দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা ‘ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট’ ছড়িয়ে পড়েছে ১৮ রাজ্যে। ভিনদেশি তিন স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রককে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি, মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দোল-হোলি সব অন্যান্য অনুষ্ঠান পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রাজ্যগুলিকে স্থানীয় স্তরে অনুষ্ঠান পালনে নিষেধ করে নয়া নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।

প্রকাশ্যে হোলির অনুষ্ঠান পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লি সরকার। দুদিন আগে একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, সামনেই দোল, শব-এ-বরাত, নবরাত্রি, বিহু, ইস্টার, ইদ-উল-ফিতরের মতো উৎসব রয়েছে। পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা বিচার করে রাজ্যগুলিকে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান পালন বন্ধ করতে হবে। জনসমাগম ঠেকাতে স্থানীয় স্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধাক্কা দিয়েছে দেশে। সংক্রমণের হার যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় সে জন্য গতকালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা সবকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে নতুন করে করোনার বিধিনিষেধ জারি করতে বলেছেন। স্থানীয় স্তরে কনটেইনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। সংক্রমণে লাগাম পরাতে জেলা, ওয়ার্ড, ব্লকের ভিত্তিতে কোভিড গাইডলাইন জারি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, করোনার ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়েছে ১৮টি রাজ্যে। ‘ইন্ডিয়ান সার্স-কভ-২ জিনোমিক্স কনসরটিয়াম’ (INSACOG) জানাচ্ছে, ১০,৭৮৭ কোভিড আক্রান্তের নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনের গঠন বিন্যাস বের করে ৭৭১ রকম ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গেছে। করোনার তিন বিদেশি প্রজাতি যথা ব্রিটেন স্ট্রেন (বি.১.১.৭), দক্ষিণ আফ্রিকার মিউট্যান্ট স্ট্রেন (বি.১.৩৫১) ও ব্রাজিলিয় স্ট্রেনের (পি.১) মিউটেশনের ফলেই এই ডবল ভ্যারিয়ান্ট ছড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।


দেশের ১০টি ল্যাবরেটরিতে আক্রান্তের নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স করা হচ্ছে। দুরকম মিউটেশন হতেও দেখা গেছে–E484Q এবং  L452R। মহারাষ্ট্রেমূলত করোনার এমন মিউটেশনের ফলে সংক্রামক স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়েছে। কেরলে N440K মিউটেশন বেশি দেখা গেছে। রাজ্যের অন্তত ১৪টি জেলায় এমন মিউট্যান্ট স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে এখনও অবধি ৪০৪ জনের মধ্যে কোভিডের তিন ভিনদেশি স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে। কলকাতায় একজনের শরীরে পাওয়া গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের মেলামেশা, জনসমাগম যত বাড়ছে কোভিড স্ট্রেন তত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। যত বেশি মানুষের শরীরে ঢুকছে স্ট্রেনের জেনেটিক মিউটেশন ততটাই বেশি হচ্ছে। তাই কোভিডের সুপার-স্প্রেডার জিনের আধিক্য বাড়ছে দেশে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here