প্রার্থী স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাস পাল৷
এদিকে এই বিষয়ে শাসকদলের জেতার বিষয়কে পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়েননি এদিন বিজেপি প্রার্থী অরূপ পাল।তিনি বলেন, বাংলার প্রতিটি মানুষ জেনে গেছেন তৃণমূলের বর্তমান পরিস্থিতি কি।কতটা দুর্নীতি গ্রাস করেছে শিক্ষার অঙ্গনকে৷ তাই কোনোমতে আর এই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক দল জায়গা করতে পারবে না বলে মত তার।এর সাথে তিনি আরও দাবি করেন,দীর্ঘদিন ধরে এই ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আমার খুব ভালো।মানুষ আমায় চেনে। তাঁদের সমস্ত প্রয়োজনে আমাযকে পাশে পান তাঁরা।আর বর্তমান সরকারের দুর্নীতি সকলের সামনে এসেছে,বেহাল অবস্থা রাজ্য সরকারের।
শাসক দল ও গেরুয়া শিবিরের এই জয়ের দাবিকে উড়িয়ে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছেন সিপিআইএম প্রার্থী ধৃতিমান পাল। এদিন তিনি বলেন,বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মানুষ যদিও বা চাকরি পেত। বর্তমান সরকার এবং বিজেপি সরকারের আমলে সেই আশা আর নেই।শিক্ষা দুর্নীতিতে ভরে গেছে গোটা রাজ্য। তাই জয়ের মুখ দেখবে এবার সিপিআইএম-ই।ধৃতিমানের মুখেও শোনা যায় উন্নয়নের বার্তা।তিনিও বলেন,প্রতিটি মুহুর্তে মানুষের পাশে ছায়ার মত থাকবেন তিনি।
সব মিলিয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের ভোটের প্রচার পাল্টা বিরোধিদের প্রচারে সরগরম বনগাঁর রাজনীতি ৷ সব দলই প্রচারে চালাচ্ছে জোরকদমে ৷ শেষ হাসিটা কে হাসে এখন সেইদিকেই চোখ সকলের ৷