দেশের সময়, বনগাঁ: এ যেন রাজকীয় প্রত্যাবর্তন। সমস্ত জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে, আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই রাজনৈতিক শক্তির পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় অবলীলায় এবং সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন

বনগাঁ পুরসভার প্রধান শঙ্কর আঢ‍্য। বনগাঁর নাগরিক জীবনের ইতিহাসে তিনি যে একজন একেবারেই ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব, তা আবারও প্রমাণ করলেন। অনেক ঝড় ঝাপটা সামলে অবশেষে ফিরে এলেন নিজের পুরনো চেয়ারে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসকের ব্যবস্থাপনায় ৫ সেপ্টেম্বর বারাসত জেলা শাসকের কার্যালয়ে় আস্থা ভোট হবার কথা ছিল।

সেইভাবে প্রশাসনিক সমস্ত ব‍্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছিল। সেখানে তৃণমূলের পক্ষের ১৪ জন কাউন্সিলর সেই ভোটাভুটিতে অংশ নিলেও বিজেপির ৭ কাউন্সিলর শেষ পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত হন নি। তার বদলে তারা সেদিন ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাদের অভিযোগ, নিয়ম মেনে অনাস্থা ভোটের ব্যবস্থা করা হয়নি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক শেখর বি সরাফ এর এজলাসে আইনজীবী মারফত একটি পিটিশন জমা দেন বিজেপির কাউন্সিলররা।

তারই প্রেক্ষিতে এদিন প্রথমে বিচারক অনাস্থা ভোট পরিচালনার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। নতুন কোন নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি থাকবে , এই মর্মে আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী দেবযানী দাসগুপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসকের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি মেইল করেন। জেলাশাসকের দপ্তর থেকে এদিন দুপুর ১২ টা ৫ মিনিটে সেই চিঠি রিসিভও করা হয়। পরে বিকেলের দিকে বিজেপি কাউন্সিলরদের সেই আবেদন খারিজও করে দেন বিচারক সরাফ। অন্যদিকে এদিনই তৃণমূলের ১৪ জন কাউন্সিলর বনগাঁ পৌরসভার প্রধান শংকর আঢ‍্যর পক্ষে ভোট দেন। বিজেপির কাউন্সিলররা উপস্থিত না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই একতরফাভাবে জয়লাভ করে তৃণমূল।

সেই প্রেক্ষিতে বনগাঁ পৌরসভা তৃণমূলের দখলেই রয়ে গেল। এই প্রসঙ্গে পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ‍্য বলেন, এটা সত‍্যের জয় হয়েছে। বিরোধীরা বার বার আদালতকে ভুল পথে পরিচালনা ক‍রার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত তারা ব‍্যর্থ হয়েছে। এদিকে, জয়ের খবর এসে পৌঁছনোর পর বনগাঁয় শুরু হয়ে যায় উৎসব। মধ‍্যরাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাজি ফাটানোর শব্দ পাওয়া যায়।

এদিনই পুরসভার পাশেই মঞ্চ বেঁধে নতুন করে ফিরে আসা পুরপ্রধান এবং কাউন্সিলরদের বরণ করে নেওয়া হয় । পুরপ্রধানসহ সমস্ত কাউন্সিলর মাইকে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। প্রত্যেকেই তাদের বক্তব্যে গত তিন মাসের জমানো ক্ষোভ উগরে দেন। শঙ্কর আঢ‍্য তার বক্তব্যে বলেন, আমরা বনগাঁর মানুষের উন্নয়ন করতে চাই। আর এতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিজেপির মদদপুষ্ট কিছু নেতা এবং দলের কিছু গদ্দার। তা সত্ত্বেও আমরা মানুষের স্বার্থে উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাব। উন্নয়ন দিয়েই রাজনৈতিক মোকাবেলা হবে আগামী দিনে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here