হীয়া রায় বর্ধমান: 

এবারে আর বিজেপি সরকার গঠন হবে না বলে ফের দাবি করলেন তৃণমূল নেত্রী। শুধু তাই নয়, রাজ্য ধরে ধরে বিজেপি কোথায় কত আসন পেতে পারে তার সম্ভাব্য হিসেবও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার বর্ধমানের আউশগ্রামের সভা থেকে মমতা বলেন, “এবারে কি বিজেপি ক্ষমতায় আসবে মনে করেন? আগেরবার ৩০৩ পেয়েছিল, এবারে সেটাও পাবে না। মাটির কথা শুনুন, বিজেপি আর ক্ষমতায় আসছে না।”

এরপরই মঞ্চের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত হাঁটতে হাঁটতে রীতিমতো কড়ি গুনে মমতা বলেন, “উত্তরপ্রদেশে এবারে অখিলেশরা ভাল লড়াই করছে, ওখানে বিজেপি আর প্রচুর আসন পাবে না। বিহারে হাফও পাবে না।. রাজস্থানে প্রথম ভোটে কুপোকাত, মধ্যপ্রদেশে হাফও পাবে না।

তামিলনাড়ুতে জিরো, কেরালায় বাম-কংগ্রেসই বেশিরভাগ আসন পাবে। কর্ণাটক, তেলেঙ্গানাতেও এবারে বিজেপির ফল খারাপ হবে, হাফ সিটও পাবে না।”
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্ট অবশ্য এগিয়ে রেখেছে বিজেপিকে। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “সমীক্ষায় সেটা দেখছেন ওটা বানানো। বিজেপি কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেক সমীক্ষা তৈরি করিয়েছে। এবারে বিজেপি আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।”

প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘প্রচারবাবু’ বলে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “সকাল থেকে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত টিভি খুললেই বিজ্ঞাপনে প্রচারবাবুর মুখ। মুখ দেখলেই সারাটা দিন গেল! লেবু কচলাতে কচলাতে তেতো হয়!”

একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে না থাকবে ধর্মের ব্যবহার, না থাকবে মানুষের অধিকার, না থাকবে কথা বলার অধিকার, জীবন জীবিকার অধিকারও থাকবে না। তাই একটা ভোটও নষ্ট করবেন না।”

এদিন গরমে বিদ্যুৎ বাঁচানোর নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েকদিন ধরেই দেদার আগুন ঝরাচ্ছে আবহাওয়া। এই অবস্থাতে অনেকেই হাঁসফাঁস করা পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে এসির উপর ভরসা রাখছেন। কেউ কেউ AC-র তাপমাত্রা ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নামিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু, ক্ষণিকের সুখ পেতে বড় বিপদ ডেকে আনছেন না তো তাঁরা? পরিবেশের উপর পড়বে না তো বিরূপ প্রভাব? এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা-চর্চা করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এবার এই নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জনসভা থেকে তিনি আরও বলেন, ‘আজ ৩১ মার্চ থেকে আমি বাইরে রয়েছি। রোজ মিটিং করছি। মাঝে একদিন রেড রোডে গিয়েছিলাম ইফতারের জন্য, আর একবার পুজোর জন্য গিয়েছিলাম। বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক আমার নেই বললেই চলে।’

তাঁর সংযোজন, ‘অনেকে বলে হেলিকপ্টার চড়ে আসা। ওই কপ্টারে একবার বসে দেখুন। আগুনের মতো জ্বলে। ওখানে কোনও ঠান্ডা নেই। টোটাল লু বইছে। হেলিকপ্টারটা রোদ্দুরে থাকা মানে মনে রাখবেন ৫০ ডিগ্রিতে আমায় আসতে হয়। এত তীব্র দহনের মধ্যে তিন মাস ধরে নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে সন্তুষ্ট করতে মানুষকে কষ্ট দিয়ে ভোট করছে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা অনেকে জানেন না, অনেকে ১৭ চালিয়ে দেয় এসি মেশিনটা দার্জিলিঙে থাকবেন বলে, ১৮-য় চালিয়ে দেন। বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। আমি যে ঘরে থাকি সেখানে ব্যবহার করি না। আর বাইরে থাকলেও ২৭-এর নীচে চালাই না। আপনারা চালান কিন্তু, বিদ্যুৎ সঞ্চয় করুন। বিদ্যুৎ অপচয় করবেন না। বিখ্যাত গবেষকরা বলছেন ২৫-এর নীচে নামানো উচিত নয়। আর যত্রতত্র বিদ্যুৎ জলের অপচয় করলে কিন্তু ভাঁড়ার শেষ হয়ে যায়।’

এদিন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেন, ‘তাই মনে রাখবেন দেউচা পাঁচামি করছি এই কারণে যাতে ১০০ বছর মানুষ সস্তায় বিদ্যুৎ পায় এবং এর কোনও অভাব না হয়। বাংলা সারা দেশকে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে, কারও কাছে আমাদের হাত পাততে হবে না।’

পাশাপাশি এদিন অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসা শোনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘কেষ্ট মাটির ছেলে আপনারা ভালোবাসতেন। ওর অগুণ কী রয়েছে আমি জানি না। আইন আইনের পথে চলবে। একটা গরিব লোক ওর কাছে দাঁড়াত ও কাউকে কোনওদিন ফিরিয়ে দিত না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here