দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ সারদাকাণ্ডের তদন্তে কি শিথিল মনোভাব দেখাচ্ছে সিবিআই? এমন প্রশ্ন যখন সর্বত্র তখন নতুন করে সিটের হাতে থাকা মামলা নিজেদের হাতে নিলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দ সংস্থা। এদিনই ঘাটাল আদালতে থাকা মামলা সিবিআই হাতে নিল।

বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত চলছে প্রায় ছ’বছর ধরে। এই মামলায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। গ্রেফতারও করেছে অনেককে। কিন্ত সম্প্রতি সেই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অনেকেই যখন বলতে শুরু করেছেন যে, সিবিআই এবার সারদা মামলা গুটিয়ে আনতে পারে ঠিক তখনই নতুন করে রাজ্যের দায়ের করা মামলা হাতে নিল সিবিআই।

২০১৩ সালে হওয়া এই মামলাটি ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল আদালতে। সেখান থেকে এবার মামলাটি এল আলিপুর আদালতে। রাজ্যের হাতে থাকা এই মামলাকে সারদা তদন্তে সিবিআইয়ের প্রধান মামলা আরসি৪ (রেগুলার কেস)-এর অন্তর্ভুক্ত করা হল। আর এই মামলা হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গে এমন সম্ভাবনাও তৈরি হল যে, রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে ছড়িয়ে থাকা সিটের হাতে থাকা মামলাগুলিকে নতুন করে নিজেদের হাতে নিতে পারে সিবিআই। যুক্ত করতে পারে মূল মামলার সঙ্গে। এর ফলে তদন্তেও আসতে পারে নতুন মোড়।

এই মামলা হস্তান্তর নিয়ে এক প্রস্থ নাটকও হয় ঘাটাল আদালতে। এই মামলা অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলাটি নিজেদের হাতে নিতে সিবিআইয়ের এক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দল আসেন ঘাটাল আদালতে। এর পরে এদিন ছিল ওই মামলার শুনানি। এদিন আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান।

এর আগেই অবশ্য অয়ন চক্রবর্তী সিআরপিসি ১৬৭-র ক্লজ ফাইভ অনুসারে এই মামলা খারিজের দাবি জানিয়েছিলেন। আইনের ওই ধারা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনও মামলায় কাউকে গ্রেফতারের পরে অভিযুক্তের জামিন হয়ে যাওয়া সত্বেও দু’বছরের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে না পারলে সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। রাজ্য সরকারের আইনজীবী অবশ্য এই যুক্তি মানতে না চেয়ে এতদিন বিরোধিতা করে আসেন। যদিও এদিন সিবিআইকে ওই মামলা দেওয়ার ব্যাবারে আপত্তি জানাতে আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তীর যুক্তিকেই অস্ত্র করেন সরকারি আইনজীবী। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর কোনও দাবিই ধোপে টেকেনি।

২০১৪ সালে সিবিআই-কে সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নামার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময়ে রাজ্যের হাতে শতাধিক মামলা ছিল। তদন্ত শুরুর সময়ে সিবিআই রাজ্যের হাতে থাকে মামলা থেকে কয়েকটি বেছে নিয়ে তিন ভাগে ভাগ করে তিনটি মামলা শুরু করে। আরসি৪-এ ছিল ৫৮টি মামলা। বেশ কিছু মামলা যোগ করে আরসি৫ এবং আরসি৬-এর তদন্ত শুরু হয়। বাকি মামলাগুলি রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে চলছিল। এরই একটি এবার সিবিআইয়ের হাতে এল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here