দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গঠনিক বৈঠক নাকি দিল্লিতে মহা যোগদান মেলা? বাংলার রাজনীতির কুশীলবদের নজর আপাতত ১৬ জানুয়ারি দিল্লির বিজেপি সদর দফতরের দিকে। শুক্রবার দিল্লিতে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।

বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়েই আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বৈঠকে হাজির থাকতে পারেন। মুকুল রায় বৃহস্পতিবারই দিল্লি চলে গিয়েছেন। দিলীপ ঘোষ সকালের বিমানে দিল্লি গিয়েছেন। বৈঠকে হাজির থাকার কথা দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং শিবপ্রকাশেরও। কিন্তু দিল্লির এই বৈঠকের আগে শুভেন্দু অধিকারী-মুকুল রায় ম্যারাথন বৈঠক নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছেন। বঙ্গ বিজেপি সূত্রের খবর, একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর যোগদান হতে পারে শনিবার।

কারা কারা আছেন সেই তালিকায়? ইতিমধ্যেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। জানিয়েছেন, দলের অনেকে তাঁকে কাজ করতে দিচ্ছে না, তাঁর সংসদীয় এলাকায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আর তিনি দিল্লি যাচ্ছেন, সেখানে তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা হতে পারে। শুধুই কি দেখা, নাকি গেরুয়া শিবিরে যোগদান, তা অবশ্য খোলসা করেননি শতাব্দী। বরং জানিয়ে দিয়েছেন, ডেটলাইন ১৬ জানুয়ারি। সেদিনই যা বলার, বলবেন। যদিও ইতিমধ্যেই তাঁকে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

তবে, শুধু শতাব্দী নয়, বঙ্গ বিজেপির একটা সূত্র দাবি করছে, শনিবার দিল্লিতে দেখা যেতে পারে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সদ্য মন্ত্রিসভা ও দল ছাড়া লক্ষ্মীরতন শুক্লা, বালির তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া ও হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে। লক্ষ্মী নিজের পদ ও দল ছাড়লেও বাকিরা সকলেই এখনও তৃণমূলেই আছেন এবং দলের বিরুদ্ধে বারবার প্রকাশ্যে মন্তব্য করছেন। ফলে হাওড়ার এই নেতানেত্রীদের নিয়ে ক্রমশই বিড়ম্বনা ও দুশ্চিন্তা বাড়ছে শাসক দলের। ফলে তাঁদের গেরুয়া শিবিরে যাওয়া খুব অপ্রত্যাশিত নয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও প্রকাশ্যে বিজেপি নেতারা এখনও এই যোগদান প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। তাতে অবশ্য জল্পনা থেমে নেই।

বিজেপি সূত্রের খবর, এছড়াও বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আসন ধরে ধরে আলোচনা হচ্ছে। তবে একদিনে সব আসনের পর্যালোচনা সম্ভব নয়। তাই জোন ধরে ধরে আলোচনা হতে পারে বৈঠকে। শুক্রবারের বৈঠকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জোন ও কেন্দ্রের পরিস্থিতি আলোচনায় গুরুত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা। এছাড়াও আগামী একমাস রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধার বাড়ানো কীভাবে যায়, তারও রূপরেখা চূড়ান্ত হবে। বিজেপির ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি কোন কোন জেলায় বেশি সাফল্য পেয়েছে, কোথায় তা সেভাবে সফল হয়নি, তারও পর্যালোচনা হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈঠকের দিনক্ষণ আরও বাড়তে পারে ৷

পাশাপাশি যেভাবে অন্য রাজনৈতিক দল বিশেষ করে তৃণমূল থেকে যেভাবে বহু নেতা-কর্মী যোগ দিচ্ছেন, তাতে গেরুয়া শিবিরের আদি-নব্যের দ্বন্দ্বেও চিন্তিত নেতৃত্ব। ভোটের আগে যাতে তা কোনওভাবে আরও প্রকট না-হয়ে ওঠে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলা হবে দিলীপ ঘোষদের। ইতিমধ্যেই দিল্লি এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছে। যেহেতু ভোট ঘোষণার আর বেশিদিন বাকি নেই, তাই দলের রাজ্য শীর্ষনেতারা আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্কে না-জড়ান, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে তাঁরা বুঝিয়ে দিতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here