দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে খোঁজ মিলল দীপ সিধুর। প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছিল অভিনেতা, গায়ক তথা কৃষক আন্দোলনের মুখ দীপ সিধুর। লালকেল্লা কাণ্ডের পর থেকেই কার্যত বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর সন্ধান দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। এতদিনে দীপ সিধুর খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কৃষক আন্দোলনের শুরু থেকেই এই পাঞ্জাবি অভিনেতার মুখ বারে বারেই সামনে এসেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র‍্যালি ঘিরে বেনজির হিংসা ও বিশৃঙ্খলায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে তাঁকে বিক্ষোভের পুরোভাগেই দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

গত ছ’মাস ধরে দীপ সিধুর নামের চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কৃষি বিলের বিরোধিতায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বারে বারেই গলা চড়িয়েছেন এই পাঞ্জাবি গায়ক তথা অভিনেতা। বিজেপি হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীদের সঙ্গে দীপ সিধুর যোগসাজশের খবরও সামনে এসেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের ঘটনার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দীপ সিধুর একের পর ছবি পোস্ট হতে থাকে। সেখানে দেখা গিয়েছে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর প্রচার সঙ্গী হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন সিধু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও ছবি সামনে এসেছে দীপ সিধুর। এরপরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

প্রজাতন্ত্র দিবসের আন্দোলনকে হিংসাত্মক চেহারা দেওয়ার পিছনে যে দীপ সিন্ধুর ইন্ধন ছিল সে অভিযোগও উঠতে শুরু করেছে। কৃষক সংগঠনের অনেক নেতারই অভিযোগ, আন্দোলন যে পথে চালিত করার কথা ছিল তা হয়নি। বরং আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে হিংসার পথে আন্দোলনে মোড় ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে কিছু লোকের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে।
কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবি শুরু থেকেই সরব ছিলেন দীপ সিধু। গত বছর ডিসেম্বরে ফেসবুক লাইভ করে সিধু বলেছিলেন, কৃষক আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন কিছু বামপন্থী সংগঠন। যদিও পরে নিজের এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন সিধু। কৃষক নেতাদের একাংশ লালকেল্লার ঘটনার জন্য দীপ সিধুকে দায়ী করেছেন। এক কৃষক নেতা বলেন, “দীপ সিধু সরকারের লোক। এই ষড়যন্ত্রটা আমাদের বোঝা দরকার।” পরে তিনি বলেন, “দীপ সিধু সর্দার নয় গদ্দার।” দীপ নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর সদস্য বলেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসায় জড়িত ১২ জনের ফটোগ্রাফ প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ। হিংসার নানা ভিডিও ক্লিপ খতিয়ে দেখে পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই ১২ জন হিংসায় উস্কানি দিয়েছিল। ভিডিও ছবিতে তাদের লাঠি ও রড নিয়ে মারপিট করতে দেখা গিয়েছে। লালকেল্লা কাণ্ডে মোট ৪৪ টি মামলা করেছে দিল্লি পুলিশ। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে ১২৭ জনকে। কৃষক সংগঠনের সদস্য ধর্মেন্দ্র সিং হারমানকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লালকেল্লায় ‘নিশান সাহিব’ ওড়াতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সম্প্রতি লালকেল্লা হিংসার অন্যতম অভিযুক্ত সুখদেব সিংকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  ২৬ জানুয়ারির পর থেকেই কার্যত বেপাত্তা ছিল সুখদেব। তার মাথার দাম ৫০ হাজার টাকা ঘোষণা করেছিল পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here