দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দলীয় বৈঠকে দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ বারের লোকসভা ভোটে ঘাটাল থেকে দেব (দীপক অধিকারী)-কেই প্রার্থী করতে চান তিনি। দলনেত্রীর নির্দেশ থাকলে তিনিও যে ভোটে লড়তে প্রস্তুত, অভিনেতা-সাংসদও সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার মাসখানেকের মধ্যেই, লোকসভা নির্বাচনের আগেই বড় সিদ্ধান্ত ঘাটালের সাংসদ দেবের।

জেলাশাসক দফতর সূত্রে খবর , মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দেব। শুধু তা-ই নয়, ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।

লোকসভা নির্বাচনের আগে এতেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তিনটি সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগের মধ্য দিয়ে কি ভোটে লড়তে না-চাওয়ারই বার্তা দিলেন সাংসদ? এ ব্যাপারে দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল দেশের সময় অনলাইন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

চব্বিশের লোকসভা ভোটে অভিনেতা দেব তথা দীপক অধিকারী তৃণমূলের প্রার্থী হবেন কিনা তা নিয়ে তিনি নিজেই কৌতূহল জিইয়ে রেখেছিলেন। জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ মহলে দেব অনেককেই বলেছেন যে তিনি আর লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে চান না।

এই সাত পাঁচ পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার তিনটি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন দেব। বীরসিংহ ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন দেব। সেই পদ থেকে তিনি এদিন ইস্তফা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ঘাটাল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ এবং ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহা বিদ্যালয় এর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।

এই তিন পদ থেকে দেব ইস্তফা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শাসক দলের মধ্যে নতুন কৌতূহল শুরু হয়েছে। বাংলা থেকে রাজ্যসভার ৫টি আসন শূন্য হতে চলেছে। সেই কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ ভোট হবে। তার আগে ১৫ তারিখের মধ্যে মনোনয়ন পেশ করতে হবে। ফলে দেব এদিন তিন কমিটি থেকে ইস্তফা দিতেই অনেকে মনে করছেন, হতে পারে এর সঙ্গে রাজ্যসভার নির্বাচনের যোগ রয়েছে। কে জানে, দেবকে হয়তো রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী করে দেবেন মমতা।

লোকসভা বা রাজ্যসভার প্রার্থী হতে গেলে কোনওরকম অফিস অফ প্রফিটের সঙ্গে যুক্ত থাকা যায় না। অর্থাৎ সরকারি কোনও পদ থেকে বেতন নিয়ে পদে থাকতে থাকতে প্রার্থী হওয়া যায় না। দেব এই সব কমিটি থেকে সম্ভবত কোনও ভাতা বা বেতন নিতেন না। কিন্তু এই তিন পদই ছিল তাঁর লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্র ঘাটাল সংক্রান্ত। তিনি ঘাটালের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেখানকার উন্নয়ন পর্ষদ বা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির পদ দখল করে থাকা প্রাসঙ্গিক দেখায় না।

এখানে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভাল, গত সাত-আট বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন, তা দলের কেউই আগাম জানতে পারেনি। কোনও সংবাদমাধ্যম আগাম খবর প্রকাশ করতে পারেনি। ফলে এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভা নির্বাচনে কাদের প্রার্থী করবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

উল্লেখ্য, লোকসভা বা রাজ্যসভা নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হন তাঁরা অফিস অফ প্রফিটের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। রাজ্য রাজনৈতিক মহলের অন্দরে তীব্র জল্পনা দেব কি নিম্নকক্ষের বদলে উচ্চকক্ষে যাবেন? অবশ্য এই ইস্তফা প্রসঙ্গে এখনও দেব মুখ খোলেননি। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের তরফেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here