দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মালদহে বাজির গুদামে আগুন। বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায় গুদামে। ঘটনাস্থলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অন্তত তিন জন গুরুতর জখম হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।

মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার নেতাজি পুরবাজার এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে স্থানীয়েরা প্রথমে ভেবেছিলেন, কোথাও বোমা ফেটেছে। কিন্তু পরে জানা যায়, বাজারে যে বাজির গুদাম রয়েছে, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন ভোরে রথবাড়ি এলাকায় নেতাজি পুর বাজারে বাজির দোকানে আগুন লাগে। পরের পর বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে আশপাশের এলাকাগুলিতে। বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন এলাকার লোকজন। গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।

এলাকার লোকজন বলছেন, দোকানটিতে প্রচুর পরিমাণে বাজি মজুত করা ছিল। সে থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে বলে অনুমান। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই দোকানের শাটার ভেঙে একজনের ঝলসানো দেহ উদ্ধার করেছে দমকলবাহিনী। মৃতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি এখনও। দমকল জানাচ্ছে, নেতাজি পুর বাজারের যে বাজির দোকানে আগুন লেগেছে সেটি খুবই ঘিঞ্জি জায়গায় রয়েছে। ফলে আগুন আশপাশের আরও চারটি দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে। এত ঘিঞ্জি এলাকায় বাজির দোকান কীভাবে তৈরি হল, দোকানের বৈধ লাইসেন্স আছে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাজির গুদামকে ঘিরে একাধিক বাজির দোকানও ছিল। মঙ্গলবার সকালে গুদামের সামনে গাড়ি থেকে কার্বাইড নামানো হচ্ছিল। সেই কার্বাইড অসাবধানতায় নীচে পড়ে যায়। তার পরেই হয় বিস্ফোরণ।

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। বাজির দোকানের লাইসেন্সের প্রশ্ন উঠলে, তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন তাঁরা। আগুন নিভিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাই প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এগরার বাজি কারখানার ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং মৃত্যুর স্মৃতি এখনও দগদগে। এর মধ্যেই রাজ্যের একের পর এক জেলা বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিষিদ্ধ বেআইনি বাজি উদ্ধারের ঘটনা সামনে আসছে। রবিবার রাতে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে বজবজ ৷ রাতেই ১০ বছরের মেয়ে সহ ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। কারখানা থেকে ২০ হাজার কেজির বেশি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৪ জনকে। গত ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামে এক বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই নিয়ে গত সাতদিনে প্রায় চারটি জেলা থেকে কয়েক হাজার কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হয়েছে। বাজি কারখানাগুলিতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ জনের।

কোথা থেকে এত বাজি আসছে, বাজি কারখানাগুলিই বা কোন নিয়মে চলছে সবটা খতিয়ে দেখতে গতকালই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরির ঘোষণা করেছে নবান্ন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে সেই কমিটিতে থাকছে এমএসএমই, পঞ্চায়েত, দমকল, পুরদফতর, স্বরাষ্ট্র দফতরের সদস্য। বাজি ক্লাস্টার তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে রাজ্যের। ক্লাস্টার তৈরি হলে, নজরদারি নিয়মিত হলে বেআইনি বাজি তৈরি হবে না বলেই দাবি করেছেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here