নবান্নের টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০, নবান্নের অন্য দু’টি নম্বর ২২১৪-৩৫২৬ ও ২২১৪-১৯৯৫

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শক্তি বাড়িয়ে বাংলার আরও কাছে চলে এল ‘অতি মারাত্মক’ ঘূর্ণিঝড় আমপান  (প্রকৃত উচ্চারণ উম্পুন)। কলকাতা থেকে আমপানের অবস্থান এখন ৩৩৩ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে। দিঘার দক্ষিণ থেকে এর দূরত্ব ২২৫ কিলোমিটার। এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে আমপান।

ইন্ডিয়ান মিটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তরফে সকাল সাড়ে ৬টার বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ৬ ঘণ্টা ধরে ১৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে উত্তর-উত্তর পূর্বদিকে এগিয়ে আসছে আমপান। বর্তমানে তার অবস্থান ১৯ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৭ ডিগ্রি ৫২ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমার কাছে। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১২৫ কিলোমিটার, পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ২৪০ কিলোমিটার ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আমপান।

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে উমফানের অক্ষের গতিবেগ ১৭০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বা কখনও কখনও ২০০ কিলোমিটারও হচ্ছে। উপকূল এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ বাড়ছে। বর্তমানে পারাদ্বীপে ১০৬ কিলোমিটার, ভুবনেশ্বরে ৫৬ কিলোমিটার, পুরীতে ৩৯ কিলোমিটার, গোপালপুরে ৩০ কিলোমিটার, দিঘাতে ২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে হাওয়া বইছে। সময় যত এগোবে হাওয়ার গতিবেগ তত বাড়বে।

বুধবার বিকেলের পরে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা উমফানের। ল্যান্ডফলের সময় উমফানের গতিবেগ ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার এমনকি ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর।

মঙ্গলবার বিকেলেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, সারা রাত ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মাঝ রাতের পর থেকে ঝড়ের গতিবেগ ক্রমে বেড়ে প্রথমে ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার হবে। তার পর বুধবার সকাল থেকে আরও তীব্র গতিতে ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়ে যাবে দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া ও কলকাতায়।

বুধবার দুপুরের পর যখন তা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাগরের কাছে আছড়ে পড়বে তখন হাওয়ার গতি বেড়ে দাঁড়াবে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। তার পর তা আরও বেড়ে ১৮৫ কিলোমিটার বেগে সজোরে ধাক্কা মারতে পারে। মূলত দুই চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল অঞ্চল সহ গোটা জেলাতেই ঝড়ের তীব্রতা থাকতে পারে এমনই। তা রাত পর্যন্ত চলবে।

সেই সঙ্গে অতি তীব্র ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে। সেখানে ঝড়ের গতি থাকবে প্রথমে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। তার পর আরও বেড়ে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ঝাপটা মারতে পারে।

ইতিমধ্যেই উপকূল এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাইক্লোন শেল্টারে। তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে।

ইতিমধ্যেই আমপানের প্রভাব পড়েছে উড়িশার পারাদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পারাদ্বীপে প্রতি ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে। ঝোড়ো হাওয়া বইছে ভুবনেশ্বর, চাঁদবলী, বালাসোর, পুরী এবং গোপালপুরেও।  বালাসোর এবং ভুবনেশ্বরে ঝড়ের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৪১ কিলোমিটার। অন্য দিকে, চাঁদবলীতে তা প্রতি ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। পুরী এবং গোপালপুরে ঝড়ের গতিবেগ যথাক্রমে প্রতি ঘণ্টায় ৩৯ এবং ৩০ কিলোমিটার।

নামখানা, বকখালি, কাকদ্বীপ  সুন্দরবন এলাকায় হাওয়ার গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসও।

• বালাসরের চাঁদিপুরেও শুরু হয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। 

পারাদ্বীপের অনেকটা কাছেই অবস্থান করছে আমপান। সকাল ৯টা নাগাদ তা আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নেবে এবং দিঘার আরও কাছাকাছি চলে আসবে। মঙ্গলবার রাত থেকেই দিঘাতেও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে প্রবল গতিতে হাওয়াও বইছে। তীব্র গতিতে হাওয়া বইছে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনাতেও। সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। বেলা যত গড়াবে, অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের দাপটও বাড়তে থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here