দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অডিও টেপ ফাঁস করল বিজেপি। যে অডিও টেপে শোনা যাচ্ছে, কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়কে মমতা বলছেন, “পার্থ মাথা ঠান্ডা করে ভোটটা করো, তার পর এর বিচার আমরা করব। ডেডবডিগুলো এখন রেখে দাও। কাল ডেডবডিগুলো নিয়ে ব়্যালি হবে। পরিবারগুলোকে বলবে কেউ ডেডবডি নেবে না”।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা-পার্থর ফোনে কথোপকথন ফাঁস করেছে বিজেপি। দেশের সময় সেই অডিও টেপ যাচাই করেনি। তবে এই অডিও টেপ ফাঁসের পর স্পষ্ট যে শীতলকুচির জল এখনই ঠাণ্ডা হওয়ার নয়।
এদিন সাংবদিক বৈঠকে বিজেপি মুখপাত্র অমিত মালব্য বলেন, “অডিও টেপে স্পষ্ট শোনা গিয়েছে, শীতলকুচির বুথে যারা হামলা করতে গিয়ে মারা গিয়েছিল, তাঁদের আমদের লোক বলছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, মৃতদেহগুলি নিয়ে মিছিল করার উদ্দেশ্য ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের”।
অমিতের কথায়, দশ বছর ধরে একজন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তাঁর মানসিকতা কতটা অপরাধপ্রবণ হলে তিনি এ কথা বলতে পারেন! প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকা কোনও ব্যক্তি পুলিশ ও প্রশাসনের অফিসারদের পাশে থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তাদের পাশে রয়েছেন, যারা ভোট লুঠ করতে গেছিল। তা ছাড়া মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করলে গোটা রাজ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে সাম্প্রদায়িক হানাহানির ঘটার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু মেরুকরণের স্বার্থে তা নিয়েও আপত্তি নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থাৎ নিজের সংকীর্ণ রাজনীতির জন্য রাজ্যের মানুষের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে কোনও কুণ্ঠা নেই তাঁর। এই মানসিকতা এক কথায় ভয়াবহ!

অডিও টেপে শোনা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থকে বলছেন, মৃতদের বাড়ির লোক যেন ভোটের পর এফআইআর করেন। কী এফআইআর করবেন তাঁরা সেটা তিনি বলে দেবেন। মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, “ভালো করে এফআইআর করতে হবে ল’ইয়ার-এর সাথে কনসাল্ট করে। যাতে কমান্ড জোন থেকে শুরু করে এসপি থেকে শুরু করে সব কটা ফাঁসে। এসপিকেও ফাঁসাতে হবে আইসিকেও ফাঁসাতে হবে”।

অমিত মালব্য বলেন, “এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে এমন প্রচার করতে যাতে মুসলমানদের মনে ভয় ঢুকে যায়। যাতে তারা তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেন। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত দশ বছর ধরে কীভাবে বাংলার সম্প্রীতিকে নষ্ট করেছেন তা বোধগম্য”।

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, শীতলকুচিতে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। কারণ, এক জনেরও প্রাণ যাওয়া উচিত নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথা কী ভয়াণক! পুলিশের এসপি, আইসিদের তিনি নিজের লোক বলেন। অথচ তাঁদের ফাঁসাতে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। কীসের জন্য? কারণ, তৃণমূলের ভোট লুঠকে তাঁরা বাধা দিয়েছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, তাতে অন্যায় কিছু নেই বলে জানাল তৃণমূল। বরং তৃণমূলের পাল্টা প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন ট্যাপ করল কে? তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাঁর ফোন ট্যাপ কার অনুমতিতে, কেন করা হয়েছে সে ব্যাপারে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্দেশে পাল্টা সওয়াল করেছে বাংলার শাসক দল।

শনিবার পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ হবে বাংলায়। তার আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজেপি মুখপাত্র অমিত মালব্য সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ফোনালাপ ফাঁস করে বোমা ফাটিয়েছেন। তাতে স্পষ্ট শোনা গিয়েছে, কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়কে মমতা বলছেন, “পার্থ মাথা ঠাণ্ডা করে ভোটটা করো, তার পর এর বিচার আমরা করব। ডেডবডিগুলো এখন রেখে দাও। কাল ডেডবডিগুলো নিয়ে ব়্যালি হবে। পরিবারগুলোকে বলবে কেউ ডেডবডি নেবে না”। মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, “ভালো করে এফআইআর করতে হবে ল’ইয়ার-এর সাথে কনসাল্ট করে। যাতে কমান্ড জোন থেকে শুরু করে এসপি থেকে শুরু করে সব কটা ফাঁসে। এসপিকেও ফাঁসাতে হবে আইসিকেও ফাঁসাতে হবে”।

এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে এদিন রাতে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন এবং রাজ্যসভার উপ দলনেতা সুখেন্দু শেখর রায়। ডেরেক বলেন, ধরে নিলাম অডিও টেপটি ঠিক। কিন্তু প্রশ্ন হল, “মুখ্যমন্ত্রীর ফোন ট্যাপ করল কে? তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তাতে সমস্যা কোথায়!” আর সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, “দলনেত্রী যা বলেছেন, তাতে কোনও অন্যায় নেই। শীতলকুচিতে গুলি চালনার ঘটনার পর তিনি তাঁর দলের নেতাকে ফোন করছিলেন। তখন উত্তেজনার বশে অনেক কথা বলতে পারেন। আমাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ হল, কার অনুমতিতে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের ফোন ট্যাপ হচ্ছে”। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ফোন ট্যাপের সংস্কৃতি নিয়েও অভিযোগ করেছে তৃণমূল।

ওই অডিও বিজেপি কোথা থেকে পেয়েছে তা এদিন জানায়নি। দেশের সময় অডিও টেপের সত্যতাও যাচাই করেনি। তবে সুখেন্দু শেখরবাবু বলেন, অডিওটি যখন আমরা তৃণমূল ভবনে চালাচ্ছি, তখন আমরা দায়িত্ব নিয়েই চালাচ্ছি। অর্থাৎ টেপের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে অমিত মালব্যর নাম না করে তাঁকে ফেক নিউজ ফ্যাক্টরির ম্যানেজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিশেষণে সমালোচনা করেছে।


টেপের সোর্স নিয়ে বিজেপি কোনও কথা না বললেও অমিত মালব্য এদিন বলেছেন, “অডিও টেপে স্পষ্ট শোনা গিয়েছে, শীতলকুচির বুথে যারা হামলা করতে গিয়ে মারা গিয়েছিল, তাঁদের আমদের লোক বলছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, মৃতদেহগুলি নিয়ে মিছিল করার উদ্দেশ্য ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের”।

অমিতের কথায়, দশ বছর ধরে একজন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। তাঁর মানসিকতা কতটা অপরাধপ্রবণ হলে তিনি এ কথা বলতে পারেন! প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকা কোনও ব্যক্তি পুলিশ ও প্রশাসনের অফিসারদের পাশে থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তাদের পাশে রয়েছেন, যারা ভোট লুঠ করতে গেছিল। তা ছাড়া মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করলে গোটা রাজ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে সাম্প্রদায়িক হানাহানির ঘটার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু মেরুকরণের স্বার্থে তা নিয়েও আপত্তি নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থাৎ নিজের সংকীর্ণ রাজনীতির জন্য রাজ্যের মানুষের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে কোনও কুণ্ঠা নেই তাঁর। এই মানসিকতা এক কথায় ভয়াবহ!

আবার এ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, “গোটা ছবি থেকে একটা ব্যাপার পরিষ্কার। তা হল, দুটি দলের কার্যশৈলী ও মানসিকতা একই রকমের। বাংলায় তৃণমূল সরকার বিরোধী এমনি তাদের দলের নেতা, মন্ত্রী, সাংবাদিকদের ফোন ট্যাপ করে। আর দিল্লিতে সেই কাজটাই করে বিজেপি সরকার। দুটোই সাম্প্রদায়িক দল। দুটোই সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক। এ বার পছন্দ মানুষের”।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here