দেশের সময় , বনগাঁ পুরসভা নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা ধাক্কা খেল। বুধবার কংগ্রেসের মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার ঘটনায় এমনই চিএ সামনে এসেছে। বনগাঁ শহর কংগ্রেস সভাপতি সুনীল রায় জানান। আলোচনা অনুযায়ী বামফ্রন্ট তাদের কথা রাখে নি। তবুও এদিন দুপুর পর্যন্ত তাদের জন্য অপেক্ষা করছেছিল দল৷ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার মুহুর্তে অবশেষে ১১টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। সুনীল বাবু আরও জানান তাদের দাবি ছিল ১২টি আসন সেখানে প্রথমে ৯ জন প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় ৷ তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বামফ্রন্ট-এর তরফে এ ব্যপারে কোন ইঙ্গিত না মেলায় অবশেষে এক্ষেত্রে বাম-কং সমঝোতা হল বলে জানান তিনি৷

কংগ্রেস প্রার্থীদের তালিকা দেখুন এক নজরে:

ওয়ার্ড নং ৩ – মলয় আঢ্য, ওয়ার্ড নং ৪- পিঙ্কি প্রামাণিক, ওয়ার্ড নং ৫ – সুনীল কুমার রায়, ওয়ার্ড নং ৬ – দেবব্রত চৌধুরী, ওয়ার্ড- নং ৭- পরমেশ্বর গাইন, ওয়ার্ড নং ৮ – দেবযানী চ্যাটার্জী, ওয়ার্ড নং ৯ – উর্মীলা রায়, ওয়ার্ড নং ১০ – কৃষ্ণ মন্ডল, ওয়ার্ড নং ১৪ – বিশ্বজিৎ ভঞ্জ, ওয়ার্ড নং ১৭- ৠতুপর্ণা আঢ্য, ওয়ার্ড নং ২১- সুজিত কর্মকার রায়৷

আমার দাদু একসময় কংগ্রেস করতেন। আমি তাঁর আদর্শে যোগদান করে প্রার্থী হলাম৷ মা পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বলে আমারও হতে হবে, তার কোনো মানে নেই, দাদুকে দেখেছি কংগ্রেস পার্টি করতেন জাতীয় দলের প্রতি টান ছোট থেকেই ছিল৷ বইতে পড়েছি দেশের .প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কথা, আর এখন দেশে নারী শক্তির আর এক নাম প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যাকে দেখে আমি এগিয়ে এসেছি ।’মনোনয়ন পত্রজমা দিয়ে এসে ইন্দিরা গান্ধীর মুর্তিতে মালা পরিয়ে ৩ নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী মলয় আঢ্য (কাকা) কে পাশে নিয়ে বললেন ১৭ নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী তথা ,বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শংকর আঢ্যের মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্য৷

এদিন জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে বনগাঁ পুরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেন বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্য এবং শঙ্কর বাবুর ভাই মলয় আঢ্য। জাতীয় কংগ্রেস সূত্রে খবর, তাঁরা বুধবার সকালেই জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করার জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করে আবেদন জানান। জাতীয় কংগ্রেসের কোর কমিটির জরুরী ভিত্তি আলোচনায় তাঁদের আবেদন গ্রহন করে তাঁদের দুজনকেই প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁরা। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ঋতুপর্ণা আঢ্য এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মলয় আঢ্য দাঁড়িয়েছেন। 

অন্যদিকে , গত শনিবার বামেদের পক্ষ থেকে বনগাঁয় সাংবাদিক বৈঠক করে ১৫ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেইসময় তারা কংগ্রেসকে ৭ টি আসন ছেড়ে তালিকা প্রকাশ করলেন বলে জানান। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সংঝোতায় এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে দাবি করে বামফ্রন্ট। যদিও পরদিন পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে বনগাঁ শহর কংগ্রেস ৯ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। তাঁদের দাবি, তাঁরা বামেদের কাছে ৯ টি আসন দাবি করেছিলেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে ৷

মঙ্গলবার বামপ্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। সেখানে দেখা যায়, বামেদের পক্ষে ১৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এব্যাপারে সিপিএমের বনগাঁ শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক সুমিত কর জানান, ‘আলোচনা অনুযায়ী কংগ্রেস তাদের কথা রাখে নি। তবুও সৌজন্য বসত কংগ্রেসের জন্য ৪ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড দুটি ছেড়ে আমরা মনোনয়ন দিলাম।’

সিপিএম -এর বনগাঁ শহর এলাকা কমিটির সদস্য পীযূষ সাহা বলেন, আসন সমঝোতা ভেস্তে গেল ও এবারের পুর নির্বাচন বন্ধুত্ব পূর্ণ হবে।

বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানী সরকার বলেন, আমাদের বাংলার ইতিহাসেই আছে একই পরিবারের সদস্য তৃণমূল,বিজেপি,সিপিএম, কংগ্রেস করতে পারে এবং বিভিন্ন দলের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারে৷ এব্যপারে কিছু বলার নেই তবে, মানুষ এর জবাব দেবে৷ তৃণমূল শেষ কথা সব কিছুর উপরে নজর রাখছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ, বনগাঁয় ২২ শূন্য করে তৃণমূল দেখিয়ে দেবে ৷

বনগাঁ মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন 8 নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা প্রাক্তন পুর প্রাধান শঙ্কর আঢ্য-র স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য ৷ তিনি শঙ্কর আঢ্য-র টিকিট না পাওয়ার ব্যপারে বলেন আমাকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট দিয়েছেন মানুষের জন্য কাজ করার জন্য আর শঙ্কর বাবুর জন্য আমাদের মাথার উপরে আছেন মুখ্যমন্ত্রী তিনিই ভাববেন৷

এদিন তৃণমূল প্রার্থী গোপাল শেঠ, (বনগাঁর পুরপ্রশাসক) শ্রমিক নেতা নারায়ণ ঘোষ ,।বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি দিলীপ দাস সহ মোট ২২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বুধবার সকালে বনগাঁ মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হাজির হন বনগাঁ পুরসভার ২২ জন তৃণমূল প্রার্থী বলে জানান ৩ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ ৷ তিনি উদ্দিপনার সঙ্গে বলেন ২২টি ওয়ার্ডেই জিতবে তৃণমূল বাকি সব নির্মূল৷

প্রসঙ্গত, শুক্রবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে বনগাঁ পুরসভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। তালিকায় প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর নাম না থাকায় একাধিক জায়গায় শুরু হয় বিক্ষোভ। যদিও বিক্ষোভে তৃণমূল কর্মীরাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে থাকেন। মঙ্গলবার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী বদলানোর দাবি জানিয়েছে শিমুলতলার একটি মাঠে মিটিং করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যও। সেখানেও শঙ্কর আঢ্যের মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্যকে প্রার্থী করার জন্য দাবী জানায় তৃণমূলের একাধিক কর্মী। কিন্তু প্রার্থী বদল হবেনা আগেই জানানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। আর বুধবার পুরভোটে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঋতুপর্ণা আঢ্য ও মলয় আঢ্য।

বনগাঁর প্রাক্তন পুর প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন মেয়ে ঋতুপর্ণা এখন প্রাপ্ত বয়স্ক সে ঘরে আমার কন্যা কতবে বাইরে সে কোন দল করবে সেটা তার নিজম্ব ব্যপার তাকে বাঁধা দিতে পারিনা , এছাড়া শুনেছি ১৭ নং ওয়ার্ডে পাড়ার মেয়েকে চাইছিল এলাকার মানুষ ৷ সে তার পথে চলে তার মতো করে এগিয়ে যাক শুভেচ্ছা রইল৷ শঙ্করের কথায় তাঁকে তৃণমূলের দলের প্রযোজনে ডাকলে তিনি পিছপা হবেন না৷

বনগাঁ ৭নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দেব দাস মন্ডল বলেন , তৃণমূল দলটাই গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জড়জড়িত , এবার বিজেপি ২২টি আসননে জয়ী হয়ে পুরসভার বোর্ড গঠন করবে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here