দেশের সময়: ক্ষমতার আস্ফালন নয়। মানুষের সঙ্গে থেকে কাজ করতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রকল্পগুলিকে স্বচ্ছতা বজায় রেখে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। জন্মদিনে আরও একবার এই অঙ্গীকার করলেন বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ।

কোনও পাঁচতারা হোটেলে নয়, পার্কে সমাজের সব স্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই বৃহস্পতিবার জন্মদিন পালন করলেন তিনি। তাঁর জন্মদিন ঘিরে তৈরি হল সম্প্রীতির মেলবন্ধন। বনগাঁর ছেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মিজানুর মণ্ডলেরও জন্মদিন ছিল একইদিনে। তাই তাঁকে পাশে নিয়ে একইসঙ্গে কেক কাটলেন বনগাঁ পুরসভার তৃণমূলের পুরপ্রধান। যার সাক্ষী থাকলেন কয়েক হাজার মানুষ। তাঁর কথায়, আমার বাবা বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক, প্রয়াত ভূপেন শেঠ মানুষের জন্যই সারাজীবন কাজ করে গিয়েছেন। বাবার আদর্শকে সঙ্গী করেই তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চান।

গোপাল শেঠ বলেন, জন্মদিন উপলক্ষে কোনও বাড়তি আড়ম্বর কোনওদিনই করিনি। এবারও তা করা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বনগাঁর বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বাড়িতে এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন। ভিড় বাড়ছিল। তখনই ঠিক করি, এভাবে নয়। সবাইকে নিয়েই দিনটা কাটাতে চাই। শুধু আমার জন্মদিন নয়, একইদিনে আরও যাঁদের জন্মদিন, সবাইকে নিয়েই কেক কাটব। সেইমতো চাঁপাবেড়িয়ায় অগ্নিকন্যা পার্কে গিয়ে বসি। সেখানেই বনগাঁর শহরের পাশাপাশি সংলগ্ন গ্রাম এলাকা থেকেও বহু মানুষ এসেছেন সারাদিনে। সেখানেই এক্সপোর্টার মিজানুর মণ্ডল,ব্যাঙ্ক কর্মী প্রিয়জিত মুখার্জি-দেরকে নিয়ে একইসঙ্গে কেক কাটি। ওদের দুজনেরও এদিনই জন্মদিনছিল৷ এছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আরও বহু মানুষ সেখানে হাজির ছিলেন। তাঁরা আমাকে কেক খাইয়ে দেন। আমিও তাঁদের কেক খাইয়ে দিই। অনেক ছাত্র, যুবরও জন্মদিন পালন করা হয়েছে একইসঙ্গে। প্রত্যেকের জন্য মাংস ভাতের আয়োজন করা হয়েছিল। সবাই মিলে একসঙ্গে বসে ভুরিভোজ সারা হয়েছে।

গোপাল শেঠের কথায়, জাতপাত নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করার চেষ্টা করে, মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে, তাঁদের একটাই বার্তা দিতে চাই। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। বাংলার সকল ভাই-বোন আমাদের আপনজন। মোরা একই বৃন্তে একই কুসুম হিন্দু-মুসলমান। ধর্মের ভিত্তিতে যারা ভেদাভেদের চেষ্টা করছে, বাংলার মাটিতে তাদের ঠাই নেই।

পুরপ্রধানের জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বনগাঁর সমস্ত কাউন্সিলার। সম্প্রতি জল্পনা ছড়িয়েছিল, বনগাঁ পুরসভায় তৃণমূলের একাংশ কাউন্সিলার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চলেছেন। এনিয়ে তাঁরা গোপন বৈঠকও সেরে ফেলেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যানের জন্মদিনে সব কাউন্সিলার হাজির থাকার বিষয়টি সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিল।

পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, কোনওদিনই আমার বিরুদ্ধে কোনও কাউন্সিলার যাননি। এটা বাইরে থেকে কেউ কাউকে প্রলোভন দেখিয়ে উস্কাতে পারেন। সেটা অবশ্য আমার জানা নেই। আমি শুধু এটুকুই জানি, কোনও অন্যায়ের সঙ্গে থাকব না আমি। তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে পুরসভার চেয়ারম্যান করেছেন। আমার কাজ, সরকারের প্রকল্পগুলি ঠিকভাবে যাতে মানুষের কাছে পৌঁছয় তার ব্যবস্থা করা। আইন মেনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সেই কাজটাই করে যাচ্ছি আমি। যাতে সরকার যদি যে কোনও সময় পরিদর্শন করে, যাতে বনগাঁ পুরসভা স্বচ্ছতার নিরিখে নজির গড়তে পারে, সেটাই আমার লক্ষ্য।

পেট্রাপোল এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দেও সদস্য মিজানুর মন্ডল, মীর আবদুল হাসেম,মোফিজুর রহমান,রামচন্দ্র বিশ্বাস , সুভাস মল্লিক এবং সুব্রত রায়-রা জানান, আমাদের কে গোপাল বাবু তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে কোন নিমন্ত্রণ পত্র পাঠান নি বা ফোন কলেও ডাকেন নি৷ ফেসবুকে ওই দিন সকাল থেকেই শুভেচ্ছার ঝড় দেখতে পাই ৷ তারপর এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেয় গোপাল বাবুকে তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে হবে ৷ সেই মত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খবর নিয়ে পৌঁছে যাই অগ্নিকন্যা পার্কে এবং সংস্থার পক্ষ থেকে একটি কাম্মিরী শাল যখন তাঁকে পড়িয়ে দিতে যাই তখন গোপাল বাবুজড়িয়ে ধরে বলেন সীমান্ত বাণিজ্যকে এভাবেই শীতের চাদরের মতো মনে জড়িয়ে রাখবি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পাশে আছে পাহাড়া দিচ্ছেন আমিও তাঁরই সৈনিক বনগাঁর মানুষের সাথে থাকব যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে ৷ এমন মনের মানুষের জন্মদিন উপলক্ষে কোন আমন্ত্রণ পত্রের প্রয়োজন হয়না তাঁর ভালবাসার টানেই আমাদের মতো আরও দু’হাজার মানুষও উপস্থিত ছিলেন এদিন যা নিজের চোখে দেখে এলাম আমরা৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here