দেশের সময়,পূর্ব মেদিনীপুর: কথায় বলে, শব্দ ব্রহ্ম। রাজনীতি ও কূটনীতিতে শব্দ ও তার ব্যবহারের গুরুত্ব অনেক বেশি। এদিন এক সামাজিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন শুভেন্দু। নিউ দিঘায় মহিলা কল্যাণ প্রতিষ্ঠান ভগিনী নিবেদিতার ১৫৩ তম জন্মতিথি উদযাপনের আয়োজন করেছিল। সেখানেই নিবেদিতার নতুন মূর্তি উন্মোচন করেন সেচ ও পরিবহণ মন্ত্রী। তার পর ওই মহিলা সংগঠনের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, “কেন আমি আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি? তার কারণ, কেউ একক শক্তিতে কোনও কাজ করতে পারে না। এটা স্বামী বিবেকানন্দ বলে গিয়েছেন। তিনি বলে গিয়েছেন, আমি আমি হল সর্বনাশের মূল। আমরা আমরা যারা করে, তারাই টিকে থাকে”।

বিজ্ঞাপন:

যদিও এই মুহুর্তে শুভেন্দুবাবুর এই মন্তব্য একেবারেই সাদামাঠা। এর মধ্যে কোনও রহস্য নেই। কিন্তু অনেকেরই রাজনৈতিক মন অনিসন্ধিৎসু। তাঁরা এর অর্থ খুঁজতে শুরু করেছেন। শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা তো বটেই, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বড় অংশ এবং বিরোধী শিবিরেরও অনেকে মনে করেন, শাসক দলে সবটাই একজনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ২৯৪ টা আসনে তিনিই প্রার্থী। তিনিই মুখ। সব তিনিই করছেন।

বিজ্ঞাপন:

আজ বুধবার বিহারে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে কোনও অঘটন না ঘটলে এর পরেই বাংলায় ভোট। ৬ মাসও বাকি নেই। তার আগে রাজ্যের সেচ ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী যে মন্তব্য করলেন তা নিয়ে ফের জল্পনা শুরু হল বাংলার রাজনীতিতে।

অথচ বাস্তব হল, যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূলের উত্থান ঘটে তার নায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, রাজ্যে তৃণমূলের সরকার গঠিত হওয়ার পর সাংগঠনিক কাজেও দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। অথচ সেই তুলনায় গুরুত্ব ও মর্যাদা পাননি তিনি। বরং সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তুলে দিয়ে আসলে শুভেন্দুকে চাপে রাখার চেষ্টা হয়েছে বলে অনেকে ব্যাখ্যা করেছেন।

এ হেন পরিস্থিতিতে শুভেন্দুবাবুর সম্ভাব্য রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েও রাজ্য রাজনীতিতে এখন কৌতূহল বিস্তর। কারণ, অনেকের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর বাংলার রাজনীতিতে যদি কারও গ্রহণযোগ্যতা থাকে তা হলে তিনি হলেন শুভেন্দু। দুই মেদিনীপুর তথা জঙ্গলমহল তো বটেই রাজ্যের সব জেলাতেই তাঁর কম বেশি অনুগামী রয়েছে। ফলে এদিন শুভেন্দু যখন বলেছেন, আমি আমি হল সর্বণাশের মূল, তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কাউকে উদ্দেশ করে কি এ কথা গুলো বলছেন তিনি! সেচমন্ত্রী অবশ্য এর আর কোনও ব্যাখ্যা দেননি।


হাইকোর্টের নির্দেশে এ বারের পুজোয় অনেক বিধি নিষেধ ছিল। তবে উৎসবের একটা আমেজ এখনও রয়ে গিয়েছে। আপাতত কদিনের জন্য বিশ্রাম নিয়েছিল রাজনীতি। কিন্তু বুধবার শুভেন্দুর মন্তব্যের পর রাজনীতির অলিন্দে নতুন করে সরগরম। তা ছাড়া ওদিকে বিহারেও ভোট শুরু হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করছেন, বাংলায় রাজনীতির এই উত্তাপ ক্রমশ বাড়বে। কালীপুজো কেটে গেলেই ভোটের দামামা বেজে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here