সরকারি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে দু’দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সরকারি কর্মসূচির পর হুগলির আরামবাগে তাঁর জনসভা। শনিবার কৃষ্ণনগরে জনসভা করার কথা তাঁর। সেখানেও রাজনৈতিক সমাবেশের আগে কিছু সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন তিনি। বৃহস্পতিবারই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। সেই গ্রেফতারিকে হাতিয়ার করে দুই জনসভা থেকেই তিনি যে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করবেন, তা এক প্রকার নিশ্চিত। পাশাপাশি, আরামবাগের সভা থেকেই রাজ্যে লোকসভা ভোটের প্রচারও শুরু মোদীর।

দেশের সময় :সন্দেশখালি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আজ কোথায় ইন্ডি গাঁটবন্ধনের নেতারা? সন্দেশখালি নিয়ে গান্ধীর তিন বাঁদরের মতো তাঁরা মুখ, চোখ, কান বন্ধ করে আছেন কেন। আজ সন্দেশখালিতে যে নারী নির্যাতন হয়েছে, তা দেখে নারী আন্দোলনের পুরোধা রামমোহন রায়ও কষ্ট পাবেন। মোদী সন্দেশখালিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার ডাক দেন আরামবাগের দলীয় সভা থেকে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় মোদী। খোলা মাঠে অনেক কিছু বলবেন, তা আগেই বলেছিলেন। এদিন বক্তব্যের শুরুই করেন বাংলা দিয়ে। ঝরঝরে বাংলায় তিনি বড়দের প্রণাম এবং ছোটদের ভালোবাসা জানান।

এদিন সন্দেশখালি নিয়ে মোদী বলেন, ‘বাংলার পরিস্থিতি গোটা দেশ দেখছে। মা মাটি মানুষ-এর ঢোল বাজানো টিএমসি সন্দেশখালির বোনেদের সঙ্গে যা করেছে তা দেখে পুরো দেশ দুঃখিত, ক্ষুব্ধ। আমি বলতে পারি রাজা রামমোহন রায়ের আত্মা যেখানেই থাকুক এদের কার্যকলাপে দুঃখ হবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন সন্দেশখালির বোনেরা নিজের আওয়াজ তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্য চান তখন তাঁরা বদলে কী পেলেন? তৃণমূল নেতাকে বাঁচাতে সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে রাজ্য। বিজেপি নেতাদের সামনে রেখে অনেকে লড়াই করেছেন। বিজেপির চাপে কাল মানুষের ক্ষমতার সামনে ঝুঁকে ওই দোষীকে গ্রেফতার করে।’

রাজা রামমোহনের প্রসঙ্গ তুললেন মোদী
কাছেই খানাকুলে রাজা রামমোহন রায় জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি সমাজ সংস্কারক। তাঁর প্রেরণাতেই ভারতে নারীশক্তির উদয়, বলেন মোদী। 

মোদীর কথায় উঠে এল সন্দেশখালির প্রসঙ্গ। ‘মহিলাদের নির্যাতন’ নিয়ে সরব হলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যা হচ্ছে, তা দেখে রামমোহন রায়ের আত্মা কাঁদছে। যাঁর জন্ম হয়েছিল এই খানাকুলে। 

রানিগঞ্জে কয়লাখনির কাজ ৬ বছর আগে শুরু করা হয়েছে। ১৮ হাজার কোটি টাকার কাজ। সেই কাজ আটকে রয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যের দিকে আঙুল মোদীর। 

প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘দুর্নীতিতে জর্জরিত বলেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের বিরুদ্ধে ধর্না হয় এখানে। মোদী এ সবে ভয় পান না। আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে গ্যারান্টি দিয়েছি। যাঁরা গরিবকে লুটেছেন, তাঁদের ফেরাতেই হবে। ’’

পটনা, বেঙ্গালুরু, আর কোথায় কোথায় এঁরা এক সঙ্গে বসে বৈঠক করেন। অথচ কংগ্রেস এখানকার মুখ্যমন্ত্রীর থেকে জবাব চাওয়ার সাহস করেননি। সন্দেশখালির এই বোনদের মতামত এক বারও দেখা হয়নি। তাঁর কথায়,  ‘‘কংগ্রেস যা বলেছে, শুনলে চমকে যাবেন। কংগ্রেসের সভাপতি বলেছেন, বাংলায় এ সব চলতেই থাকে।’’

মোদী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ থেকে পুরসভা নিয়োগ— সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। গরিবদের রেশনে দুর্নীতি, সীমা দিয়ে পশুপাচার— সবেতেই দুর্নীতি করেছে। সে কারণে তৃণমূলের মন্ত্রীদের ঘর থেকে নোটের পাহাড় বার হচ্ছে। এর আগে এত বড় নোটের পাহাড় দেখেছেন? সিনেমাতেও দেখা যায় না। 

মোদীর কথায় উঠে এল অযোধ্যার মন্দির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, এত বছর পর ঘর পেল রামলালা। পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে তাঁর স্বাগত জানানো হয়েছে, তা দেশ দেখেছে।  

এদিন সাত হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধনের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যও শোনা যায় মোদীর কণ্ঠে। পাশাপাশি রামমন্দির উদ্বোধন প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন মোদী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here