দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ ২০১৭ বিচ্ছেদ
২০২১ পুনর্মিলন, টানা ৩ বছর ৮ মাসের তিক্ততা দূরে সরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে উত্তরীয় পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল। পাশে বসে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশেই ছিলেন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়। তাঁদের তৃণমূলের মঞ্চে স্বাগত জানালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু এ প্রশ্নে সন্তুষ্ট ছিল না সংবাদমাধ্যম। সাংবাদিকরা মুকুল রায়কে প্রশ্ন করছিলেন, তিনি বিজেপি ছেড়ে দেওয়ার কারণ কী? আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা প্রশ্ন করেন, এই মুকুল রায় আপনার ও অভিষেকের বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণ করেছিলেন। আপনাদের মতান্তর তৈরি হয়েছিল। তা হলে হঠাৎ করে রসায়ন বদলে যাওয়ার কারণ কী?


মুকুলবাবু জবাবে বলেন, আমি তো বলেছি বিজেপি করতে আমার ভাল লাগছিল না। আর সবিস্তার কারণ আমি লিখিত ভাবে বিবৃতি আকারে পেশ করব।

অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবক সুলভ যত্নে সামাল দিলেন সংবাদমাধ্যমের যাবতীয় অপ্রিয় প্রশ্ন। বলেন, এসব বিজেপি মিডিয়ার প্রশ্নের জবাব আমি দেব না। মুকুলের সঙ্গে আমার মতবিরোধ কখনও ছিল না। বিজেপি পার্টি করা যায় না। ওরা শোষণ করে, নিপীড়ন করে। মুকুল তৃণমূলে ফিরে এসে মানসিক ভাবে শান্তি পেল। দিদি এও বলেন, ‘মুকুল কিন্তু ভোটের সময় আমাদের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি।’

স্বাভাবিক ভাবেই এর পর প্রশ্ন ওঠে যে, মুকুল রায়কে দলে কী পদ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? জবাবে দিদি বলেন, সেটা আমরা এখনও স্থির করেনি। আগের যেমন ছিল সে রকমই। তাঁর কথায়, মুকুলের সঙ্গে অনেকেই তৃণমূল ছেড়েছিল। তাঁদের অনেকে আবার ফিরে আসতে চাইছেন। এ ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। এঁদের মধ্যে চরমপন্থী ও নরমপন্থী দুরকম রয়েছে। যাঁরা দল ছেড়ে গদ্দারি করেছে, দলের বিরুদ্ধে বাজে কথা বলে গেছে, তাঁদের নেওয়া হবে না। যাঁরা তা করেনি তাঁদের ব্যাপারে দল বিবেচনা করবে।

সাংবাদিক বৈঠকে এদিন মুকুলবাবু বলেন, আমি আমার পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছি। পুরনো লোকেদের দেখছি। এই আমার বেশ ভাল লাগছে।

অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানালেন বিজেপির দুই সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং অর্জুন সিং।

এদিন সৌমিত্র খাঁ বলেন, “স্বাধীনতার আগে মিরজাফরকে দেখেছিল বাংলার মানুষ। আবার সেই মিরজাফরকে আমরা দেখছি। মুকুল রায় বেইমান। উনি কোনও চাণক্য নন। যদি তাই হতেন তাহলে নিজের ছেলেকে অন্তত বীজপুর থেকে জেতাতে পারতেন।”

এই মিরজাফরদের বিরুদ্ধে বাংলায় বিজেপির লড়াই চলবে।” তিনি আরও বলেন, “এই মিরজাফরদের নিয়ে তৃণমূল বাংলাকে আরও অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চাইবে।”

এদিন তীব্র আক্রমণ শানালেন অর্জুন ও। ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেন, “মুকুল রায় গদ্দার। উনি চিরকাল গদ্দারি করেই রাজনীতি করেছেন। বিজেপির কেউ ওঁকে বিশ্বাস করত না। উনি মমতার সঙ্গেও গদ্দারি করেছেন।”

মুকুল রায়-এর এই পুরনো দলে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হতে আন্দোলিত জাতীয় রাজনীতিও। সূত্রের খবর দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছে, মুকুল প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ না খুলতে। বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, কোনও ব্যক্তি নয়, বাংলায় দু’কোটি ২০ লক্ষ মানুষের ভোটের ভিত্তিতেই লড়াই চালিয়ে যাবে বিজেপি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here