নবান্নের টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০, নবান্নের অন্য দু’টি নম্বর ২২১৪-৩৫২৬ ও ২২১৪-১৯৯৫>> আমপান বাঁক নিচ্ছে। কিন্তু কতটা, এখনও নিশ্চিত নয়।কলকাতা পুলিশ: (০৩৩) ২২১৪-৩০২৪, ২২১৪-১৩১০, ২২১৪-৩২৩০, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর- ৯৪৩২৬২৪৩৬৫,আমপানের কেন্দ্রের অভিমুখ এখনও বকখালি-সাগরদ্বীপের দিকেই

দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ ক্রমশ এগিয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আমপান। এই মুহূর্তে গতি বাড়িয়ে বাংলার আরও কাছে চলে এল ‘অতি মারাত্মক’ ঘূর্ণিঝড় আমপান, (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন)। বেলা ১২টায় আমপানের অবস্থান ছিল দিঘা থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে। সে সময় সাগর দ্বীপ থেকে ১২৫ কিমি এবং পারাদ্বীপ থেকে ১৪০ কিমি দূরে ছিল এই ঘূর্ণিঝড়। স্থলভাগের দিকে যত এগিয়ে আসছে আমপান ততই তার গতিবেগ বাড়ছে। বুধবার সকাল থেকে ২২ কিমি বেগে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অভিমুখে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে এসেছিল আমপান। কিন্তু এখন প্রতি ঘণ্টায় ২৯ কিমি বেগে এগিয়ে আসছে এই ঘূর্ণিঝড়। দিঘা থেকে মাত্র ১৫০কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিল বৃষ্টি। যত সময় এগোচ্ছে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। রাতভর বৃষ্টির পরে বুধবার সকালেও তা চলছে। বৃষ্টি বাড়তে থাকায় উপকূল এলাকায় জারি করা হয়েছে সতর্কতা।” উওর ২৪পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্বমেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা ‘আমপানের ‘গতিবেগের সাক্ষী হবে৷”

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৌসম ভবনের দেওয়া সম্ভাব্য গতিপথ অনুযায়ী জেলার অন্দরে যে রাস্তা ধরতে পারে ‘আমপান’- ক্যানিং, পাথরপ্রতিমা, ভাঙড়, মিনাখাঁ, হাড়োয়া,ধান্য কুড়িয়া, গোবরডাঙা, বনগাঁ, হ্যালেঞ্চা হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বাংলাদেশের দিকে এগোতে পারে। এই পথের দু’পাশে অন্তত ৭৫ কিলোমিটার করে অঞ্চল সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।তবে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত অদল বদল হতে পারে ‘আমপানের’গতিপথ৷জেলা পুলিশ প্রশাসন সতর্কতা অবলম্বন করেছে।সচেতন করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ইন্ডিয়ান মিটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তরফে সকাল ৯টার বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ৬ ঘণ্টা ধরে ২২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে এগিয়ে আসছে উমফান। বর্তমানে তার অবস্থান ১৯ ডিগ্রি ৮০ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৭ ডিগ্রি ৭০ মিনিট দ্রাঘিমার কাছে। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১২০ কিলোমিটার, পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ২০০ কিলোমিটার ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আমপান।

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে আমপানের অক্ষের গতিবেগ ১৭০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বা কখনও কখনও ২০০ কিলোমিটারও হচ্ছে। উপকূল এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ বাড়ছে। বর্তমানে পারাদ্বীপে ১০৬ কিলোমিটার, ভুবনেশ্বরে ৫৬ কিলোমিটার, পুরীতে ৩৯ কিলোমিটার, গোপালপুরে ৩০ কিলোমিটার, দিঘাতে ২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে হাওয়া বইছে। সময় যত এগোবে হাওয়ার গতিবেগ তত বাড়বে।

বুধবার বিকেলের পরে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা আমপানের। ল্যান্ডফলের সময় উমফানের গতিবেগ ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার এমনকি ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর।

মঙ্গলবার বিকেলেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, সারা রাত ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মাঝ রাতের পর থেকে ঝড়ের গতিবেগ ক্রমে বেড়ে প্রথমে ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার হবে। তার পর বুধবার সকাল থেকে আরও তীব্র গতিতে ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়ে যাবে দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া ও কলকাতায়।

বুধবার দুপুরের পর যখন তা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাগরের কাছে আছড়ে পড়বে তখন হাওয়ার গতি বেড়ে দাঁড়াবে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। তার পর তা আরও বেড়ে ১৮৫ কিলোমিটার বেগে সজোরে ধাক্কা মারতে পারে। মূলত দুই চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল অঞ্চল সহ গোটা জেলাতেই ঝড়ের তীব্রতা থাকতে পারে এমনই। তা রাত পর্যন্ত চলবে।

সেই সঙ্গে অতি তীব্র ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে। সেখানে ঝড়ের গতি থাকবে প্রথমে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। তার পর আরও বেড়ে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ঝাপটা মারতে পারে।

ইতিমধ্যেই উপকূল এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাইক্লোন শেল্টারে। তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here