দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ জন্মের খানিকক্ষণ পরেই মারা গিয়েছিল মেয়ে। চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি প্রি-ম্যাচিওর বেবিকে। সন্তানকে মাটি চাপা দিতে অন্ত্যেষ্টিস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ী হিতেশ কুমার সিরোহি। মাটি কাটার জন্য সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন।

যদিও মাটি খুঁড়তেই চমকে উঠলেন সকলে। দেখা গেল, মাটির নীচে একটা গামলা জাতীয় মাটিরই পাত্রের মধ্যে শুয়ে রয়েছে এক শিশু। ফুঁপিয়ে কাঁদছে সে। প্রায় তিনফুট গর্ত খুঁড়ে ওই সদ্যোজাতকে চাপা দিয়ে গিয়েছিল কেউ। সদ্য সন্তানহারা সিরোহি দম্পতি ওই শিশুকে কোলে তুলে নিতে দু’বার ভাবেননি। তুলোয় ভিজিয়ে দুধ খাওয়ানো হয় শিশুটিকে। তারপরেই নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। আপাতত বরেলির একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে ওই সদ্যোজাত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির বয়স মাত্র তিনদিন। তবে তার অবস্থা বিশেষ ভাল নয়।

ঠিক কী হয়েছিল সে দিন?

অন্ত্যেষ্টিস্থলে যাওয়ার পর মাটি কাটতে শুরু করেন জনাকয়েক শ্রমিক। তাঁরা জানিয়েছেন, গর্ত একটু গভীর হতেই ক্ষীণ কান্নার আওয়াজ আসে তাঁদের কানে। এরপর আর একটু খুঁড়তেই উদ্ধার হয় ওই শিশুটি। চমকে ওঠেন সকলেই। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য দুধের প্যাকেট নিয়ে আসে পুলিশই। এরপর তুলোয় ভিজিয়ে ওই সদ্যোজাতকে দুধ খাওয়ান সিরোহি দম্পতি। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের কর্মীরা ওই সদ্যোজাতর নাম দিয়েছেন ‘সীতা’।

তবে ভাল নেই সীতা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজন নবজাতকের ওজন থাকে আড়াই কেজি থেকে সাড়ে তিন কেজি। কিন্তু সীতার ওজন মাত্র ১ কেজি। প্রয়োজনের তুলনায় এই ওজন বড়ই কম, যা যথেষ্টই চিন্তার বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার সময়ই শিশুর দেহের তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় খুবই কম। শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিছু খাওয়ানোও যাচ্ছে না বাচ্চাটিকে।

কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে তাঁদের অনুমান, সম্ভবত কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়াতেই শিশুটিকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল তার পরিবার। পুলিশের সিনিয়র আধিকারিক অভিনন্দন কুমার জানিয়েছেন, যে পাত্রে বাচ্চাটি ছিল মাটি খোঁড়ার সময়ে সেটি ভেঙে যায়। এরপরেই শিশুটির কান্না শুনতে পান বাকিরা। শিশুটির মা-বাবার অগোচরে কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মানতে নারাজ পুলিশ। শিশুটি কন্যাসন্তান বলেই ইচ্ছে করে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল বলে দাবি তাদের। আপাতত সীতার আসল বাবা-মা’র খোঁজে নেমেছে বরেলির পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here