দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ নারদাকাণ্ডের তদন্তে নতুন মোড় নিলে দেবীপক্ষের প্রথম দিনেই। মহালয়ার দিনেই বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেছ সিবিআই। এবার ধৃত মির্জাকে নিয়ে মুকুল রায়ের কলকাতার ফ্ল্যাটে আসে সিবিআই এর টিম। সেই টিমে ছিলেন নারদার তদন্তকারী অফিসার রঞ্জিত কুমার ছাড়াওহ ১১ জন অফিসার । প্রায় ১ ঘণ্টা সিবিআই অফিসাররা মুকুলের ফ্ল্যাটে ছিলেন।

সিবিআই সূত্রের খবর, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের কলকাতা এলগিন রোডের ফ্ল্যাটে অভিযুক্ত ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয় এদিন। মির্জার কথা অনুযায়ী পুরো ঘটনার ভিডিওগ্রাফিও করা হয়েছে। নারদকাণ্ডের অভিযোগ অনুযায়ী তিনি কোন পথে মুকুল রায়ের বাড়িতে ঢুকেছিলেন, কোথায় বসে মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে এর সমস্তটাই ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। সেটা হয়েছে মুকুল রায়ের উপস্থিতিতিতেই।

অভিযোগ, এই ফ্ল্যাটে বসেই তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়কে টাকা দিয়েছিলেন আইপিএস এস এম এইচ মির্জা । যদিও এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফুটেজে কোথাও মুকুল রায়কে টাকা নিতে দেখা যায়নি। বারবার এই দাবি করেছেন মুকুল রায়। এদিনও একই কথা বলেছেন তিনি। সিবিআই দল চলে যাওয়ার পরে মুকুল রায় এদিনও ফের বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তবে ষড়যন্ত্র কী ভাবে করা হচ্ছে তা খোলসা করে বলেননি তিনি। এদিনও তিনি জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য তিনি সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করতে তৈরি।

মহালয়ার দিনেও জেরাপর্বের শেষে মুকুল রায় জানান, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতার নির্দেশ দেন। আমি বলি, তদন্তকারী সংস্থাকে সাহায্য করা সুনাগরিকের কাজ। যতবার ডাকবে সহযোগিতা করব। আজ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আবার প্রয়োজন হলে ডাকবে। আমি সহযোগিতা করবই৷”

শনিবারের পরে রবিবারও তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমি যুক্ত নই। তবে একটা বড় ষড়যন্ত্র আমার বিরুদ্ধে করছেন মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়। যারাই ভ্রষ্টাচার আরোপে গ্রেফতার হচ্ছে, তাঁদেরই বলা হচ্ছে মুকুল রায়ের নাম বলতে। তাঁর সঙ্গে নারদার কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন মুকুল রায়।

একদিকে নারদা কাণ্ডে বাড়ির দোরগোড়ায় সিবিআই হানা। অন্যদিকে নিজের হাতে গড়া সংগঠনে বাঘের থাবা। সময়টা বড্ডই খারাপ যাচ্ছে মুকুল রায়ের
কিছুই করে উঠতে পারছেন না এই মুহূর্তে। রাজ্যে বিজেপির সংগঠনে ভাঙন ধরেছে। লোকসভা নির্বাচনের পর যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তৃণমূল কর্মীদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার খবর উঠে আসছিল, সেখানে এবার তার ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে।

বিজেপিতে মন টিকছে না কর্মীদের। ফিরে আসতে চাইছেন তাঁরা পুরনো দলে। ঠিক এমনটাই ঘটল উত্তর ২৪ পরগণার কাঁচড়াপাড়া পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে। লোকসভা নির্বাচনের পর এই ওয়ার্ডের অনেক তৃণমূল কর্মী বিজেপিত চলে গিয়েছিলেন। মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়ের হাত ধরেই বিজেপিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন তাঁরা।

এবার সেখান থেকেই উঠে আসছে শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মীর তৃণমূলে পুনরায় যোগদানের খবর। লোকসভার ধাক্কা কাটিয়ে উঠছে রাজ্যের শাসক দল। সংগঠন ঢেলে সাজাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারিকে। তারপর থেকেই সংগঠনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি।

মানু্ষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন। যথাসম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। তারই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। মুকুলের হাতে গড়া সংগঠন এখন ভাঙনের পথে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here