দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে ২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণা হয়েছে। টানা লকডাউনে থাকার পরেও দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এটাই চিন্তায় রাখছে আইসিএমআরকে (Indian Council for Medical Research)। অনেকের মধ্যেই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, দেশে কি তবে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেল! এই আশঙ্কা থেকেই এবার ৭৫টি জেলায় সমীক্ষা শুরু করছে আইসিএমআর।

এই মুহূর্তে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুসারে ৯ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯,৬৬২। কোভিড সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ১৯৮১ জনের। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭,৮৪৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ ৮ মে সকাল ৮টা থেকে ৯ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩২০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের। তবে এইসবের মধ্যে সুস্থও হয়েছেন ১৩০৭ জন। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুসারে এখন ভারতে সুস্থতার হার প্রায় ৩০ শতাংশ।সুস্থতার হার ভাল হলেও সংক্রমণও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এই পরিস্থিতিতেই গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আইসিএমআর সুত্রের খবর, দেশের ৭৫টি জেলায় সমীক্ষা করে যাচাই করা হবে আশঙ্কার কারণ রয়েছে কিনা। কোন ৭৫টি জেলায় সমীক্ষা হবে তা জানা না গেলেও খুব শীঘ্রই সমীক্ষা শুরু হবে। আইসিএমআর-এর দাবি, সংক্রমণের হার এবং ধরন বুঝতে ঘন ঘন র‍্যাপিড টেস্ট করা হবে ওই সব জেলায়। যাঁদের শরীরে সংক্রমণের কোনও লক্ষণ নেই তাঁদেরও র‍্যাপিড টেস্ট করা হবে।

আইসিএমআর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই ৭৫টি জেলা কোনও রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনের ভিত্তিতে বাছা হবে না। সব রকম জোনই থাকবে। দেশের যে সব জেলার জনঘনত্ব বেশি এবং যাদের উপর দিয়ে আন্তঃরাজ্য পরিবহণ বেশি হয়, সেই জেলাগুলিকে বেছে নেওয়া হবে র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য।

আইসিএমআর উপসর্গ নেই এমন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের খুঁজে বের করতে চাইছে। সেজন্যেই র‍্যাপিড কিটের মাধ্যমে কোনও সুস্থ মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি আছে কিনা, সেটা পরীক্ষা করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারও শরীরে অ্যান্টিবডি থাকা মানে করোনার লক্ষণ না পাওয়া গেলেও তিনি হয়তো কোনও সময়ে সংক্রমিত হয়েছিলেন। তাঁর শরীরের ইমিউনিটি বেশি হওয়ায় হয়তো করোনারভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিতে গিয়েছেন। কিন্তু ওই ব্যাক্তির থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে।

এই বিষয়ে আইসিএমআর-এর এক কর্তা সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, “ঠিক কত নমুনা সংগ্রহ করা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে, যদি সঠিক পরিমাণে নমুনা সংগ্রহ করা হয় তবে এই সমীক্ষা সত্যিই যুক্তিযুক্ত।”

এই ধরনের পরীক্ষা করার কথা অনেক আগেই ভেবেছিল আইসিএমআর। কিন্তু চিনের টেস্টিং কিট ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় শুরু করা যায়নি। এবার সমীক্ষা শুরু হবে। এই সমীক্ষায় আইসিএমআর বুঝে নিতে চাইছে, কোনও আক্রান্তের সংস্পর্শে না আসা সত্বেও কেউ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কিনা। কোনও আক্রান্তের সংস্পর্শে না আসা সত্বেও বহু মানুষ যদি সংক্রমিত হয়ে থাকেন তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে। সেটাই বুঝিয়ে দেবে, গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ভারত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here