দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ কোভিড ১৯ মোকাবিলা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আঙুল উঠছিল। রাজ্যের বিধায়ক–সাংসদদের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছিল যথেষ্ঠ। কয়েক দিন আগেই দিল্লির নেতারা গিয়ে মতামত গ্রহণ শুরু করেন। কংগ্রেস ছেড়ে ব্রাহ্মণ নেতা জিতিন প্রসাদার বিজেপি–তে যোগদানের পর আরও চাপে পড়ে যান তিনি। এর পরেই বৃহস্পতিবার থেকে দিল্লিতে শুরু করেন দফায় দফায় বৈঠক।

এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আর তা থেকে একটা বিষয়ই স্পষ্ট, এখনও যোগীতেই ভরসা রাখছে বিজেপি–র শীর্ষ নেতৃত্ব। 


শুক্রবার দিল্লিতে প্রায় ১ ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে ভোট। সূত্রের খবর, সেই ভোটের পরিকল্পনার খসড়া তৈরি হল এই বৈঠকেই। এর পর যোগী নিজেই টুইটারে সাক্ষাতের কথা লেখেন, ‘‌আজ আমার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত এবং পরামর্শ নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। ব্যস্ততার মধ্যে আমাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য সময় বের করেছেন তিনি। সে কারণে ধন্যবাদ।’

এর পরে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাও টুইট করে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা লেখেন। ‘‌উত্তরপ্রদেশের সফল মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল।’‌ এভাবে নাড্ডা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন, যে যোগীতেই আস্থা রয়েছে তাঁদের। 

দু’‌দিন আগেই বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন জিতিন প্রসাদা। তার পরেই উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলে শুরু জল্পনা‌। তবে কি এবার যোগীকে বাদ দিয়ে জিতিনেই আস্থা রাখবে বিজেপি!‌ কারণ জিতিন ওই রাজ্যে বড় ব্রাহ্মণ মুখ। তিনি বিজেপি–তে আসায় ১৩ শতাংশ ব্রাহ্মণ ভোটের অনেকটাই আসতে পারে বিজেপি–র ঝুলিতে। যোগীও তড়িঘড়ি চলে যান দিল্লি। মঙ্গলবার বৈঠক করেন অমিত শাহর সঙ্গে। এবার মোদী। 

বছর পার হলেই উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলে একটা কথার বেশ প্রচলন আছে তা হল, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল। ফলে যে কোনও মূল্যে এই রাজ্য ধরে রাখতে মরিয়া গেরুয়া শিবির।

উত্তরপ্রদেশের দুর্গ জয়ের জন্য বেশ কিছু রণকৌশল ঠিক করেছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যে লখনৌ ও দিল্লিতে একের পর এক বৈঠক চলছে। জানা যাচ্ছে , ফের উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া জয়ের জন্য ৮টি ফ্যাক্টর ঠিক করেছে গেরুয়া শিবির। করোনা টিকাকরণ বিরাট ভাবে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছে। গোটা রাজ্য জুড়ে বড়সড় কর্মসূচি চালাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সমলোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তা ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করা হতে পারে দ্রুত৷

আগামী বছরই উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যটিকে ধরে রাখতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে বিরোধীরাও এই জমি দখলে বড়সড় প্রচার চালাতে পারে বলে মনে কোরছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপিতে গিয়েছেন জিতিন প্রসাদ। বড় ভাঙণ হয়েছে কংগ্রেসে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। ফলে আগামী দিনে এই ইস্যুগুলি ঘিরে এগোতে চাইছে বিজেপি।

বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, যেগুলোর কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি। তা দ্রুত শেষ করার পথে হাটতে পারে যোগী সরকার। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প-সহ একাধিক ইস্যুতে দ্রুত কাজ করতে পারে বিজেপি।

অন্যদিকে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু বিজেপি সাংসদকে কেন্দ্রের মন্ত্রী করা হতে পারে। এমনকি শরিক দলগুলির সাংসদরাও ঠাঁই পেতে পারেন মন্ত্রীসভায়। ভোটের আগে শরিক দলগুলির সঙ্গে নতুন করে আলোচনা চাইছে বিজেপি। বিশেষ ভোটের আগে তাদের কী দাবি রয়েছে, কোনও কিছুতে বিবাদ রয়েছে কিনা। তা মিটিয়ে ফেলতে চাইছে বিজেপি। অযোধ্যা, মধুরা, কাশীতে আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। পাশাপাশি নির্মাণ চলছে রাম মন্দিরের। এই ইস্যুগুলি নিয়েও প্রচারে নামতে পারে বিজেপি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here