দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আন্দামান সাগর লাগোয়া পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হওয়া নিম্নচাপ ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিচ্ছে বলে জানাল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে পাকিস্তান। নাম দেওয়া হয়েছে বুলবুল। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বুলবুলের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের অন্তত তিনটি জেলায় হতে পারে ভারী বৃষ্টি।

হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘলা হতে শুরু করবে। শনিবার বৃষ্টি শুরু হবে। শুক্রবার বিকেলের পর এই ঘূর্ণিঝড় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে বলেই আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের। শনিবার তা অতি ভয়ঙ্কর হতে পারে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, এখনও যা গতিপথ বোঝা যাচ্ছে তাতে ওড়িশা, বাংলা হয়ে বুলবুল যাবে বাংলাদেশের দিকে। তবে কোন এলাকায় প্রথম এই ঝড় আছড়ে পড়বে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এখনই। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটের সময়ে নিম্নচাপের অবস্থান ছিল কলকাতা থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দূরে।

ইতমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হয়েছে সতর্কতা। মৎস্যজীবীদের সমুদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কয়েক মাস আগেই ফণীর তাণ্ডব দেখেছিল ওড়িশা। লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে পুরী, ভুবনেশ্বর। প্রভাব পড়েছিল বাংলাতেও। তবে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বুলবুল অতটা শক্তিশালী নয়। তবে এগোতে এগোতে শক্তি বাড়তে পারে তার।

ঝড়ের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রেখে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ ব্লক প্রশাসন ইতিমধ্যে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে ফেলেছে। মাল্টি পারপাস সাইক্লোন সেন্টারগুলি প্রস্তুত রাখা, যাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে মানুষজনকে সরিয়ে আনা যায়। সহ উপকূলের চারটি থানার পুলিশকে নিয়েও দফায় দফায় মিটিং চলছে।

পদিমা-১,পদিমা-২, তালগাছাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এই মহুর্তে পর্যটকদের জন্য ফিরে যাওয়ার কোন সতর্ক বার্তা নেই। আবহাওয়া এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। কোনও গুজব যাতে না ছড়ায় তারজন্য মাইকে প্রচার চলছে দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণিতে।

তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সমুদ্রে নামতে বা সৈকতে ঘোরাফেরাইয় বিষেধাজ্ঞা জারই করেছে দিঘা-মন্দারমনি-তাজপুর পর্যটন কেন্দ্র। একই ভাবে স্তর্কতা জারি করা হয়েছে দুই চব্বিশ পরগনাতেও। বসিরহাট, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।

সমুদ্রেই শক্তি ক্ষয় করবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। বাংলা ও বাংলাদেশের কাছে উপকূলে এসে শক্তি ক্ষয় হবে ঘূর্ণিঝড়ের। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল আবহাওয়া দফতর।

হাওয়া অফিসের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত উপকূল অতিক্রম করার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না ঘূর্ণঝড়ের। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী বলেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর–

শনি ও রবিবার রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। অতি ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ভারী বৃষ্টি হবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং নদিয়ায়।

শনি ও রবিবার সমুদ্রে নামতে নিষেধ পর্যটকদের। দীঘা থেকে বকখালি বিনোদনমূলক স্পোর্টস নিষিদ্ধ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসতে নির্দেশ। আগামীকাল থেকে সমুদ্রে যেতে মানা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here