দেশের সময় ফের চোট পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুরে হেলিকপ্টারে চড়তে গিয়ে বিপত্তি ঘটল। তিনি কপ্টারের ভেতরেই হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। এদিন তাঁর কুলটি এবং আসনসোল দক্ষিণ দুই জায়গায় দুটি প্রচার কর্মসূচি ছিল। আর কুলটিতে পৌঁছনোর জন্যই তিনি দুর্গাপুর থেকে হেলিকপ্টারে চাপেন। তিনি কপ্টারে উঠে আসনে বসতে যাওয়ার সময় আচমকাই পড়ে যান। 

শনিবার আসানসোলে লোকসভা ভোটের দু’টি প্রচারসভা রয়েছে মমতার। দুর্গাপুর থেকে হেলিকপ্টারে সেখানেই যাচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কপ্টারে উঠে আসনে বসার সময়ে আচমকাই পড়ে যান।

একটি ভিডিয়ো ফুটেজে ধরা পড়েছে গোটা ঘটনাটি। তাতে দেখা যাচ্ছে, গাড়ি থেকে নেমে হেলিকপ্টারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মমতা। সিঁড়ি ধরে উঠছিলেন। ধীরে ধীরে হেঁটে ভিতরে প্রবেশও করেন। কিন্তু আসনের সামনে পৌঁছেই অল্প হোঁচট খান। তার পরে পড়ে যান মমতা।

মাস দেড়েক আগে আহত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে আঘাত লেগেছিল তাঁর। গত ১৪ মার্চ সেই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়, সেলাইও পড়ে ক্ষতস্থানে। তার ৪৪ দিন পরে আবার আহত হলেন মমতা।

শেষ বার কপালে আঘাত লাগার কয়েক সপ্তাহ পরেই অবশ্য মাথায় লিউকোপ্লাস্ট আটকে ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের জেলায় জেলায় ঘুরে গরমের মধ্যেই তৃণমূলের প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করছিলেন তিনি। গরমে যে তাঁর সভা করতে অসুবিধা হচ্ছে সে কথাও বলেছিলেন মমতা। সম্প্রতিই বুদবুদের জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার হিট চেম্বার হয়ে থাকে। প্রচণ্ড গরমে কষ্ট হচ্ছে, শরীরের জল শুকিয়ে যাচ্ছে। এই গরমে নির্বাচন করা উচিৎ হয়নি।’’ কিন্তু ভোটের জন্য সভায় রাশ টানেননি।

শনিবারও মমতা যে দু’টি সভা করবেন, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। একটি কুলটি এবং অন্যটি আসানসোলে। দু’টি সভাই ছিল আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্‌হার সমর্থনে। বেলা নাগাদ কুলটির সভায় যোগ দিতেই দুর্গাপুর থেকে রওনা হচ্ছিলেন কপ্টারে। সেই সময়েই ঘটনাটি ঘটে।
তবে পড়ে গেলেও নিজের সভা বাতিল করেননি মমতা। দ্রুত উঠে সামলে নেন। কপ্টারও রওনা হয় কুলটিতে মমতার প্রথম সভার উদ্দেশে। যথাসময়েই সেখানে পৌঁছে যান তৃণমূলনেত্রী। বক্তৃতাও শুরু করেন।

চোট নিয়ে সেই সভায় একটি কথাও বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেননি পড়ে যাওয়ার কথাও। বরং অন্য সভাগুলিতে যে ভাবে তিনি উচ্চস্বরে বিরোধীদের তোপ দাগেন, সেই ভাবেই ভাষণ দিয়েছেন মমতা। মঞ্চের এ দিক থেকে ও দিক নিরন্তর হেঁটে যেমন বক্তৃতা করেন, সে ভাবেই করেছেন বক্তৃতাও।

ইতিমধ্যেই রাজ্যে দুই দফায় নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। এখনও পাঁচ দফায় নির্বাচন বাকি রয়েছে। প্রচার ময়দানে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে রাজ্যের সমস্ত জেলায় জেলায় গিয়ে প্রচার করছেন তিনি। রবিবার আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে তাঁর প্রচার কর্মসূচি ছিল। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথেই এই বিপত্তি ঘটে।

এদিনের সভা থেকে একাধিক বিষয়কে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগেন BJP-কে। তিনি বলেন, ‘ এখানে একটা চকোলেট বোমা ফাটলেও CBI,NIA, NSG-র প্রয়োজন কেন হচ্ছে! রাজ্য পুলিশকে জানাচ্ছে না। কেউ জানে না কোথা থেকে কী উদ্ধার হল! হতে পারে ওরা গাড়ি থেকে নিয়ে এসে দেখাচ্ছে। কোনও প্রমাণ নেই যে ওই ঘরে সেগুলো ছিল।’

অর্থাৎ সন্দেশখালির অভিযানে রাজ্য পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি, এমনটাই স্পষ্ট জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন একাধিক বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দাগেন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওরা ভাবছে বোমা মেরে, চাকরি খেয়ে নির্বাচনে জিততে পারবে। রোজগার চাই, রোটি, কাপড়া, মাকান চাই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, সবুজ সাথী, সাইকেল, মজদুরকে রক্ষাকবচ চাই।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা চাই অন্ডাল বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হোক।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here