দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের কী পদ্ম ফুটতে চলেছে শান্তিকুঞ্জে? শনিবার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ এবং শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর সাক্ষাতে নয়া শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। শুধু শিশির অধিকারীরই নয়, বৈঠকে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর আরেক ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, কাঁথিতে নরেন্দ্র মোদীর সভায় আমন্ত্রণ জানাতেই অধিকারী পরিবারের বাসভবনে হাজির হয়েছেন বিজেপি নেত্রী। কিন্তু শুধুই কী সৌজন্য সাক্ষাত?

দুই ছেলে আগেই বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন। এবার কি তবে তিনিও?‌ তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীকে নিয়ে কিন্তু ফের জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ আজ তাঁর বাড়ি শান্তিকুঞ্জে এসেছেন বিজেপি নেত্রী তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। 

শুধু এসেছেন, তা নয়, রীতিমতো পাতপেড়ে বসে খেয়েছেন। খোশমেজাজে গল্পগুজব করেছেন। বাড়ির সকলের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেছেন বিজেপি সাংসদ। ঘরোয়া আবহে। কেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের বাড়িতে হঠাৎ এলেন লকেট?‌ 

কাঁথিতে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সভার জন্যই স্থানীয় সাংসদকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছেন। একথা নিজেই জানিয়েছেন লকেট। বলেছেন, ‘‌কাঁথিতে এই প্রথম মোদীজি আসছেন। শহরের প্রবীণতম রাজনীতিককে প্রণাম করে সভার প্রস্তুতি শুরু করতে চাই। ওঁর পরামর্শ এবং আশীর্বাদ চাই আমরা।’

তবে কি এই সভাতেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিজেপি–তে যোগ দেবেন শিশির অধিকারী?‌ কারণ কাঁথিতে মোদী শুধুই রাজনৈতিক সভা করতে আসছেন। কারণ নির্বাচনী বিধি জারি হওয়ার পর সরকারি জনসভা হতে পারে না। দস্তুরমতো রাজনৈতিক সভায় বিরোধী দলের নেতা, মন্ত্রী বা সাংসদ যোগ দেন না। তাহলে শিশির তৃণমূলের সাংসদ হয়ে কীভাবে মোদীর সভায় যোগ দেবেন?‌ 

এর আগে মোদীর হলদিয়ার সভায় যোগ দিয়েছিলেন দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি ওই কেন্দ্রের সাংসদ। কিন্তু ওই সভা ছিল সরকারি। তাই দিব্যেন্দুর যোগদানে কোনও সমস্যা তৈরি হয়। তাই শিশিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় জল্পনা তৈরি হচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। প্রশ্ন উঠছে, ওই সভাতেই বিজেপি–তে যোগ দেবেন তিনি?‌ শুভেন্দুর বাবা অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তাই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়। 

শিশির অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা বিশ্লেষণে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দলের প্রতি বারবার অসন্তোষ ধরা পড়েছে শিশির অধিকারীর কথায়। দল থেকে কেউ তাঁর খোঁজ নেয় না বলে আক্ষেপও করেছেন তিনি। এমনকী কয়েকদিন আগে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ছেলেদের ইচ্ছাই তাঁর শেষ কথা। একইসঙ্গে শুভেন্দুর হয়ে প্রচারের কথাও ব্যক্ত করেছিলেন সংবাদমাধ্যমে। এইসব বক্তব্য ও পরিস্থিতি বিচার করলে বিজেপি যোগের সবুজ সংকেতই ধরা পড়ে।

সেক্ষেত্রে মোদীর সভাতেই অধিকারী পরিবারে পদ্মফুলের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। কারণ শুধু শিশির অধিকারী নয়, অধিকারী পরিবারের আরও এক সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারীও শীঘ্রই দাদার পথেই বিজেপি যেতে চলেছেন বলে খবর। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ার নরেন্দ্র মোদীর সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অনুপস্থিত থাকলেও হাজির ছিলেন দিব্যেন্দু। তাঁকে স্টেজের নীচে দেখতে পেয়ে জড়িয়েই ধরেছিলেন মোদী। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, শুভেন্দুর মতোই দিব্যেন্দু অধিকারীরও গন্তব্য বিজেপি। শুভেন্দুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন আরেক ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বিধানসভা ভোটের আগেই শান্তিকুঞ্জে জোড়াফুলের অস্তিত্ব ছেঁটে ফুটবে আরও পদ্ম।

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরই তৃণমূলের তরফে শান্তিকুঞ্জে পদ্ম ফোটানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন নেতৃত্বের একাংশ। সে চ্যালেঞ্জও গ্রহণ করে শুভেন্দু হুঙ্কার দিয়েছিলেন পদ্ম তিনি নিজের বাড়িতেও ফোটাবেন। সময় যত এগোচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেই চ্যালেঞ্জই পূরণ করতে চলেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here