দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের উপনির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে বিস্তর চাপানউতোর জারি রয়েছে। তার মাঝেই এদিন উপনির্বাচন নিয়ে বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন। দিল্লি থেকে এই বৈঠক হবে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

জানা গিয়েগেছে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন বুধবার দিল্লি থেকে দুটি বৈঠক করবে। প্রথম বৈঠকে যোগ দেবে রাজ্যের সিইও তথা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিস। এরপর দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব। বৈঠক হবে বুধবার দুপুর তিনটেয়। মূলত উপনির্বাচন নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, উপনির্বাচন হোক তা কিছুদিন আগেই নবান্ন থেকে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন প্রচারের সময় না দিলেও চলবে, কিন্তু উপনির্বাচন হওয়া দরকার। কারণ বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক নির্বাচন করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার।
উপনির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই জল গড়িয়েছে অনেক দূর।

প্রসঙ্গত, রাজ্যে যে উপনির্বাচনগুলি বকেয়া রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ এবং কৌতূহল ভবানীপুর কেন্দ্রটি নিয়ে। ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। উত্তরবঙ্গের দিনহাটা ও শান্তিপুর থেকে বিধায়কপদ ত্যাগ করেছেন যথাক্রমে বিজেপি-র সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার। উপনির্বাচন হবে সেখানেও। ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হয়েছেন খড়দহের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর প্রয়াত হয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্করও। ওই আসনগুলিতেও উপনির্বাচন হবে। পাশাপাশিই, করোনা সংক্রমণে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করা যায়নি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে। সবমিলিয়ে সাতটি আসনে একসঙ্গে ভোট হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা অবশ্য সরাসরিই বলেছেন, ভবানীপুর-সহ রাজ্যে অন্য উপনির্বাচন করাতে কোনও সমস্যা নেই। সে কথা কমিশনকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তার পরেও তৃমমূলের একাধিক প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে অবিলম্বে উপনির্বাচন করানোর দাবি নিয়ে। অন্যদিকে, বিরোধী বিজেপি বলছে, রাজ্যে যা কোভিড পরিস্থিতি, তাতে এখনও উপনির্বাচন করানোর মতো অবস্থা নেই।

কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোট সম্ভব, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত চেয়ে পাঠিয়েছিল দিল্লির নির্বাচন কমিশন। সেই মতামত জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ অগস্ট। সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই বিজেপি তৃণমূলশ অন্যান্য দল তাদের মতামত জানিয়েছে। আজকের বৈঠকে সেসব নিয়েও কথা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

শাসকদল যখন নির্বাচন চাইছে তখন বিরোধী বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্পষ্টই জানিয়েছেন তাঁরা এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন চান না। তবে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা বারবার উপনির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে যাতায়াত করেছেন। এই উপনির্বাচনের উপর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। কারণ তিনি বিধানসভায় না জিতেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী ভোটের ফল ঘোষণার ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিততে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীত্ব হারাতে হয়। সেদিক থেকে উপনির্বাচনের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here