দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রানাঘাটের সভায় কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়:

সোমবার নদিয়ায় জনসভা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ দিন রানাঘাট মহকুমার হাবিবপুরের ছাতিমতলায় সভা। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। ওই সভা থেকে বাম আমলের কথা তুলে ধরে সিপিএমকে আক্রমণ করেন মমতা৷

তৃণমূলের কাছে দু’টি কারণে গুরুত্বপূর্ণ নদিয়া জেলা। প্রথমত, দলের ভিতরে ‘আদি-নব্য’ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নির্বাচনে পূর্ণশক্তি নিয়ে ঝাঁপানো তৃণমূলের প্রাথমিক লক্ষ্য। দ্বিতীয়ত, সেই সঙ্গে জেলা জুড়ে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের মন আরও বেশি করে পাওয়ার চেষ্টাও রয়েছে।

সেই মতুয়া-গড় রানাঘাটেই সোমবার সভা করলেন মমতা। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে রানাঘাট কেন্দ্রের মধ্যে থাকা ৬টি বিধানসভাতেই এগিয়ে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের ‘দুর্গে’ দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন সে দিকে তাকিয়ে দলীয় কর্মী, সমর্থকরা। পাশাপাশি মমতার বার্তার দিকে তাকিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক কারবারিরাও।

• আগে কাজ হত না, রাজনীতি হত

• আজকের প্রজন্ম জানে না লোডশেডিং কী, বামেদের নিশানা করলেন মমতা

• আমরা বলতাম, সিপিএমের কোলে, লোডশেডিং দোলে

• এখন আর লোডশেডিং নেই

• আগে চিকিৎসা পরিষেবা তেমন ছিল না

• হাসপাতালে অপারেশন হত না, অভিযোগ মমতার

• ১ লক্ষ ছেলেমেয়েদের বিনাপয়সায় সাইকেল দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ লক্ষকে এই জানুয়ারি মাসে দেওয়া হবে। দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

• আমি ট্যাব কিনে দিতাম। কিন্তু ১২ লক্ষ ট্যাব বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। বললেন মমতা।

• ইসকনকে ৭০০ একর জমি দিয়েছি। বললেন মমতা।

• ৫০-৬০ বছর ধরে থাকলে এমনিই নাগরিক হয়ে যাবেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মতুয়াদের বার্তা মমতার।

• কেউ জানেন হরিয়ানায় কী চলছে? কৃষকদের উপর জুলুম চলছে। মোদী সরকারকে নিশানা মমতার।

• কিসের আয়ুষ্মান? ওরা ৬০ টাকা দেবে ৪০ টাকা আপনাকে দিতে হবে। আর স্বাস্থ্যসাথীতে ১০০ টাকায় সরকার দেবে। স্বাস্থ্যসাথী আমার সাথী, আমি নিজেও সদস্য হয়েছি। ওই কার্ডটার দাম ৫ লক্ষ টাকা। কেন্দ্রকে তোপ তৃণমূলনেত্রীর।

• অনেক বড় বড় হাসপাতাল আছে কখনও কখনও বলে দেয় আমরা স্বাস্থ্যসাথী করব না। আমরা তাঁদের সঙ্গে মিটিং করে বলে দিতে চাই করতে হবে। বললেন মমতা।

• আমরা জেলার ছোট ছোট নার্সিংহোমকে বলছি স্বাস্থ্যসাথী নিতে। যদি কেউ চিকিৎসা না দেয় সরকারের হাতে লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা আছে। দাবি মমতার।

• স্বাস্থ্যসাথীর নামে কেউ হয়রানি করলে থানায় গিয়ে ডায়েরি করবেন, এফআইআর করবেন। বললেন মমতা।

• দেশভাগের পর থেকে উদ্বাস্তুরা এসেছেন, এতদিন তাঁদের কথা কেউ চিন্তায় করেনি। বললেন মমতা।

• উদ্বাস্তুরা যে যেখানে যেমনভাবে আছেন, সে সেখানে তেমন ভাবেই পাট্টা পাবেন। ৯৬টি কলোনি পাট্টা পেয়ে গিয়েছে। ২১৩টি রিফিউজি কলোনি ১.৫ লক্ষ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বললেন মমতা। উদ্বাস্তুরা যে যেখানে যেমনভাবে আছেন, সে সেখানে তেমন ভাবেই পাট্টা পাবেন। ৯৬টি কলোনি পাট্টা পেয়ে গিয়েছে। ২১৩টি রিফিউজি কলোনি ১.৫ লক্ষ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বার্তা মমতার।

• বিনা পয়সায় চাল, বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য, বিনা পয়সায় শিক্ষা। পৃথিবীতে এরকম একটা রাজ্য দেখান তো। দেখালে আমি নাকে খত দিয়ে বেরিয়ে চলে যাব। রাজনীতি করব না। বললেন মমতা।

• আমি চাই বাংলায় একটাও উদ্বাস্তু পরিবার থাকবে না, পাট্টা পাবে না। ঘোষণা মমতার

• আমরা সবাই নাগরিক। বিজেপি সরকার একটা বিল করেছে। বলছে, আমরা মায়ের জন্ম কবে বলতে হবে। আমার ঠাকুরদাদার জন্ম কবে বলতে হবে। আপনি যদি তা না বলতে পারেন,  তা হলে আপনি এ দেশের নাগরিক নন। আপনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেবে। যারা এসব বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে, গণতন্ত্রের মাধ্যমে তাঁদের আমরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেব। সিএএ নিয়ে তোপ মমতার।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইসকনের জন্য ৭০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। এটা একটা বড় ট্যুরিস্ট স্পট হতে পারে।
কল্যাণীতে ট্রিপল আইটি করেছি। কল্যাণীতে এইমস তৈরির জন্য সম্পূর্ণ জমি বিনা পয়সায় দিয়েছি।

নদিয়া জেলায় মসলিন তীর্থ থেকে শুরু করে শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, তেহট্ট, কালিয়াগঞ্জ, নবদ্বীপ, প্রত্যেকটা অঞ্চলে অনেক কাজ করেছি। আগে রাজনীতি ছাড়া কিছুই হত না।
এক সময়ে নদিয়া জেলায় লোডশেডিং হত খুব। আমরা বলতাম, সিপিএমের কোলে লোডশেডিং দোলে। আজ যাঁরা জন্মাচ্ছে তাঁরা জানেই না লোডশেডিং কাকে বলে।


সত্যজিৎ বিশ্বাস মারা গেল, তাঁর স্ত্রীকে আমরা প্রার্থী করলাম। জেতাতে পারিনি। জিতলেন এক মহাপুরুষ।

তৃণমূলে গেলে সব কালো, আর বিজেপিতে গেলে ভাল। তৃণমূলে গেলে ঘষটা সাবান, বিজেপিতে গেলে সানলাইট পাউডার, ওয়াশিং মেশিন। মিথ্যা কথা বলার কোনও জুড়িদার নেই।


মিথ্যা যেমন বলে পুরো বিশ্বাস করে যাবেন। হরে কৃষ্ণ হরে রাম যেমন করেন। ভোট আসলেই বলবে, সবার চাকরি করে দেব, বলবে সব মতুয়াদের নাগরিক করে দেব… ভোট শেষ হলেই ডুগডুগি বাজিয়ে পালিয়ে যাবে।
পরিষ্কার বলছি, এনআরসি করতে দেব না, এনপিআর করতে দেব না, নিশ্চিন্তে ঘুমোন মায়ের কোলে।


১২ লক্ষ ট্যাব বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না, তাই আমরা ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে টাকাটা ট্রান্সফার করে দেব।
জানুয়ারি মাসে ২০ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হবে।
২ কোটি মানুষ দুয়ারে সরকারে গেছে। নদিয়া থেকে ৯ লক্ষ মানুষ দুয়ারে সরকার শিবিরে এসেছেন। ৯০ শতাংশ মানুষ পরিষেবা পেয়ে গেছেন।

কেউ জানেন হরিয়ানায় কৃষকদের উপর কী জুলুম চলছে, পাঞ্জাবের কৃষকদের উপর কী জুলুম চলছে।
অনেক বড় বড় হাসপাতাল আছে, যারা বলছে এখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড চলবে না, তাদের বলছি চালাতে হবে।


জেলার ছোট ছোট নার্সিং হোমগুলো আছে, তাদের বলছি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা দিতে। মনে রাখবেন লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা সরকারের আছে।
আপনাদের বলছি, কেউ যদি (কোনও নার্সিংহোম) আপনাদের হেনস্থা করে, তা হলে একটা এফআইআর করবেনষ বাকিটা সরকার দেখে নেবে।


উদ্বাস্তুদের পাট্টা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যে যেখানে কলোনিতে রয়েছেন, সে সেখানে পাট্টা পাবে।
দেড় লক্ষ পরিবারকে ফ্রি হোল্ড ডিড তথা পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নদিয়াতেও ৫ হাজার ফ্রি হোল্ড টাইটেল ডিড দেওয়া হচ্ছে।

আমিও অনেক সময়ে গরিব মানুষের বাড়িতে যাই। দোকানে যাই। যে অবস্থায় থাকি সেই অবস্থায় যাই। আমি নাটক করি না। ধুলো অবস্থায় যাই, দরকার হলে মুছে নিই। এরা সেজেগুজে যায়, ফাইভ স্টারের খাবার এনে খায়, হিমালয় ওয়াটারের জল খায়। আমি তো প্রাণধারার জল খাই। এটার দাম ৬ টাকা। এটা আমরা মেলায় দিই, উৎসবে দিই, গঙ্গাসাগর মেলায় দিই। আরেকটা হিমালয়ান ওয়াটারের বোতলের দাম কত। জিন্দেগি এত সহজ না রে ভাই। কামিয়াবির জন্য রাস্তায় নামতে হয়।
মিথ্যা কথার অমাবস্যা। আগের বার বলল, নরেন্দ্র মোদীকে ভোট দাও ১৫ লাখ টাকা করে অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেব। পেয়েছেন কেউ? এর পর উনিশের ভোটের বলল, ২ কোটি লোকের চাকরি দেব। ২ কোটি লোকের চাকরি দূরের কথা ৪০ শতাংশ লোক বেকার হয়ে গেছে।
পুরো ভারতবর্ষ ভেঙে পড়েছে, একবার করল নোটবন্দি, তার পর কোভিডে হলাম গৃহবন্দি, এর পর করবে জেল বন্দি। এর পর হেরে গিয়েও বলবে, আমরা জিতেছি। ট্রাম্পের মতো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here