দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তৃতীয়বারের জন্য দিল্লি বিধানসভার ক্ষমতা দখলের জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ফোন করে অভিনন্দন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আপের জয়ের ইঙ্গিত পেতেই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বললেন, ‘‌মানুষ বিজেপিকে বাতিল করেছে। উন্নয়নই শেষ পর্যন্ত কাজ দেয়। মানুষ বিভাজনের রাজনীতি চায় না। আমরা খুব খুশি যে এতো ধর্মের রাজনীতি সত্ত্বেও সংকীর্ণতা জেতেনি। বিদ্বেষের রাজনীতি করেছে বিজেপি। যেখানেই ভোট হচ্ছে সেখানেই হারছে বিজেপি। আশা করছি সিএএ, এনআরসি, এনপিআর–ও প্রত্যাহার করা হবে।’

মমতা আরও বলেন, ‘‌আপের জয় এবং বিজেপির পরাজয়ে আমি খুশি। ঘৃণার রাজনীতির কোনও জায়গা নেই।‌ দিল্লিতে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।’‌ মমতা একথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি যে ভোটে জিততে বিজেপি প্রশাসনিক সবরকম পদক্ষেপ করেছিল। তা সত্ত্বেও তাদের প্রতি মানুষ সদয় হয়নি।

দিল্লির ভোট নিয়ে উৎকন্ঠা হয়তো কম ছিল না তাঁরও। কারণ, বিজেপি দিল্লিতে হারলে বাংলাতেও তাদের মনোবল ভাঙতে পারে। আপাতত সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও মোদী-অমিত শাহরা দমে যেতে পারেন অনেকটাই।

মঙ্গলবার দিল্লি ভোটে আম আদমি পার্টির জয়ের সম্ভাব্য ছবিটা পরিষ্কার হতেই তাই আর দেরি করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বললেন, দিল্লিতে ঘৃণার রাজনীতি হেরেছে, গণতন্ত্র জিতেছে। ভারতের বহুত্ববাদকে সুরক্ষিত রেখেছে জনতাই।

দিদির কথায়, “আস্ত একটা কেন্দ্রীয় সরকার তার সর্বস্ব শক্তি ঢেলে দিয়েছিল গায়ের জোরে দিল্লি দখল করবে বলে, কিন্তু পারেনি। দিল্লির মানুষ ঘৃণার রাজনীতিকে হারিয়ে দিয়েছে”।

মমতার আরও বলেন বলেন, “মানুষ এই ঘৃণা ও ভাগাভাগির রাজনীতি পছন্দ করে না। তারা উন্নয়ন চায়, রোটি-কাপড়া-মকান চায়। যেখানে ভোট হচ্ছে সেখানেই বিজেপির হার অব্যাহত।” এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ফোন করেও অভিনন্দন জানান মমতা।


মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিজেপি প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল মহারাষ্ট্রে। ওখানে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোট সরকার তৈরি হয়েছে। তারপর ঝাড়খণ্ড। আজকে দিল্লি। তাঁর কথায়, “জনমত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে ম্যানেজ করে জিতেছিল। কিন্তু মানুষ নিজে চোখে দেখছেন কী হচ্ছে।” দিদি এদিন বলেন, “ফেক খবর ছড়িয়ে, হোস পাইপ দিয়ে টাকা ছড়িয়ে, ঘৃণা ছড়িয়ে সবসময়ে ভোটে জেতা যায় না।”
গোটা দেশের নজর ছিল দিল্লির ভোটের দিকে।

নজর ছিল তৃণমূলেরও। কারণ পরের বছরই বাংলায় বিধানসভা ভোট। পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লিতে বিজেপির হার বাংলার তৃণমূলকর্মীদের মনেও অক্সিজেন জোগাবে। একই সঙ্গে পর্যবক্ষেকদের অনেকের মতে, আরও একটি কারণে দিল্লির দিকে নজর ছিল বাংলার শাসক দলের। কারণ, তৃণমূলের ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই প্যাক এবার কেজরিওয়ালের হয়ে ভোট করিয়েছে। ফলে পিকের উপরেও শাসকদলের কর্মীদের ভরসা বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।


তবে বাংলার বিজেপি নেতারা বলছেন, এতে বাংলার উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। বিজেপির এক মুখপাত্রের কথায়, “দিল্লিকা লাড্ডু দেখিয়ে বাংলায় তৃণমূলের বিশেষ লাভ হবে না। ১১ সাল থেকে রাজ্যের মানুষ দেখে নিয়েছে কাটমানি, দুর্নীতি, স্বজনপোষণ কাকে বলে। তার সঙ্গে রয়েছে প্রশাসনিক সন্ত্রাস। একুশে তৃণমূলকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here