আত্মজিৎ চক্রবর্তী,গোবরডাঙ্গা: ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হতে পারে ভেবে প্রাণে বাঁচতে রেল সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েও শেষ রক্ষা হল না। সাঁতার না জানায় ওই যুবকের জলে ডুবে মৃত্যু হল। এই ঘটনার প্রায় ১৮ ঘন্টা পর স্থানীয় যুবকদের প্রচেষ্টায় রেল সেতুর নিচে নদী থেকে সোমবার সকালে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হল।

ওইযুবকের পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের ছেলেকে ইচ্ছাকরে নদীতে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থানার রেল সেতুর কাছে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর তা ময়না তদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগিয়েছে বিশ্বজিৎ সরকার (‌২৪) নামে গোবরডাঙা থানার অখিলপল্লী এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক প্রায়ই গোবরডাঙা শ্মশানের কাছে রেল সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে থাকতেন। রবিবার বিকেলেও তিনিকাজে যাবার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় এবং ওই রেলসেতুর উপরে গিয়ে দাঁড়ান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, তখন সেখানে আরও দুজন যুবতী ছিলেন। বিশ্বজিৎ মোবাইলে কথা বলছিলেন। সেই সময় ওই লাইনে ট্রেন ঢুকে যায়। এই পরিস্থিতিতে কি করবে বুঝতে না পেরে তিনি বাঁচার তাগিদে নদীতে ঝাঁপ দেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

যুবককে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখে নিচে নেমে ওই যুবতীরা চিৎকার করে স্থানীয়দের ডেকে তাঁকে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চান। খবর দেওয়া হয় গোবরডাঙা থানায়। পুলিশ এরপর দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে খবর দেয়। আনা হয় ডুবুরি। কিন্তু অন্ধকার নেমে যাওয়ায় রাতে আর বেশিক্ষণ খোঁজাখুজির কাজ করা যায় নি। সোমবার সকাল থেকে ফের নদীতে নেমে খোঁজ শুরু হয়। অবশেষে স্থানীয় যুবকেরাই রেলসেতুর নিচে থেকে কচুরিপানায় ঢাকা নদীর জল থেকে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সমর্থ হন।

মৃত বিশ্বজিৎ সরকারের বাবা প্রদীপ সরকার জানান, ‘‌বিশ্বজিৎ বড় ছেলে। তাঁর চাকরির জন্য ১ লক্ষ টাকা ধার করে এনেছিলাম। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে সুদ দিতে হচ্ছে। চার মাস ধরে এই সুদ টেনে যাচ্ছি। একেই সংসারের অর্থনৈতিক টানাটানি তারই মধ্যে এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছি না।‌ ছেলের মোবাইলে ফোন করেছি বহুবার ফোন সুইচড অফ বলছে। আর তাই সন্দেহ, মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছেলেকে ইচ্ছাকৃতভাবে নদীতে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here